অনলাইন ডেস্ক
যুক্তরাষ্ট্রের জনগুরুত্বপূর্ণ একাধিক প্রতিষ্ঠানকে লক্ষ্যবস্তু বানিয়েছিল চীনের একটি হ্যাকার গ্রুপ। তবে গ্রুপটির প্রচেষ্টা নস্যাৎ করে দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। এফবিআই বলেছে, যুক্তরাষ্ট্রের বিদ্যুৎ সঞ্চালনব্যবস্থা এবং পানি সরবরাহ লাইনের নেটওয়ার্ককে লক্ষ্যবস্তু বানানো হয়েছিল।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি এক প্রতিবেদনে খবরটি দিয়েছে। বলা হয়েছে, ভোল্ট টাইফুন নামের হ্যাকার গ্রুপটিকে চীনে রাষ্ট্রীয়ভাবে পৃষ্ঠপোষকতা করা হয়।
এফবিআইয়ের পরিচালক ক্রিস্টোফার রে হ্যাকার গ্রুপটিকে নিষিদ্ধ করতে আইনপ্রণেতাদের বলেছেন। তিনি অভিযোগ করে বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের সম্পদের তথ্যের নাগাল পেতে হ্যাকার গ্রুপটি শত শত পুরোনো অফিসের রাউটার হ্যাক করেছে।
চীন সরকার অবশ্য অভিযোগটি সম্পর্কে কোনো প্রতিক্রিয়া জানায়নি। এর আগেও অবশ্য অন্যান্য দেশের বিরুদ্ধে চীনের রাষ্ট্রীয় হ্যাকার গ্রুপের সাইবার যুদ্ধের অভিযোগ অস্বীকার করেছিল বেইজিং। উল্টো যুক্তরাষ্ট্রকে ‘বিশ্বের বৃহত্তম হ্যাকিং সাম্রাজ্য’ এবং ‘বৈশ্বিক সাইবার চোর’ বলেও অভিযুক্ত করেছে চীন।
গতকাল বুধবার মার্কিন কংগ্রেসের একটি কমিটিকে এফবিআইয়ের পরিচালক বলেন, চীন ইচ্ছাকৃতভাবে সংঘাতের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রের মূল অবকাঠামো ব্যবস্থাকে পঙ্গু করতে চাইছে।
এফবিআই বলেছে, হ্যাকার গ্রুপটি পানি সরবরাহব্যবস্থা, বিদ্যুৎ সঞ্চালনব্যবস্থা, পরিবহনব্যবস্থা, তেল এবং গ্যাস পাইপলাইনের পাশাপাশি টেলিকমিউনিকেশন নেটওয়ার্কসহ দেশের গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামোগুলোকে আক্রমণ করার চেষ্টা করছে। ক্রিস্টোফার রে বলেন, হ্যাকার গ্রুপটি ম্যালওয়্যার বা ভাইরাস স্থাপন করে এসব অবকাঠামোগত সম্পদের সঙ্গে যুক্ত শত শত পুরোনো রাউটারের দখল নিতে পেরেছে।
যুক্তরাষ্ট্র-চীন প্রতিযোগিতা সম্পর্কিত মার্কিন কংগ্রেসনাল কমিটিকে তিনি বলেছেন যে, ভোল্ট টাইফুনের বসানো এসব ম্যালওয়্যার বা ভাইরাসের মাধ্যমে চীন লুকিয়ে থেকে গুরুত্বপূর্ণ এসব প্রতিষ্ঠানের তথ্য পর্যবেক্ষণ করতে পারছে। হ্যাকাররা বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকদের সত্যিকারের ক্ষতি করার প্রস্তুতি নিচ্ছে।
এফবিআই পরিচালক বলেন, চীন যদি সিদ্ধান্ত নেয় যে হামলার সময় হয়েছে, তবে তাদের মনোযোগ কেবল রাজনৈতিক বা সামরিক লক্ষ্যবস্তুতেই আটকে থাকবে না।
যুক্তরাষ্ট্রের সাইবার নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞরা অবশ্য এর আগেই চীনের সাইবার হামলার ব্যাপারে সতর্কতা জানিয়ে আসছে। বুধবার কংগ্রেসনাল কমিটির চেয়ারম্যান বলেন, চীনের হ্যাকারদের এই কাজ যুক্তরাষ্ট্রের সেতু এবং বিদ্যুৎকেন্দ্রে বোমা রাখার সমতুল্য।
ক্রিস্টোফার রে চীনের দিক থেকে সাইবার যুদ্ধের হুমকি কতটা বড় তা বিশদভাবে তুলে ধরে বলেন, অন্যান্য সব বড় জাতির সম্মিলিত শক্তির চেয়েও বড় চীনের হ্যাকিং প্রোগ্রাম। এফবিআইয়ের সাইবার এজেন্টদের তুলনায় চীনা হ্যাকারদের সংখ্যা ৫০ গুণ বেশি।