অনলাইন ডেস্ক
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেছেন, ডোনাল্ড ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর রাশিয়ার সঙ্গে যুদ্ধ দ্রুত শেষ হবে। জেলেনস্কি জানান, প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পর ট্রাম্পের সঙ্গে যুদ্ধ বন্ধের বিষয়ে ‘গঠনমূলক আলোচনা’ হয়েছে। তবে যুদ্ধ বন্ধের বিষয়ে ট্রাম্প রাশিয়ার সঙ্গে আলোচনা করবেন কি না, তা তিনি উল্লেখ করেননি। বৃটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি এ তথ্য জানিয়েছে ।
নির্বাচনী প্রচারণায় ট্রাম্প সব সময় বলেছেন, তাঁর অগ্রাধিকার হলো যুদ্ধ বন্ধ করা ও ইউক্রেনে সামরিক সহায়তার নামে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পদের ‘অপচয়’ বন্ধ করা।
ইউক্রেনের গণমাধ্যম সাসপিলনকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে জেলেনস্কি বলেন, ‘হোয়াইট হাউসের নতুন নেতৃবৃন্দের দৃষ্টিভঙ্গি ও তাদের প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী দ্রুত যুদ্ধ শেষ হবে।’
তিনি আরও বলেন, আগামী বছরের মধ্যে কূটনৈতিক উপায়ে যুদ্ধ শেষ করতে ইউক্রেন সবকিছু করবে।
রাশিয়ার বাহিনী আরও আগ্রাসী হচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, যুদ্ধক্ষেত্রের পরিস্থিতি খুব কঠিন। জানুয়ারিতে ট্রাম্পের অভিষেকের পরই তিনি ট্রাম্পের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন।
ট্রাম্প ও জেলেনস্কির সম্পর্ক বরাবরই টালমাটাল। অভিযোগ আছে, ২০১৯ সালে বাইডেন পরিবারের তথ্য খুঁজে বের করার জন্য জেলেনস্কিকে চাপ দিয়েছিলেন ট্রাম্প।
তবে ট্রাম্প জোর দাবি করেছেন, তার ও জেলেনস্কির মধ্যে খুব ভালো সম্পর্ক রয়েছে। সেপ্টেম্বরে নিউইয়র্কে দুজনের সাক্ষাতের পর ট্রাম্প বলেছিলেন, তিনি জেলেনস্কির কাছে ‘অনেক কিছু শিখেছেন’ এবং তিনি যুদ্ধ বন্ধের ‘দ্রুত সমাধান’ বের করবেন। তবে তিনি কীভাবে যুদ্ধ বন্ধ করবেন, তা এখনো প্রকাশ করেননি।
তবে ট্রাম্পের ডেমোক্রেটিক প্রতিদ্বন্দ্বীরা বলেন, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে ট্রাম্পের মধুর সম্পর্ক, যা যুদ্ধ সম্পর্কিত নীতিতে ইউক্রেনের জন্য আত্মসমর্পণের সমান। আর ট্রাম্প-পুতিনের এমন অবস্থান পুরো ইউরোপকে বিপদে ফেলবে।
জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শলজ ট্রাম্পের জয়ের পর তার সঙ্গে কথা বলেছিলেন। তিনি জার্মান গণমাধ্যমকে বলেন, নতুন মার্কিন প্রেসিডেন্ট যুদ্ধ সম্পর্কে তাদের অবস্থান ‘আরও সূক্ষ্ম’ করবে।
চ্যান্সেলর ওলাফ শলজ ‘সাউথ জার্মান’ পত্রিকাকে বলেন, ট্রাম্পের সঙ্গে ফোনালাপ ‘হয়তো বিস্ময়কর তবে বিস্তারিত এবং ভালো আলোচনা’
হয়েছে।
এই বছরের শুরুর দিকে, যুক্তরাষ্ট্রের হাউস অব রিপ্রেজেনটেটিভ ৬ হাজার ১০০ কোটি ডলার সহায়তার অনুমোদন দেয়, যাতে ইউক্রেন রাশিয়ার আগ্রাসনের বিরুদ্ধে লড়াই জারি রাখে।
জার্মান গবেষণা সংস্থা কিয়েল ইনস্টিটিউট ফর দ্য ওয়ার্ল্ড ইকোনমির দেওয়া তথ্য মতে, যুক্তরাষ্ট্র ইউক্রেনের সবচেয়ে বড় অস্ত্র সরবরাহকারী। ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে ২০২৪ সালের জুনের শেষ পর্যন্ত তারা ইউক্রেনকে ৫ হাজার ৫৫০ কোটি ডলার মূল্যের অস্ত্র ও সরঞ্জাম সরবরাহ করেছে।