হোম > বিশ্ব > যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডা

পল কাপুরকে নিয়ে ভারতীয় গণমাধ্যমে এত আগ্রহ কেন, কে তিনি?

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়া বিষয়ক সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে মনোনীত হয়েছেন ভারত-পাকিস্তান নিরাপত্তা ও পরমাণু ইস্যু বিশেষজ্ঞ পল কাপুর। ছবি: সংগৃহীত

যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ এশিয়াবিষয়ক সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী পদে এস. পল কাপুরকে মনোনীত করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনি বাংলাদেশ, ভারত ও পাকিস্তানে বেশ আলোচিত-সমালোচিত সাকেত বাইডেন প্রশাসনের কূটনীতিক ডোনাল্ড লুর স্থলাভিষিক্ত হবেন। পল কাপুর অধ্যাপনার সঙ্গে যুক্ত এবং তিনি একজন নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞ। ভারতীয় গণমাধ্যমে তাকে নিয়ে বিশেষ আগ্রহ দেখা যাচ্ছে বেশ কয়েকদিন ধরে।

এর কাপুর ভারতীয় বংশোদ্ভূত এবং দক্ষিণ এশীয় নিরাপত্তা ও কৌশলগত বিষয়ে তাঁর গভীর জ্ঞান সুবিদিত। বিশেষ করে ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক নিয়ে তার বিশ্লেষণ বেশি আগ্রহের কারণ। পাকিস্তানের কায়েমী স্বার্থগোষ্ঠীর ইসলামী জঙ্গিবাদী রাজনীতি ও কৌশলের উপর নির্ভরতার কড়া সমালোচক তিনি। এসব বিষয়ে একাধিক পুস্তক লিখেছেন তিনি।

পল কাপুর শিকাগো বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি এবং অ্যামহার্স্ট কলেজ থেকে ব্যাচেলর অব আর্টস ডিগ্রি অর্জন করেছেন। তিনি যুক্তরাষ্ট্রের নেভাল পোস্টগ্র্যাজুয়েট স্কুলের জাতীয় নিরাপত্তা বিষয়ক বিভাগের অধ্যাপক এবং স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের হুভার ইনস্টিটিউশনের ভিজিটিং ফেলো হিসেবে কর্মরত।

২০২০ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত তিনি মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের নীতি পরিকল্পনা স্টাফের সদস্য ছিলেন। সেখানে দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়া, ইন্দো-প্যাসিফিক কৌশল এবং যুক্তরাষ্ট্র-ভারত সম্পর্কের ওপর কাজ করেছেন। এর আগে তিনি ক্লেয়ারমন্ট ম্যাককেনা কলেজে অধ্যাপনা করেছেন এবং স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে ভিজিটিং প্রফেসর হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।

পল কাপুর দক্ষিণ এশিয়ার নিরাপত্তা, পারমাণবিক অস্ত্র বিস্তার এবং আন্তর্জাতিক সম্পর্ক নিয়ে বিস্তৃত গবেষণা করছেন। তাঁর উল্লেখযোগ্য প্রকাশনাগুলোর মধ্যে সবচেয়ে আলোচিত প্রকাশনা ‘জিহাদ অ্যাজ গ্রান্ড স্ট্রাটেজি: ইসলামিস্ট মিলিট্যান্সি, ন্যাশনাল সিকিউরিটি, অ্যান্ড পাকিস্তানি স্টেট’ (Jihad as Grand Strategy: Islamist Militancy, National Security, and the Pakistani State)।

ভারতের বিরুদ্ধে কৌশলগত হাতিয়ার হিসেবে এবং আফগানিস্তানে প্রভাব বিস্তারের জন্য পাকিস্তান ইচ্ছাকৃতভাবে ইসলামি জঙ্গিবাদকে ব্যবহার করছে বলে এই বইতে তুলে ধরেছেন কাপুর। তিনি বলেন, এটি রাষ্ট্রের দুর্বলতার চিহ্ন নয়, বরং সুপরিকল্পিত কৌশল।

আর ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে পারমাণবিক অস্ত্রের বিস্তার এবং তার প্রভাব নিয়ে বিশ্লেষণ করেছেন ‘ডেঞ্জেরাস ডিটারেন্ট: নিউক্লিয়ার উইপন্স প্রলিফারেশন অ্যান্ড কনফ্লিক্ট ইন সাউথ এশিয়া’ শীর্ষক প্রকাশানায়। এছাড়া ‘ইন্ডিয়া, পাকিস্তান অ্যান্ড দ্য বোম: ডিবেটিং নিউক্লিয়ার স্ট্যাবিলিটি ইন সাউথ এশিয়া’ শীর্ষক বইয়ের সহ-লেখক তিনি। এতে দক্ষিণ এশিয়ায় পারমাণবিক স্থিতিশীলতা নিয়ে বিতর্ক ও বিশ্লেষণ তুলে ধরা হয়েছে। তার গবেষণা আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা বিষয়ক গুরুত্বপূর্ণ জার্নালে প্রকাশিত হয়।

ভারত-পাকিস্তানসহ দক্ষিণ এশিয়ার বিষয়ে কাপুরের দৃষ্টিভঙ্গি

কাপুর মনে করেন, ভারতের বিরুদ্ধে সরাসরি যুদ্ধের বিকল্প ও সাশ্রয়ী কৌশল হিসেবে পাকিস্তানের সামরিক ও গোয়েন্দা সংস্থাগুলো জঙ্গি গোষ্ঠীগুলোকে সমর্থন করেছে। এই কৌশল বিপজ্জনক, কারণ এই গোষ্ঠীগুলো স্বাধীন হয়ে পাকিস্তানের জন্যই হুমকি হয়ে উঠতে পারে।

চিরাচরিত মার্কিন কৌশল হিসেবে কাপুরও চীনের ক্রমবর্ধমান প্রভাব মোকাবিলায় ভারতকে যুক্তরাষ্ট্রের জন্য গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার হিসেবে দেখেন। যুক্তরাষ্ট্র-ভারত কৌশলগত সহযোগিতার ওপর জোর দেন তিনি। তবে সম্পর্কের গভীরতা বাড়াতে উভয় পক্ষের প্রত্যাশা ও মতপার্থক্যগুলো সঠিক দিশায় পরিচালিত করার উপর জোর দেন তিনি।

পল কাপুরের নিয়োগ ভারতীয় গণমাধ্যমে ব্যাপকভাবে আলোচিত হয়েছে। ভারতীয় বিশ্লেষকরা আশা করছেন, পাকিস্তান সম্পর্কিত সমালোচনামূলক দৃষ্টিভঙ্গি এবং ভারত-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্কের ওপর জোর দেওয়ার কারণে তাঁর নিয়োগ দুই দেশের সম্পর্ক আরও মজবুত করবে এবং পাকিস্তানের প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের নীতি আরও কঠোর হবে।

কাপুরের নিয়োগে যুক্তরাষ্ট্রের ভারতকেন্দ্রিক নীতি আরও জোরদার হতে পারে। তাঁর গবেষণা এবং পূর্ববর্তী বিশ্লেষণের ভিত্তিতে অনুমান করা যায়, যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রনীতিতে পাকিস্তানের ভূমিকা নিয়ে নতুন করে মূল্যায়ন করা হতে পারে। চীনের বিরুদ্ধে কৌশলগত ভারসাম্য রক্ষার জন্য ভারতকে আরও শক্তিশালী মিত্র হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে কাপুর বিশেষ ভূমিকা রাখতে পারেন।

ট্রাম্পকে তরুণদের ‘রোল মডেল’ বললেন এক সময়ের ঘোর বিরোধী নিকি মিনাজ

ধনী খদ্দেরদের জন্য কিশোরীদের যেভাবে বাছাই করতেন এপস্টেইন—উঠে এল এফবিআইয়ের তদন্তে

বিল ক্লিনটনকে ‘বলির পাঁঠা’ বানানোর অভিযোগ ট্রাম্পের বিরুদ্ধে

মার্কিন সরকারি ওয়েবসাইট থেকে ট্রাম্পের ছবিসহ ১৬ এপস্টেইন নথি গায়েব

যুক্তরাষ্ট্র ছাড়ার কথা ভাবছেন আতঙ্কিত শিক্ষকেরা

জনপ্রিয়তায় ধস: জাতির উদ্দেশে ভাষণে নিজের গুণগান আর সেনাদের খুশি রাখার কৌশলে ট্রাম্প

ভেনেজুয়েলার তেল আমাদের সম্পদ, বললেন ট্রাম্পের শীর্ষ সহযোগী

মাস্ক ‘মাদকসেবী’, ভাইস প্রেসিডেন্ট ‘ষড়যন্ত্রতাত্ত্বিক’: হোয়াইট হাউসের চিফ অব স্টাফ

ফিলিস্তিনসহ আরও যে ৬ দেশের নাগরিকদের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিল যুক্তরাষ্ট্র

ট্রাম্পের ১০ বিলিয়ন ডলার ক্ষতিপূরণ মামলা প্রতিহতের ঘোষণা দিল বিবিসি