মার্কিন সামরিক বাহিনীতে যৌন নিপীড়ন ২০২১ অর্থবছরে ১৩ শতাংশ বেড়েছে। এটিকে রেকর্ড মাত্রা বলেছে মার্কিন প্রশাসন। স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবারে প্রকাশিত পেন্টাগনের বার্ষিক প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা এএফপি।
প্রতিরক্ষা অধিদপ্তরের যৌন নিপীড়ন প্রতিরোধ ও প্রতিক্রিয়া অফিস (এসএপিআর) বলেছে, গত বছরের ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সেনাবাহিনীতে ৮ হাজার ৮৬৬ জন যৌন নিপীড়নের শিকার হয়েছেন। আগের বছর সংখ্যাটি ছিল ৭ হাজার ৮১৩।
সেনাবাহিনীতে কর্মরত ৩৬ হাজার সদস্যের মধ্যে জরিপ চালিয়ে এ তথ্য পাওয়া গেছে। এর মধ্যে ৮ দশমিক ৪ শতাংশ পুরুষ এবং ১ দশমিক ৫ শতাংশ নারী অপ্রত্যাশিত যৌন সংসর্গের সম্মুখীন হয়েছেন। পেন্টাগনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যৌন নিপীড়নের শিকার হওয়া ব্যক্তিদের কিছু অংশ কর্তৃপক্ষ ও এসপিআরের কাছে নিপীড়নের কথা জানিয়েছেন। সবাই জানাননি।
পেন্টাগন আরও জানিয়েছে, যৌন নিপীড়ন পরিমাপ করতে ব্যবহৃত মেট্রিকের পরিবর্তনের কারণে সত্যিকার অর্থেই যৌন নিপীড়ন বেড়েছে কি না, তা বৈজ্ঞানিকভাবে নির্ধারণ করা সম্ভব হয়নি। তবে অন্যান্য যেসব তথ্য পাওয়া গেছে, তাতে নিপীড়ন বাড়ারই ইঙ্গিত দেয়।
পেন্টাগনের অফিস অব ফোর্স রেজিলিয়েন্সির নির্বাহী পরিচালক এলিজাবেথ ফস্টার বলেছেন, ‘আমাদের কাছে যে তথ্য এসেছে তাতে বোঝা যায়, নারীরা সবচেয়ে বেশি যৌন নিপীড়নের শিকার হয়েছেন। ২০০৬ সালে সমস্যাটি নিয়ে প্রথমবারের মতো জরিপ ও গবেষণা শুরু হয়েছিল।’
ফস্টার আরও জানিয়েছেন, গত বছর পুরুষদের নিপীড়নের মাত্রা ছিল দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। ২০০৬ সালে পুরুষেরা ছিলেন নিপীড়নের সর্বোচ্চ স্তরে। এই সংখ্যাগুলো সত্যিই দুঃখজনক এবং অত্যন্ত হতাশাজনক।
পেন্টাগনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নিপীড়নের তীব্রতা সবচেয়ে বেশি সেনাবাহিনীতে, সংখ্যাটি ২৬ শতাংশ। এরপর নৌবাহিনীতে ১৯ শতাংশ এবং বিমানবাহিনীতে ২ শতাংশ।
চলতি বছরের জানুয়ারিতে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন সামরিক আইনে যৌন হয়রানিকে অপরাধ হিসেবে ঘোষণা করে একটি আদেশ জারি করেছেন। এই আদেশের অর্থ হচ্ছে, যৌন নিপীড়ন, পারিবারিক সহিংসতা ও নাবালকদের ওপর হামলার বিচার এখন সামরিক আদালতে করা হবে এবং আদালতে মামলা নেওয়ার সিদ্ধান্ত সামরিক চেইন অব কমান্ডের অফিসারদের পরিবর্তে বিশেষ প্রসিকিউটরদের ওপর ন্যস্ত করা হবে।