অনলাইন ডেস্ক
লস অ্যাঞ্জেলেসের উত্তরাঞ্চলে নতুন করে দাবানল ছড়িয়ে পড়েছে। গতকাল বুধবার লস অ্যাঞ্জেলেস থেকে প্রায় ৩৫ মাইল (৫৬ কিলোমিটার) উত্তরে সান্তা ক্লারিটা শহরের কাছে অবস্থিত ক্যাস্টেইক লেকের আশপাশের পাহাড়গুলোতে আগুন ছড়িয়ে পড়ে। মাত্র কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই ৯ হাজার একর এলাকা আগুনে পুড়ে যায়। লেকের চারপাশের ৩১ হাজার বাসিন্দাকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।
আজ বৃহস্পতিবার এএফপির এক প্রতিবেদনে জানা যায়, নতুন দাবানল ‘হিউজ ফায়ার’ তীব্র বাতাসের কারণে দ্রুত ছড়িয়ে পড়েছে। সান্তা অ্যানা বাতাসের কারণে আগুনের শিখা থেকে ধোঁয়া ও ফুলকি ছড়িয়ে যাচ্ছে।
দাবানলে ক্ষতিগ্রস্ত অঞ্চল থেকে অবিলম্বে সরে যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন লস অ্যাঞ্জেলস কাউন্টি শেরিফ ডিপার্টমেন্টের রবার্ট জেনসেন। বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে মানুষকে সরে যাওয়ার জন্য অনুরোধ করছে পুলিশ।
শেরিফ বলেন, ‘আমরা প্যালিসেডস ও ইটন দাবানলে নির্দেশ না মানায় মানুষের পরিণতি দেখেছি। আমি চাই না, আমাদের এই এলাকায় একই ঘটনা ঘটুক। যদি আপনাদের সরিয়ে নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়, দয়া করে দ্রুত এলাকা ছাড়ুন।’
লস অ্যাঞ্জেলস কাউন্টি শেরিফ রবার্ট লুনা বলেন, ক্যাস্টেইকের পিচেস ডিটেনশন সেন্টারকে সরিয়ে নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে এবং প্রায় ৫০০ বন্দীকে পাশের একটি প্রতিষ্ঠানে স্থানান্তর করা হচ্ছে। এলাকায় অন্যান্য কারাগারে থাকা আরও প্রায় ৪ হাজার ৬০০ বন্দী রয়েছেন। পরিস্থিতির অবনতি হলে তাদের সরিয়ে নিতে বাস প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
ক্যালিফোর্নিয়া হাইওয়ে প্যাট্রোল জানিয়েছে, আগুনের কারণে আইফাইভ ফ্রিওয়ের একটি অংশে যান চলাচল বিঘ্নিত হয়েছে। এই ফ্রিওয়ে যুক্তরাষ্ট্রের পশ্চিম উপকূল ধরে বিস্তৃত।
আগুন নেভাতে হেলিকপ্টার ও বিমান দিয়ে পানি ও অগ্নিনির্বাপক পদার্থ ফেলা হচ্ছে। লস অ্যাঞ্জেলেস কাউন্টি ফায়ার ডিপার্টমেন্ট এবং অ্যাংলেস ন্যাশনাল ফরেস্টের উদ্ধারকারী দলও আগুন নেভানোর চেষ্টা করছে।
ক্যালিফোর্নিয়া গভর্নর গ্যাভিন নিউসম কর্মকর্তাদের দ্রুত পদক্ষেপ নিতে নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি বলেন, অঙ্গরাজ্যের সব সুবিধা অ্যাংলেস ন্যাশনাল ফরেস্টের হিউজ ফায়ারে নামানো হয়েছে। আমরা পরিস্থিতি ঘনিষ্ঠভাবে পর্যবেক্ষণ করব। আগুন নেভাতে যা যা দরকার, করা হচ্ছে।
লস অ্যাঞ্জেলেসের ইতিহাসে সবচেয়ে ভয়াবহ দাবানলে পুড়ে ছাই হয়েছে ১২ হাজার ঘর-বাড়ি ও স্থাপনা। মৃত্যু হয়েছে ২৮ জনের। বাতাস কমতে থাকায় ১০ দিনের বেশি সময় ধরে চলা আগুনের তাণ্ডব নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়েছিল। নিজ বাড়ির সন্ধানে ফিরতে শুরু করেছিলেন শহরটির বাসিন্দারা। কিন্তু এর মধ্যেই আবারও দাবানলের সূত্রপাত হলো।
নতুন করে আগুন লাগার সঠিক কারণ তাৎক্ষণিকভাবে জানা যায়নি। আবহাওয়াবিদদের মতে, শক্তিশালী বাতাস ও কম আর্দ্রতার কারণে দ্রুত আগুন ছড়িয়ে পড়ার পরিবেশ তৈরি হয়েছে।