অনলাইন ডেস্ক
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ক্ষমতা ছাড়ার আগে এক দিনে ৩৯ জন আমেরিকানকে নির্বাহী আদেশে ক্ষমা করেছেন এবং প্রায় ১ হাজার ৫০০ জনের সাজা কমিয়েছেন। হোয়াইট হাউস জানিয়েছে, এটি এখন পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে এক দিনে সবচেয়ে বেশিসংখ্যক ‘প্রেসিডেন্সিয়াল ক্ষমা’র সিদ্ধান্ত।
বিবিসির একটি প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, বাইডেন যেসব বন্দীকে ক্ষমা করেছেন, তাঁরা মূলত অহিংস অপরাধে দোষী সাব্যস্ত ছিলেন। যাঁদের মধ্যে অধিকাংশই মাদকের অপরাধে অভিযুক্ত। বাইডেন ক্ষমা পাওয়া এসব ব্যক্তির সম্পর্কে বলেছেন, ‘তাঁরা সফলভাবে পুনর্বাসন কেন্দ্রের প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেছেন এবং তাঁরা তাঁদের কমিউনিটিকে আরও শক্তিশালী ও নিরাপদ করার জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হয়েছে।’
এ ছাড়া বাইডেন ২০২০ সালের কোভিড–১৯ মহামারির সময় বাড়িতে অবস্থানরত কয়েক শ বন্দীর সাজা কমিয়েছেন। যাঁদের অনেকেই অতিরিক্ত শাস্তি ভোগ করছিলেন। প্রেসিডেন্ট বাইডেন বলেন, ‘এদের জন্য নতুন সুযোগ সৃষ্টি করা উচিত। এরা প্রমাণ করেছে যে এরা দ্বিতীয় সুযোগ পাওয়ার যোগ্য।’
তবে বাইডেনের যাঁদের ক্ষমা করেছেন, তাঁদের মধ্যে বিশেষ কিছু মানুষের নামও আছে। যাঁরা একসময় তাঁদের অবদানের জন্য প্রশংসিত হয়েছেন। এর মধ্যে একজন সামরিক কর্মকর্তা আছেন, যিনি গির্জার সদস্যদের সহায়তা করেছিলেন। একজন নার্স আছেন, যিনি কোভিড ভ্যাকসিনের প্রচারে অংশগ্রহণ করেছিলেন। এ ছাড়া মাদকাসক্ত নিরাময় কেন্দ্রের একজন কাউন্সেলরও আছেন।
বাইডেন সমর্থকদের মতে, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে এটি বাইডেনের জন্য একটি উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপ। ক্ষমতা ছাড়ার আগে তিনি আরও এমন পদক্ষেপ নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। বাইডেন জানিয়েছেন, ‘আগামীতে আরও এমন সিদ্ধান্তের ঘোষণা আসবে।’ তবে সম্প্রতি, বাইডেন তাঁর পুত্র হান্টারকে নির্বাহী আদেশে ক্ষমা করেছেন, যা অনেকের কাছে সন্দেহজনক মনে হয়েছে।
মোটের ওপর, বাইডেনের ক্ষমা দেওয়া ও সাজা কমানোর সিদ্ধান্ত আমেরিকান সমাজে এক বড় চমক তৈরি করেছে এবং এই ব্যাপারটি তাঁর প্রশাসনের একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে গণ্য হচ্ছে। অন্যদিকে বাইডেনের বর্তমান প্রশাসন এই বিষয়টি নিয়ে সমালোচনার মুখেও পড়েছে। যা রাজনৈতিকভাবে আরও জটিল এবং বিতর্কিত হয়ে উঠছে। তবে বাইডেনের মতে, এই পদক্ষেপগুলো যুক্তরাষ্ট্রের গণতন্ত্রের প্রতি তাঁর অঙ্গীকার এবং মানবিক দৃষ্টিভঙ্গির প্রতিফলন।