গাজায় ইসরায়েলি হামলা এবং এই যুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের ভূমিকার প্রতিবাদ হিসেবে দেশটির দূতাবাসের সামনে নিজ শরীরে আগুন দেন মার্কিন সেনা অ্যারন বুশনেল। আগুন দেওয়ার কয়েক ঘণ্টা পর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান ২৫ বছর বয়সী মার্কিন বিমানবাহিনীর এই সদস্য।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ওই লোকের গায়ে আগুন দেওয়ার একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। বুশনেল নিজেই ওই ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সরাসরি সম্প্রচার করেন। ভাইরাল ওই ভিডিওর বরাত দিয়ে মার্কিন সংবাদমাধ্যম নিউইয়র্ক টাইমসের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গায়ে আগুন দেওয়ার আগে তিনি চিৎকার করে বলেন, ‘আমি আর গণহত্যার সঙ্গে জড়িত থাকব না, থাকতে চাই না।’ পরে তিনি নিজের গায়ে তরল জ্বালানি ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেন।
গায়ে আগুন ধরে যাওয়ার পরও বুশনেল চিৎকার করে ‘ফ্রি প্যালেস্টাইন’ বা ‘ফিলিস্তিনের স্বাধীনতা চাই’ বলছিলেন। স্থানীয় পুলিশ ঘটনাটি তদন্ত করছে। এর আগে, গত ডিসেম্বরেও আটলান্টায় ইসরায়েলি কনস্যুলেটের সামনে এক প্রতিবাদকারী নিজের গায়ে আগুন ধরিয়ে দেন।
অ্যারন বুশনেল টেক্সাসের সান অ্যান্টোনিওর বাসিন্দা। ২৫ বছর বয়সী এই তরুণ বিমান সেনা লিংকডইন আইডিতে নিজেকে ‘একজন উদীয়মান সফটওয়্যার প্রকৌশলী’ হিসেবে উল্লেখ করেছেন। তিনি ২০২০ সালের মে মাস থেকে মার্কিন বিমানবাহিনীতে মৃত্যুর আগ পর্যন্ত কর্মরত ছিলেন।
বুশনেল ম্যাসাচুসেটস অঙ্গরাজ্যের নওসেটস পাবলিক স্কুলের সাবেক শিক্ষার্থী। এ ছাড়া তিনি ম্যাসাচুসেটসের একটি বিশ্ববিদ্যালয়েও পড়াশোনা করেছেন। অ্যারনের মৃত্যুতে তাঁর স্কুলের কর্তৃপক্ষ এক বিবৃতিতে শোক প্রকাশ করেছে। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘আমাদের সাবেক শিক্ষার্থী অ্যারন বুশনেলের অকালমৃত্যুর খবরে আমাদের হৃদয় ভেঙে গেছে।’
স্কুলের বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, ‘বুশনেল ২০০৩-২০০৭ ও ২০১৩-২০১৪ সাল পর্যন্ত নওসেট পাবলিক স্কুলে পড়ালেখা করেছে। আমাদের স্কুল কমিউনিটি বুশনেলের মৃত্যুতে শোকাহত ও আমরা তার পরিবার ও বন্ধুদের প্রতি সমবেদনা জানাচ্ছি।’
বুশনেলের বন্ধু ও সহকর্মী টালিয়া জেন জানিয়েছেন, বুশনেল বিমানবাহিনীতে সবচেয়ে দয়ালু, ভদ্র ও রসিক মানুষ হিসেবে পরিচিত ছিলেন। তবে মার্কিন প্রতিরক্ষা বিভাগ পেন্টাগন জানিয়েছে, বুশনেলের মৃত্যুর বিষয়টি ‘মর্মান্তিক’ কিন্তু ইসরায়েলের প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থন ‘ইস্পাতদৃঢ়’।