ইউক্রেন যুদ্ধকে কেন্দ্র করে রাশিয়াকে দুর্বল করার জন্য নতুন ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। রাশিয়ার ভবিষ্যৎ জ্বালানি সক্ষমতা, নিষেধাজ্ঞা এড়ানোর কৌশল এবং আত্মঘাতী ড্রোন ল্যানসেট উৎপাদনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে এক শরও বেশি ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। এর আওতায় পড়েছে ইউক্রেন যুদ্ধে রুশ সেনাবাহিনীকে সরঞ্জাম ও প্রযুক্তি সরবরাহে জড়িত ১৩০ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান। চীন, তুরস্ক ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের কয়েকটি প্রতিষ্ঠানও রয়েছে এই নিষেধাজ্ঞার আওতায়। কাতারভিত্তিক সংবাদ সংস্থা আল জাজিরার এক প্রতিবেদনে এ খবর জানানো হয়।
গত বৃহস্পতিবার যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেজারি সেক্রেটারি জেনেট ইয়েলেন এক বিবৃতিতে বলেন, ‘রুশ সামরিক বাহিনী ইউক্রেনে তাদের বর্বর যুদ্ধকে স্থায়ী করতে প্রয়োজনীয় সামরিক সরঞ্জামাদি সরবরাহে আগ্রহী তৃতীয় পক্ষের ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের ওপর নির্ভরশীল। আমরা সেই সব ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে জবাবদিহি করতে দ্বিধা করব না।’
নিষেধাজ্ঞার পরেও চীন, তুরস্ক ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের সঙ্গে বৈধ ব্যবসায়িক সম্পর্ককে কাজে লাগিয়ে নানা সামরিক সরঞ্জামাদি ও প্রযুক্তি পেয়ে আসছিল রাশিয়া। বেসামরিক এবং সামরিক-উভয় খাতেই কাজে লাগানো যায় এমন কিছু পণ্য যেমন গাড়ির যন্ত্রাংশ বা এনক্রিপশন সফটওয়্যার রাশিয়াকে সরবরাহ করছিল এই তিনটি দেশের ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান। যুক্তরাষ্ট্রের এই নিষেধাজ্ঞা সেই সরবরাহ চেইনকে অকার্যকর করতেই দেওয়া হয়েছে।
প্রথমবারের মতো রাশিয়ার আত্মঘাতী ল্যানসেট ড্রোন উৎপাদনের বিরুদ্ধে ওয়াশিংটনের ব্যবস্থা গ্রহণকে স্বাগত জানিয়েছে ইউক্রেন। এক ভিডিও বার্তায় ওয়াশিংটনের পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়ে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেছেন, ঠিক এটাই দরকার ছিল।
রাশিয়ার যুদ্ধ ও অন্যান্য ক্ষতিকারক কার্যকলাপকে সমর্থনের সঙ্গে জড়িত—এমন অভিযোগ এনে বৃহস্পতিবার পৃথকভাবে রাশিয়ার জ্বালানি, ধাতু এবং খনিজ খাতের ওপর ১০০টি নতুন নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তর। এ ছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য দপ্তর ইতিমধ্যেই ১২টি রুশ ও উজবেকিস্তানের একটি কোম্পানিকে কালো তালিকাভুক্ত করেছে। এই কোম্পানিগুলো মস্কোকে ড্রোন প্রযুক্তি অর্জনে সহায়তা করেছে বলে জানায় বাণিজ্য দপ্তর।
২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসনের পর থেকে যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং অন্যান্য দেশ কয়েক শ রুশ ব্যক্তি এবং সংস্থার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। তবে এসব নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও রাশিয়ার অর্থনীতি এ বছর ১ দশমিক ৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জন করতে পারবে বলে ধারণা করছেন সংশ্লিষ্টরা।