অনলাইন ডেস্ক
চীনের হ্যাকাররা যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেজারি বিভাগে সাইবার হামলা চালিয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। ট্রেজারি বিভাগের একজন মুখপাত্র জানান, এ মাসের শুরুর দিকে কয়েকজন কর্মকর্তার ওয়ার্কস্টেশন (কম্পিউটার) ও গোপন নথিপত্রে অনুপ্রবেশ ঘটেছে বলে নিশ্চিত হয়েছেন তাঁরা। চীন সরকারের পৃষ্ঠপোষকতায় হ্যাকাররা এ হামলা চালিয়েছে বলে অভিযোগ তাঁদের।
আজ মঙ্গলবার দ্য গার্ডিয়ানের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা যায়।
গতকাল সোমবার আইনপ্রণেতাদের কাছে পাঠানো ট্রেজারি বিভাগের একটি চিঠি থেকে জানা যায়, বিয়ন্ড ট্রাস্ট নামে একটি তৃতীয় পক্ষের সাইবার সিকিউরিটি সেবাদানকারী সংস্থার মাধ্যমে এই হামলা চালানো হয়েছে। বিয়ন্ড ট্রাস্টের ব্যবহৃত একটি ‘সিস্টেম কি অ্যাকসেস’ হ্যাক করে তাদের সিস্টেমে অনুপ্রবেশ করে সাইবার অপরাধীরা। এরপর সিস্টেমের মূল কার্যক্রমগুলো পাল্টে ট্রেজারি বিভাগের কয়েকজন কর্মকর্তার তথ্যের এক্সেস নেয় তারা।
ট্রেজারি বিভাগের মুখপাত্র বলেন, বিয়ন্ড ট্রাস্ট সিস্টেমের ওই অংশটির কার্যক্রম বন্ধ রাখা হয়েছে। ট্রেজারি সিস্টেম বা তথ্যের এক্সেস এখনো হ্যাকারদের হাতে আছে এমন কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি।
এই সাইবার হামলা এমন সময় ঘটেছে যখন বিভিন্ন প্রতিবেদনে উঠে এসেছে, চীন সরকারের পৃষ্ঠপোষকতায় হ্যাকাররা এই মাসের শুরুর দিকে যুক্তরাষ্ট্রের বৃহত্তম তিনটি টেলিযোগাযোগ কোম্পানির সিস্টেমে অনুপ্রবেশ করেছে। ‘সল্ট টাইফুন’ নামে পরিচিত এই হামলায় সাইবার অপরাধীরা আইনপ্রণেতাদের ফোন কল ও টেক্সট বার্তায় প্রবেশ করতে সক্ষম হয়েছিল।
বিয়ন্ড ট্রাস্টের সতর্কবার্তা পাওয়ার পর সাইবার সিকিউরিটি অ্যান্ড ইনফ্রাস্ট্রাকচার সিকিউরিটি এজেন্সি (সিআইএসএ), ফেডারেল ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (এফবিআই) এবং তৃতীয় পক্ষের ফরেনসিক তদন্তকারীদের সঙ্গে যোগাযোগ করে ট্রেজারি বিভাগ। ঘটনার আরও বিস্তারিত তথ্য ৩০ দিনের একটি সম্পূরক প্রতিবেদনে প্রকাশ করা হবে বলে জানিয়েছেন তাঁরা।
ট্রেজারি বিভাগের মুখপাত্র বলেন, ‘আমরা সিস্টেম ও সংরক্ষিত তথ্যের বিরুদ্ধে সব ধরনের হুমকিকে অত্যন্ত গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করি। গত চার বছরে আমাদের সাইবার প্রতিরক্ষা উল্লেখযোগ্যভাবে শক্তিশালী হয়েছে এবং আমরা সরকারি ও বেসরকারি অংশীদারদের সঙ্গে কাজ চালিয়ে যাব।’
অন্যদিকে বিয়ন্ড ট্রাস্ট তাদের ওয়েবসাইটে বলেছে, তাদের রিমোট সাপোর্ট সফটওয়্যারের একটি সমস্যার কারণে কিছু গ্রাহক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। এতে একটি ডিজিটাল কি হারাতে হয়েছে। এ ঘটনায় তদন্ত চলমান।
এ সাইবার হামলা প্রসঙ্গে সেনটিনেলওয়ান সাইবার সিকিউরিটি কোম্পানির থ্রেট রিসার্চার টম হেগেল বলেন, এই হামলার সঙ্গে চীন সরকারের পৃষ্ঠপোষকতায় চালানো পূর্বের হামলাগুলোর প্যাটার্ন মিলে যায়। একই ধরনের হামলা সাম্প্রতিক বছরগুলোতে দেখা গেছে। হ্যাকাররা তাদের দেশের নামের সংক্ষিপ্ত রূপ পিআরসি (পিপল রিপাবলিক অব চায়না) কোড হিসেবে ব্যবহার করে।
তবে এই সাইবার হামলায় কোনো ধরনের সংশ্লিষ্টতার দায় অস্বীকার করেছেন ওয়াশিংটনে চীনা দূতাবাসের একজন মুখপাত্র। বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে দেওয়া এক প্রতিক্রিয়ায় তিনি বলেন, বেইজিং যুক্তরাষ্ট্রের ভিত্তিহীন অভিযোগের তীব্র বিরোধিতা জানাচ্ছে।