প্রায় ভেঙে পড়া অর্থনীতি পুনরুদ্ধারে ৭০০ কোটি ডলার ঋণ পেতে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে পাকিস্তান। বর্তমানে এই ঋণ কর্মসূচির নবম পর্যালোচনার জন্য আইএমএফ প্রতিনিধিদল ইসলামাবাদ সফর করছে। এ নিয়ে আজ শুক্রবার সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরীফ। আইএমএফ অর্থমন্ত্রী ইসহাক দারের সামনে একটি ‘অত্যন্ত কঠিন সময়’ ছুড়ে দিয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী।
পাকিস্তানি পত্রিকা ডনের অনলাইন সংস্করণে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরীফ আইএমএফ প্রতিনিধিদলের সঙ্গে সরকারের আলোচনার বিস্তারিত গণমাধ্যমে বলতে চাননি।
প্রধানমন্ত্রী শুধু বলেছেন, ‘এই মুহূর্তে আমাদের অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ অকল্পনীয়। (আইএমএফের ঋণ পেতে) আমাদের যে শর্তগুলো পূরণ করতে হবে তা কল্পনার বাইরে।’
তবে সেই সব শর্ত বাস্তবায়ন করা ছাড়া সরকারের হাতে কোনো বিকল্প নেই বলেও স্বীকার করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ। পেশোয়ারে এপেক্স কমিটির বৈঠকে তিনি এমন মন্তব্য করেন বলে জানিয়েছে ডন।
আইএমএফের পাকিস্তান মিশনের প্রধান নাথান পোর্টারের নেতৃত্বে প্রতিনিধিদলটি গত মঙ্গলবার শুরু নবম পর্যালোচনা সমাপ্তির বিষয়ে শিগগিরই একটি সিদ্ধান্তে আসবে বলে জানানো হয়েছে। বৈদেশিক ঋণেখেলাপি হওয়া ঠেকাতে পাকিস্তানকে দ্রুতই এই পর্যালোচনা শেষ করতে হবে।
করাচিভিত্তিক ক্যাপিটাল মার্কেট কোম্পানি আরিফ হাবিব লিমিটেডের তথ্যমতে, ২৭ জানুয়ারি পর্যন্ত দেশের রিজার্ভ ৩ দশমিক ০৯ বিলিয়ন ডলার। এটি দিয়ে মাত্র ১৮ দিনের আমদানি ব্যয় মেটানো সম্ভব। তার মানে প্রয়োজনীয় ন্যূনতম রিজার্ভের অনেক নিচে। এই পরিস্থিতিতে আইএমএফের চলতি পর্যালোচনা সফল হলে প্রথম ধাপে ঋণের ১১২ কোটি ডলার অর্থ ছাড়ের পাশাপাশি বন্ধুত্বপূর্ণ দেশ এবং অন্যান্য বহুপাক্ষিক ঋণদাতার কাছ থেকেও ঋণ প্রবাহের দরজা খুলে যাবে।
সরকার আইএমএফের প্রাথমিক শর্ত পূরণে এরই মধ্যে বেশ কয়েকটি পদক্ষেপ নিয়েছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য বৈদেশিক মুদ্রা বিনিময় হারের ওপর অনানুষ্ঠানিক মূল্যসীমা তুলে নেওয়া, জ্বালানি তেলের দাম ১৬ শতাংশ পর্যন্ত বাড়ানো এবং এলপিজির দাম ৩০ শতাংশ বৃদ্ধি করা।
আজ শুক্রবার পর্যন্ত উভয় পক্ষ প্রথম রাউন্ডে কারিগরি স্তরের আলোচনার ওপর দৃষ্টি নিবদ্ধ রেখেছেন বলে জানা গেছে। এরপর সপ্তাহাজুড়ে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ও কঠিন নীতি-কৌশল নির্ধারণী স্তরের আলোচনা চলবে। শেষ হবে ৯ ফেব্রুয়ারি।