অনলাইন ডেস্ক
ধর্ম অবমাননার অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত হওয়ায় পাকিস্তানে ২২ বছর বয়সী এক শিক্ষার্থীকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন পাঞ্জাব প্রদেশের একটি আদালত। রায়ে বলা হয়েছে, মুসলিমদের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দেওয়ার উদ্দেশ্যে হোয়াটসঅ্যাপে ধর্ম অবমাননাকারী ছবি ও ভিডিও ছড়িয়ে দিয়েছেন সেই যুবক।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি এক প্রতিবেদনে খবরটি দিয়েছে। একই অভিযোগে ১৭ বছর বয়সী আরেক শিক্ষার্থীকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে দণ্ডিত করেছেন আদালত। তবে দুজনই তাদের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
পাকিস্তানে ব্লাসফেমি বা ধর্ম অবমাননার শাস্তি মৃত্যুদণ্ড। এই অভিযোগে আদালতে যাওয়ার আগেই কিছু মানুষকে পিটিয়ে মেরে ফেলার নজিরও আছে পাকিস্তানে।
পাঞ্জাবের রাজধানী লাহোরে পাকিস্তানের ফেডারেল ইনভেস্টিগেশন এজেন্সির (এফআইএ) সাইবার ক্রাইম ইউনিটে ২০২২ সালে অভিযোগটি দায়ের করা হয়েছিল। এরপর মামলাটি গুজরানওয়ালা শহরের একটি স্থানীয় আদালতে পাঠানো হয়।
এই সপ্তাহে রায়ে বিচারকেরা বলেছেন যে, ২২ বছর বয়সী সেই শিক্ষার্থী ধর্ম অবমাননাকর ছবি এবং ভিডিও বানিয়েছিল। সেখানে নবী মুহাম্মাদ (সা.) এবং তাঁর স্ত্রীদের সম্পর্কে অবমাননাকর কথা রয়েছে।
ছবি ও ভিডিওগুলো অন্যদের পাঠানোর দায়ে ১৭ বছর বয়সী আসামিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। আদালত বলেন, নাবালক হওয়ায় তাকে মৃত্যুদণ্ডের পরিবর্তে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
মামলাটির বাদীর অভিযোগ, তিনি তিনটি ভিন্ন মোবাইল ফোন নম্বর থেকে ভিডিও ও ছবি পেয়েছিলেন। অভিযোগ সম্পর্কে এফআইএ বলেছে যে, তারা বাদীর ফোন পরীক্ষা করে দেখেছে যে, তাকে ‘অশ্লীল ছবি ও ভিডিও’ পাঠানো হয়েছিল।
এদিকে, আসামিপক্ষের আইনজীবীরা যুক্তি দিয়েছিলেন যে, দুই শিক্ষার্থীকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো হয়েছে। মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামির পরিচয় প্রকাশ করা হয়নি। তার বাবা বিবিসিকে বলেছেন যে, তিনি লাহোর হাইকোর্টে রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করবেন।
ব্লাসফেমি বা ধর্ম অবমাননার বিরুদ্ধে আইনগুলো প্রথমে ভারতের ব্রিটিশ শাসকদের দ্বারা প্রথম প্রণীত হয়। এরপর ১৯৮০ এর দশকে পাকিস্তানের সামরিক সরকারের অধীনে আইনগুলো প্রসারিত হয়েছিল।
গত আগস্টে, দুই খ্রিষ্টান পুরুষের বিরুদ্ধে কোরআনের ক্ষতিসাধনের অভিযোগ আনার পর পূর্বাঞ্চলীয় শহর জারানওয়ালায় বেশ কয়েকটি গির্জা ও বাড়িঘর পুড়িয়ে দেওয়া হয়।