আগে থেকেই জানা ছিল—কোন দিক দিয়ে বয়ে যাবে প্রলয়ংকরী ঘূর্ণিঝড় ‘হেলেন’। সেই অনুযায়ী ব্যবস্থাও নেওয়া হয়েছিল। ঝড় আসার আগেই যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডা অঙ্গরাজ্যের উপকূলীয় অনেক শহর থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছিল বাসিন্দাদের। ঝড়ের হুমকিতে থাকা শহরগুলোর এই তালিকায় ছিল স্টেইনহ্যাচি শহরের নামও।
সোমবার সিএনএন জানিয়েছে, ফ্লোরিডার যে শহরগুলোর ওপর দিয়ে ঝড়টি বয়ে গেছে তার মধ্যে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত স্টেইনহ্যাচি শহর। ১০ থেকে ১৫ ফুট উঁচু জলোচ্ছ্বাস সহ হারিকেন হেলেন প্রায় ২২৫ কিলোমিটার বেগে এসে এই শহরে আঘাত হানে।
যুক্তরাষ্ট্র-ভিত্তিক দ্য এক্সপ্রেস জানিয়েছে, হারিকেন হেলেনের শক্তিমত্তা এতটাই বেশি ছিল যে, স্টেইনহ্যাচি শহরটি মানচিত্র থেকে প্রায় সম্পূর্ণভাবে নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে!
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ফ্লোরিডার রাজধানী শহর তালাহাসি থেকে ৯০ মাইল দক্ষিণ-পূর্বে অবস্থিত স্টেইনহ্যাচি শহরে আনুমানিক ৫০০ লোকের বসবাস। ঝড় আসার আগেই শহর থেকে তাঁদের সরিয়ে নিয়েছিল কর্তৃপক্ষ। ঝড় থেমে যাওয়ার পর বাসিন্দাদের কেউ কেউ ফিরে এসে স্তব্ধ হয়ে যাচ্ছেন। কারণ তাঁদের পরিচিত শহরের কিছুই আর অবশিষ্ট নেই। চারদিকে শুধু ধ্বংসের ছবি। অনেকেই বলছেন, মানচিত্র থেকেই মুছে গেছে তাঁদের প্রিয় শহরটি।
সিএনএনের হালনাগাদ তথ্য অনুযায়ী, এখন পর্যন্ত এই ঝড়ে ১১৯ জনের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করা হয়েছে। তবে নিখোঁজ রয়েছেন আরও অসংখ্য। তাই মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। বিভিন্ন শহরের বিদ্যুৎ লাইনগুলোও উড়ে গেছে। ফলে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে আছেন হাজার হাজার মানুষ।
ফ্লোরিডা ছাড়াও জর্জিয়া, টেনেসি এবং নর্থ ও সাউথ ক্যারোলিনার বিস্তীর্ণ এলাকায় এই ঝড়ের প্রভাব পড়েছে। কোথাও কোথাও ১৫ ফুটেরও বেশি উঁচু জলোচ্ছ্বাস দেখা গেছে। সরকারিভাবে ঝড়ের ক্ষয়-ক্ষতি সম্পর্কে এখনো কোনো হিসেব মেলানো যায়নি। তবে আর কোনো ঝড়ের আশঙ্কা না থাকায় পরিস্থিতির দ্রুত উত্তরণ হবে বলে আশা করছে কর্তৃপক্ষ।