অনলাইন ডেস্ক
পাকিস্তানে সমকামিতা নিষিদ্ধ। এরপরও দেশটিতে প্রথমবারের মতো একটি সমকামী ক্লাব খোলার পরিকল্পনা করেছিলেন এক ব্যক্তি। শেষ পর্যন্ত তাঁকে একটি মানসিক হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছে যুক্তরাজ্য-ভিত্তিক সংবাদমাধ্যম দ্য টেলিগ্রাফ।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০১১ সালে ওসামা বিন লাদেনকে যে শহরে হত্যা করা হয়েছিল রক্ষণশীল সেই অ্যাবোটাবাদ শহরেই ডিসির কাছে সমকামী ক্লাব স্থাপনের জন্য আবেদনটি করেছিলেন ওই ব্যক্তি। আবেদনে তিনি ‘লরেঞ্জো গে ক্লাব’ নামের সেই সংগঠনটিকে অ্যাবোটাবাদ সহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তে বসবাস করা অসংখ্য সমকামী, উভকামী এবং কিছু বিষমকামী মানুষের জন্য সুবিধা দেওয়ার দাবি করেছিলেন।
আবেদনে এটাও উল্লেখ ছিল যে, প্রস্তাবিত সেই ক্লাবে কোনো সমকামী যৌনতা থাকবে না। বড়জোর চুম্বন থাকতে পারে। ক্লাবের দেওয়ালে একটি নোটিশ ঝুলিয়ে সদস্যদের এই বিষয়গুলো থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানানো হবে। আর এসব না করলে কোনো আইনি বাধাও থাকবে না।
তবে ওই আবেদনে ধারাবাহিকতায় নাম অপ্রকাশিত ওই ব্যক্তিটিকে পেশোয়ারের একটি মানসিক হাসপাতালে পাঠানো হয়। তবে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার আগে গণমাধ্যমকে তিনি বলেছিলেন, ‘আমি মানবাধিকারের কথা বলি এবং আমি চাই প্রত্যেকের মানবাধিকার রক্ষা করা হোক।’
আবেদন প্রত্যাখ্যাত হলে কর্মকর্তাদের কাছ থেকে এর লিখিত উত্তর চাইবেন জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমি পাকিস্তানের সবচেয়ে অবহেলিত সম্প্রদায়ের অধিকারের জন্য সংগ্রাম শুরু করেছি এবং প্রতিটি ফোরামে এর জন্য আওয়াজ তুলতে থাকব।’
কর্তৃপক্ষ প্রত্যাখ্যান করলে আদালতে যাওয়ার কথাও বলেন ওই ব্যক্তি। এ বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আমি আশা করি, ভারতীয় আদালতের মতো পাকিস্তানের আদালতও সমকামীদের পক্ষে রায় দেবে।’
আবেদনপত্র পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছে অ্যাবোটাবাদের ডিসি অফিস। আবেদনটিকে অন্য যেকোনো প্রস্তাবের মতোই পর্যালোচনা করা হচ্ছে বলে জানানো হয়েছে।
জানা গেছে, ওই আবেদনের বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে জানাজানি হয়ে গেলে ক্লাব খুলতে চাওয়া ব্যক্তির প্রচেষ্টা বাধাগ্রস্ত হয়। স্থানীয় বাসিন্দাদের পাশাপাশি খাইবার পাখতুনখাওয়ার উত্তরাঞ্চলীয় রাজনীতিবিদেরা বিষয়টি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ শুরু করেন। এমন পরিস্থিতির ধারাবাহিকতায় ওই ব্যক্তিকে শেষ পর্যন্ত মানসিক হাসপাতালেই পাঠানো হয়েছে।
পাকিস্তানে সমকামী যৌনতা অবৈধ এবং এর জন্য দুই বছর পর্যন্ত জেল হতে পারে। তবে এই আইনের প্রয়োগ খুব কমই ঘটতে দেখা যায় দেশটিতে। কারণ পাকিস্তানের রক্ষণশীল ধর্মীয় সংস্কৃতি প্রকাশ্যে সমকামী হওয়াকে অনেক কঠিন করে তুলেছে।