গত বৃহস্পতিবার (২৪ জুন) যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডা অঙ্গরাজ্যের মায়ামিতে ধসে পড়ে ১২ তলা বিশিষ্ট একটি অ্যাপার্টমেন্ট ভবন। সাগর তীরবর্তী সার্ফসাইড এলাকার চ্যামপ্লেইন টাওয়ার্স সাউথ নামের ভবনটিতে ছিল ১৫৬টি ইউনিট। ভবনের একটি বড় অংশ ধসে পড়ার ঘটনায় এখন পর্যন্ত ২৪ জনের মরদেহ উদ্ধার হয়েছে। নিখোঁজ রয়েছেন এখনো ১২১ জন।
দিন রাত উদ্ধার অভিযান চালিয়ে যাচ্ছেন দমকল বাহিনীর কর্মীরা। গতকাল শুক্রবার রাতভর অভিযান চালান তাঁরা। এ সময় ধ্বংসস্তূপ থেকে উদ্ধার করা হয় সাত বছর বয়সী একটি শিশুর মরদেহ। নয় দিন ধরে মেয়ের জন্য অস্তির হয়ে অপেক্ষা করছিলেন এক দমকলকর্মী। এটি ছিল তাঁরই মেয়ে। শিশুটির নাম স্টেলা ক্যাটারোসি, মায়ামির সেই ধসে পড়া ভবনের ৫০১ নম্বর অ্যাপার্টমেন্টে পরিবারের সঙ্গে থাকত সে।
মায়ামির ফায়ার রেসকিউ ক্যাপ্টেন ইগনেটিয়াস ক্যারল বলেন, ‘হতাহতদের উদ্ধার করা খুবই কষ্টের। গত রাতে (শুক্রবার) আমরা আরও দুটি মরদেহ উদ্ধার করেছি। এদের মধ্যে সাত বছরের এক শিশুও রয়েছে। সে আমাদের একজন দমকলকর্মীর মেয়ে। আরেকজনের পরিচয় নিশ্চিত হওয়া যায়নি।’
স্থানীয় এক গণমাধ্যমকে ক্যাপ্টেন ইগনেটিয়াস ক্যারল বলেন, যখন তিনি বুঝতে পারেন যে আমরা তাঁর স্নেহের কন্যাটির কাছাকাছি চলে গেছি, তখন সহকর্মীদের কাছে কাছে চরম উদ্বেগ আর উত্তেজনা নিয়ে ছটফট করছিলেন। আমরা মেয়েটিকে মৃত উদ্ধার করি। বাবা এখন মেয়েকে শেষবিদায়টা অন্তত জানাতে পারবেন।
স্টেলা ক্যাটারোসি ছাড়াও এর আগে আরও দুই শিশুর মরদেহ গত বুধবার ধ্বংসস্তূপ থেকে উদ্ধার করা হয়। সেই দুই শিশু হলো–লুসিয়া গুয়ারা (৪) ও এমা গুয়ারা (১০)। তারা সহোদর বোন।
জানা গেছে, স্টেলা ওই ভবনের একটি অ্যাপার্টমেন্ট তার মা, দাদা–দাদির সঙ্গে থাকত। তার খালা আর্জেন্টিনা থেকে তাদের সঙ্গে দেখা করতে এসেছিলেন।
সহকর্মীর শিশুকন্যার মৃত্যুতে শোক মুহ্যমান দমকল বাহিনীর অন্য কর্মীরা। তাঁদের উদ্দেশ্যে ইগনেটিয়াস ক্যারল বলেন, ভালোবাসার মানুষের সঙ্গে ভালো সময় কাটান। ভালোবাসার মানুষকে বলুন, আপনি তাঁদের কতটা ভালোবাসেন। তাঁদের যত্ন নিন। কেননা এক মুহূর্তের দুর্ঘটনায় আপনার সুখকর সব স্মৃতি মুছে যেতে পারে।