পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইনসের (পিআইএ) বিমানবালা ছিলেন মরিয়ম রাজা। ২৬ ফেব্রুয়ারি তিনি ওই বিমান সংস্থাটির কানাডাগামী একটি ফ্লাইটে কেবিন ক্রু হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন। কিন্তু পরদিন ফিরতি ফ্লাইটেই তাঁর আর হদিস নেই। একেবারেই উধাও হয়ে যান তিনি।
এ বিষয়ে একাধিক পাকিস্তানি গণমাধ্যমে জানানো হয়েছে, ফিরতি ফ্লাইটে অনুপস্থিত মরিয়মকে খুঁজতে তাঁর হোটেল কক্ষে গিয়েছিল কর্তৃপক্ষ। কিন্তু সেখানে গিয়ে তারা একটি চিঠি পড়ে থাকতে দেখে। চিঠিতে লেখা ছিল, ‘ধন্যবাদ, পিআইএ (পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইনস)।’
মজার বিষয় হলো, একটি আরামদায়ক ভ্রমণের পর এ ধরনের কৃতজ্ঞতাস্বরূপ বার্তা বিমান সংস্থাগুলো প্রায় সময়ই যাত্রীদের কাছ থেকে পেয়ে থাকে। কিন্তু বিমানবালার এমন কৃতজ্ঞতার রহস্য কী?
রহস্য খুঁজতে গিয়েই জানা গেছে, মরিয়ম শুধু একা নন। তাঁর আগেও পিআইএ সংস্থাটির একাধিক বিমানবালা এভাবে উধাও হয়ে গিয়েছিলেন। গত জানুয়ারি মাসেও কানাডায় নিখোঁজ হন সংস্থাটির ফ্লাইট অ্যাটেনডেন্ট ফাইজা মুখতার।
এর আগে গত বছর পিআইএয়ের অন্তত সাতজন ফ্লাইট অ্যাটেনডেন্ট কানাডায় অবতরণের পর এভাবে নিখোঁজ হয়েছিলেন। তাঁদের মধ্যে পুরুষ সদস্যও ছিলেন। সংস্থাটির কর্মীদের মধ্যে এ ধরনের প্রবণতা ২০১৮ সাল থেকেই শুরু হয়েছিল।
পিআইএ সংস্থাটির অভিযোগ, তাদের নিখোঁজ হয়ে যাওয়া সব বিমানবালা ও কেবিন ক্রু মূলত কানাডায় রাজনৈতিক আশ্রয় প্রার্থনা করেন। বিমান সংস্থায় কর্মরত অবস্থায় উন্নত জীবনের আশায় তাঁরা কানাডায় অভিবাসিত হওয়ার ছক কষেন। তারপর একদিন সুযোগ বুঝে নিখোঁজ হয়ে যান।
এমন পরিস্থিতির জন্য কানাডার উদার আশ্রয় নীতিকে দায়ী করেছে পিআইএ কর্তৃপক্ষ। জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থার তথ্যমতে, যদি কোনো ব্যক্তি তাঁর দেশে নিপীড়নের ভয় পান বা নিষ্ঠুর আচরণ বা নির্যাতনের ঝুঁকিতে থাকেন, তাহলে তিনি কানাডায় শরণার্থী সুরক্ষা দাবি করতে পারেন।
পাকিস্তানে চলমান অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক অনিশ্চয়তার মধ্যে অনেক পাকিস্তানি তাই কানাডায় আশ্রয় চাওয়াকে তাঁদের পরিস্থিতি থেকে পালানোর উপায় হিসেবে দেখেন।