ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের নির্বিচার হামলায় মৃতের সংখ্যা গিয়ে দাঁড়িয়েছে প্রায় ৩০ হাজারে। আহতের সংখ্যা প্রায় ৭০ হাজার। খাবারের অভাবে মানবেতর জীবনযাপন করতে হচ্ছে গাজাবাসীকে। উপত্যকাটির উত্তরাঞ্চলে বসবাসকারীদের কাছে পশুখাদ্য ছাড়া কিছুই নেই এখন। তীব্র মানবিক সংকটে থাকা গাজাকে আবারও ‘ডেথ জোন’ বা মৃত্যুপুরী বলেছেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) প্রধান তেদ্রোস আধানম গেব্রেয়াসুস।
বার্তা সংস্থা এএফপির বরাতে রিলিফওয়েব খবরটি দিয়েছে। গতকাল বুধবার এক সংবাদ সম্মেলনে ডব্লিউএইচও প্রধান ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়েছেন। সেই সঙ্গে গাজায় আন্তর্জাতিক সাহায্য অবাধে প্রবেশের সুযোগ দেওয়ারও দাবি জানান তিনি।
তেদ্রোস আধানম গেব্রেয়াসুস বলেন, গাজার মানবিক পরিস্থিতি অমানবিক হচ্ছে। স্বাস্থ্যের ক্রমাগত অবনতি হচ্ছে। গাজা এখন একটি মৃত্যুপুরীতে পরিণত হয়েছে। সেখানকার বেশির ভাগ অঞ্চলই ধ্বংস হয়ে গেছে এবং ক্রমান্বয়ে অবস্থার অবনতি হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, ‘তিন দিন ধরে ডব্লিউএইচও এবং এর সহযোগী সংস্থাগুলো দক্ষিণ গাজার আল নাসের হাসপাতালে প্রবেশ করতে চাইছে। সেখানে শতাধিক গুরুতর আহত রোগী এবং কমপক্ষে ১৫ জন চিকিৎসক ও নার্স রয়েছেন। কিন্তু হাসপাতালটির নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র (আইসিইউ) কাজ করছে না। রোগীদের সরানোও যাচ্ছে না। অনেকেরই হাঁটার অবস্থা নেই।’
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) প্রধান তাঁর বিবৃতিতে বলেন, ‘আমরা কোন ধরনের পৃথিবীতে বাস করি, যেখানে মানুষ খাবার এবং পান করার পানি পায় না? হাঁটতে না পারা মানুষ সেবাযত্নও পেতে পারে না? আমরা কোন ধরনের বিশ্বে বাস করি, যেখানে স্বাস্থ্যকর্মীরা অসহায় মানুষের জীবন রক্ষায় কাজ করার সময় নিজেরাই বোমা হামলার ঝুঁকিতে থাকেন?’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা কোন ধরনের বিশ্বে বাস করি, যেখানে জ্বালানির অভাবে হাসপাতালগুলো বন্ধ করে দিতে হবে, যেখানে গুরুতর আহত রোগীদের চিকিৎসা প্রয়োজন? আর এসব হাসপাতালে একের পর এক হামলা করছে সামরিক বাহিনী। অবিলম্বে যুদ্ধবিরতি দরকার। আমরা চাই জিম্মিরা মুক্তি পাক, বোমাবর্ষণ বন্ধ হোক।’
ফিলিস্তিনের গাজা ভূখণ্ডের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, গাজায় ইসরায়েলের আক্রমণের ফলে অন্তত ২৯ হাজার ৩১৩ জন নিহত হয়েছে। এদের বেশির ভাগই নারী ও শিশু। এ ছাড়া আহত হয়েছে আরও প্রায় ৭০ হাজার মানুষ। এ ছাড়া ইসরায়েলি আগ্রাসনের কারণে প্রায় ২০ লাখের বেশি বাসিন্দা তাদের বাড়িঘর ছাড়তে বাধ্য হয়েছে।