ইদ্দতের পূর্ণতার আগে অর্থাৎ বিবাহ বিচ্ছেদ কার্যকরের আগেই আইন লঙ্ঘন করে বিয়ে করার দায়ে পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও পিটিআইয়ের প্রতিষ্ঠাতা ইমরান খান ও তাঁর স্ত্রী বুশরা বিবিকে সাত বছর করে কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
ইমরান ও বুশরার উপস্থিতিতে আজ শনিবার (৩ ফেব্রুয়ারি) রাওয়ালাপিণ্ডির একটি আদালত তাঁদের সাজা দেন বলে পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যম ডন জানিয়েছে।
কারাদণ্ডের পাশাপাশি এই দম্পতির প্রত্যেককে ৫ লাখ রুপি (পাকিস্তানি) করে জরিমানা করা হয়েছে। জরিমানা অনাদায়ে আরও ৪ মাস কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
এ নিয়ে গত কয়েক মাসে ইমরান খানকে চতুর্থবারের মতো কারাদণ্ড দেওয়া হলো। দেশটির প্রধান বিরোধী নেতা ইমরান খানকে এমন এক সময়ে সাজা দেওয়া হচ্ছে, যখন পাকিস্তানজুড়ে নির্বাচনী হাওয়া বইছে। যদিও নির্বাচনে ইমরান ও তার দলকে অংশ নিতে দেওয়া হয়নি।
গতকাল শুক্রবার ১৪ ঘণ্টার শুনানি শেষে মামলার রায় ঘোষণার জন্য আজ শনিবার দিন রেখেছিলেন দেওয়ানি আদালতের জ্যেষ্ঠ বিচারক কুদরতুল্লাহ।
রায়ে বলা হয়, দুই আসামি পাকিস্তান দণ্ডবিধির (পিপিসি) ৪৯৬ (আইনবর্হিভূত বিয়ে) ধারা লঙ্ঘনে দোষী সাব্যস্ত।
ইমরান খান ও স্ত্রী বুশরা বিবির বিরুদ্ধে এই মামলাটি দায়ের করেন বুশরার সাবেক স্বামী খাওয়ার মানেকার। মামলায় বলা হয়, ২০১৭ সালের নভেম্বরে বুশরার সঙ্গে তার বিচ্ছেদ হয়। কিন্তু ইদ্দত (বিবাহিত নারীর ক্ষেত্রে বিচ্ছেদের পর ৩ মাস এবং স্বামীর মৃত্যুর পর ৪ মাস ১০ দিনের মধ্যে বিয়ে না করার বিধান) লঙ্ঘন করেই ২০১৮ সালের ১ জানুয়ারি ইমরান খানকে বিয়ে করেন, যা ইসলামিক বিধান (শরিয়া) ও মুসলিম রীতিনীতির বিরোধী।
তোশাখানা দুর্নীতির মামলায় গত ৩১ জানুয়ারি ইমরান খান ও বুশরা বিবিকে ১৪ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। তার আগে মঙ্গলবার (৩০ জানুয়ারি) সাইফার বা গোপন তার বার্তা ফাঁসের মামলায় ইমরান ও সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও দলের ভাইস চেয়ারম্যান শাহ মাহমুদ কুরেশিকে ১০ বছরের কারাদণ্ড দেন আদালত।
ইমরান খান ও শাহ মাহমুদ কুরেশির বিরুদ্ধে সাইফার মামলাটি করে পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থা (এফআইএ)। অভিযোগে বলা হয়, ওয়াশিংটনের পাকিস্তানি রাষ্ট্রদূত গত বছর ইসলামাবাদে একটি গোপন নথি পাঠান। তিনি সেটি প্রকাশ করে রাষ্ট্রীয় গোপনীয়তার আইন লঙ্ঘন করেন।
পিটিআইয়ের দাবি, এই নথিতে ইমরানকে ক্ষমতাচ্যুত করতে যুক্তরাষ্ট্রের হুমকি ছিল। একই মামলায় সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী শাহ মাহমুদ কুরেশিকেও আসামি করা হয়। তিনিও নিজেকে নির্দোষ দাবি করেছেন।
২০২২ সালের এপ্রিলে সংসদে বিরোধীদের অনাস্থা ভোটে হেরে সরকার থেকে বিদায় নেন ইমরান খান। এরপর থেকে একের পর এক আইনি জটিলতায় মধ্যে রয়েছেন তিনি। গত বছরের আগস্টে এক দুর্নীতি মামলায় সাজাপ্রাপ্ত হয়ে তিন বছরের জেল খাটছেন ইমরান খান।