বিশেষায়িত বিভিন্ন সেক্টরের উচ্চদক্ষতাসম্পন্ন পেশাদার মানুষকে পাকিস্তান ছেড়ে যাওয়ার হার এখন অন্য যেকোনো সময়ের তুলনায় বেশি। দেশটির সর্বশেষ অর্থনৈতিক জরিপে দেখা গেছে, আগের বছরের তুলনায় ২০২৩ সালে পাকিস্তান ছেড়ে যাওয়া দক্ষ মানুষের হার ১১৯ শতাংশ পর্যন্ত বেড়ে গেছে।
জরিপের প্রতিবেদনে মেধাবীদের পাকিস্তান ছেড়ে যাওয়ার বিষয়টি বিশেষ গুরুত্ব সহকারে উপস্থাপন করা হয়েছে। অর্থনৈতিক সংকটের মধ্যে দেশ ছেড়ে যাওয়ার এই প্রবণতা একসময় পাকিস্তানকে মেধাশূন্য করে দিতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
জরিপের পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, ২০২৩ সালে কাজের সন্ধানে পাকিস্তান ছেড়ে বিদেশে চলে গেছেন উচ্চদক্ষতাসম্পন্ন ৪৫ হাজার ৬৮৭ জন মানুষ। অথচ এক বছর আগে ২০২২ সালে পাকিস্তান ছেড়েছিল উচ্চ দক্ষতার ২০ হাজার ৮৬৫ জন। এক বছরের মধ্যে মেধা পাচারের এমন আশঙ্কাজনক বৃদ্ধি দেশটির সরকার যে সমৃদ্ধ ভবিষ্যতের আশ্বাস দিচ্ছে, তাকে অনেকটাই বাধাগ্রস্ত করতে পারে।
মেধা পাচারের এই প্রভাব পাকিস্তানের একেক প্রদেশে একেক রকম। এখন পর্যন্ত দেশটির পাঞ্জাব প্রদেশ থেকে উচ্চ দক্ষতা নিয়ে বিদেশে অবস্থান করছেন ৪ লাখ ৮৯ হাজার ৩০১ জন। অন্যদিকে খাইবার পাখতুনখাওয়া থেকে বিদেশে গেছেন ২ লাখ ১০ হাজার ১৫০ জন, সিন্ধু থেকে গেছেন ৭২ হাজার ৩৮২ জন এবং অন্য উপজাতীয় গোষ্ঠীগুলোর মধ্য থেকে গেছেন ৩৬ হাজার ৬০৯ জন।
অর্থনৈতিক বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অর্থনৈতিক সংকটের কারণে অসংখ্য মানুষের দেশ ছেড়ে যাওয়ার প্রবণতা পাকিস্তানে প্রথমবারের মতো সামনে আসে ২০২১ সালের শেষের দিকে। সে সময় দেশটির শিল্প খাতের অন্তত অর্ধেক প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে গিয়েছিল এবং বেকারত্বও বেড়ে গিয়েছিল। মূলত কোথাও জুতসই কাজ না পেয়ে অসংখ্য পাকিস্তানি ভাগ্যান্বেষণের দেশ ছাড়তে শুরু করেছিলেন।
এদিকে মেধা পাচার হয়ে যাওয়ার দুশ্চিন্তার পরও সাম্প্রতিক জরিপটিতে একটি বিষয়কে ইতিবাচকভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে। আর তা হলো—দেশ ছেড়ে যাওয়া মেধাবীরা বিদেশে অর্থ আয় করে দেশে পাঠাচ্ছেন। ফলে পাকিস্তানে রেমিট্যান্সের প্রবাহ বাড়ছে।
পাকিস্তানের শ্রমশক্তির সর্বশেষ জরিপে দেশটির অভ্যন্তরীণ বেকারত্ব পরিস্থিতি নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে। দেশটির অসংখ্য মানুষ বর্তমানে কাজের সন্ধানে দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন।