হোম > বিশ্ব > যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডা

যুক্তরাষ্ট্রে বাড়ির মূল্যবৃদ্ধির গুমর ফাঁস করল লস অ্যাঞ্জেলেসের দাবানল

অনলাইন ডেস্ক

আপডেট: ১১ জানুয়ারি ২০২৫, ০০: ০২
গতকাল বৃহস্পতিবার যুক্তরাষ্ট্রের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর লস অ্যাঞ্জেলেসে ছড়িয়ে পড়ে দাবানল। ছবি: সংগৃহীত

যুক্তরাষ্ট্রের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর লস অ্যাঞ্জেলেসে ছড়িয়ে পড়া আগুনে প্রাণ হারিয়েছেন পাঁচজন। ঘরছাড়া হয়েছেন ১ লাখের বেশি মানুষ। ক্ষতির প্রাথমিক পরিমাণ ৫০ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে যাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তবে এ ধ্বংসযজ্ঞ শুধু লস অ্যাঞ্জেলেসের স্থানীয় সমস্যা নয়, এটি পুরো যুক্তরাষ্ট্রের আবাসন বাজার এবং জলবায়ু পরিবর্তনের বাস্তবতাকে নতুন করে সামনে নিয়ে আসছে।

ব্রিটিশ সংবাদ সংস্থা রয়টার্স এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, ক্যালিফোর্নিয়ায় খরা, প্রবল বাতাস এবং পানির সংকটের সমস্যা দীর্ঘদিনের। তবে এর প্রকোপ গত এক দশকে ব্যাপকভাবে বেড়েছে। অঙ্গরাজ্যের বন ও অগ্নি সুরক্ষা বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, ১৯৩২ সালের পর থেকে ক্যালিফোর্নিয়ার ১০টি বৃহত্তম দাবানলের মধ্যে ৯টি ঘটেছে গত দশকে। এর আর্থিক প্রভাবও বড় ধরনের, যেমন ২০১৯ সালে জাতীয় বৃহত্তম বিদ্যুৎ সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান পিজি অ্যান্ড ইর দেউলিয়া হয়ে যাওয়া।

আবহাওয়া পূর্বাভাস সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান অ্যাকুওয়েদার জানিয়েছে, সর্বশেষ দাবানলে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ ৫০ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে যেতে পারে।

এই দাবানল কেবল সাধারণ মানুষের নয়, ধনীদের এলাকায়ও আঘাত হেনেছে। প্যারিস হিলটন ও বিলি ক্রিস্টালের মতো তারকাদের বাড়ি পুড়ে যাওয়ায় জলবায়ু পরিবর্তনের হুমকির বিষয়টি সামনে এসেছে। লুইজিয়ানার দরিদ্র অঞ্চলগুলোর হারিকেন তুলনামূলক কম গুরুত্ব পেলেও লস অ্যাঞ্জেলেসের ঘটনায় মাথা ধরেছে অনেকের।

বিমা কোম্পানিগুলো ঝুঁকির হিসাব বুঝতে পেরেছে। ঝুঁকি বিবেচনায় আনতে না পারায় অনেক কোম্পানি ক্যালিফোর্নিয়া থেকে সরে গেছে। স্টেট ফার্মের তথ্যমতে, ১২টি শীর্ষ বিমাদাতা কোম্পানি আবাসিক বিমার ৮৫ শতাংশ বাজার ধরে রেখেছে। এর মধ্যে সাতটি ২০২২ সালের পর থেকে নতুন বিমা প্রদান বন্ধ বা সীমিত করেছে। অঙ্গরাজ্যের বিমাদাতা কোম্পানিগুলোর ঝুঁকি গত সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বছরে ৬১ শতাংশ বেড়েছে।

নতুন ক্যালিফোর্নিয়ার নিয়ম অনুযায়ী, বিমাদাতাদের ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় ন্যূনতম একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ বিমা দিতে হবে। এর বিনিময়ে কোম্পানিগুলো ভবিষ্যৎ ঝুঁকি মডেল এবং পুনর্বিমা খরচ অনুযায়ী ইনস্যুরেন্স প্রিমিয়াম বাড়াতে পারবে। যেমন বিমা কোম্পানি অলস্টেট গত বছর তাদের প্রিমিয়াম ৩৪ শতাংশ বাড়িয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রে গত এক দশকে বাড়ির মূল্যবৃদ্ধির সূচক। ছবি: সংগৃহীত

রিয়েল এস্টেট পোর্টাল রেডফিন জানিয়েছে, এতে বাড়ির দামে বড় প্রভাব পড়বে। ধরা যাক, ক্যালিফোর্নিয়ার একটি বাড়ির দাম ১০ লাখ ডলার এবং তার বিমা খরচ বছরে ৫ হাজার ডলার। যদি ইনস্যুরেন্স প্রিমিয়াম দ্বিগুণ হয়, তাহলে বাড়িটির মূল্য ৭ শতাংশ কমে যাবে। ঝুঁকিপূর্ণ এলাকার বাড়িগুলোর দাম আরও বেশি পড়বে, বিশেষত যদি তারা এমন বিমা না পায়, যা বন্ধকি ঋণের জন্য প্রয়োজন। স্টেট ফার্ম গত বছর প্যাসিফিক প্যালিসেডসের বেশির ভাগ বিমা বাতিল করেছে, যেখানে বাড়ির গড় বিক্রিমূল্য ১৬ শতাংশ কমে গেছে।

এটি শুধু হলিউডের গল্প নয়, পুরো যুক্তরাষ্ট্রেই গড় বাড়ির দাম ৫০ শতাংশ বেড়েছে। কিন্তু শক্তিশালী হারিকেন, বজ্রঝড় ও বন্যার মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগ বাড়ছে। লস অ্যাঞ্জেলেসের দাবানল নিয়ন্ত্রণে এলে এ কঠিন বাস্তবতা পুরো দেশে ছড়িয়ে পড়বে।

লস অ্যাঞ্জেলেস কাউন্টিতে ছয়টি দাবানল একসঙ্গে জ্বলছে, এগুলোর মধ্যে প্যাসিফিক প্যালিসেডস এলাকায় ১৭ হাজার একরের বেশি জমি পুড়েছে। এতে পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে এবং ১ লাখ মানুষ ঘর ছাড়তে বাধ্য হয়েছে। মাসব্যাপী খরার কারণে শুষ্ক ভূমিতে ঝোড়ো বাতাসের তীব্রতায় আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়েছে।

স্থানীয় সময় ৯ জানুয়ারি সকাল ৬টায় ক্যালিফোর্নিয়া বন ও অগ্নি সুরক্ষা বিভাগ জানায়, তিনটি দাবানল এখনো নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়নি।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম, সংবাদমাধ্যম বা যেকোনো মাধ্যমে প্রচারিত কোনো ছবি, ভিডিও বা তথ্য বিভ্রান্তিকর মনে হলে তার স্ক্রিনশট বা লিংক কিংবা সে সম্পর্কিত বিস্তারিত তথ্য আমাদের ই-মেইল করুন। আমাদের ই-মেইল ঠিকানা factcheck@ajkerpatrika.com

পর্নো তারকাকে ঘুষের মামলায় দোষী সাব্যস্ত ট্রাম্প, পেলেন বিরল দণ্ড

স্বপ্নে পাওয়া নম্বরে লটারি জিতলেন মার্কিন নারী

নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা দেওয়ায় মার্কিন নিষেধাজ্ঞার কবলে আইসিসি