হোম > বিশ্ব > যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডা

ট্রুডোর পতন ও বিশ্বের অন্যখানেও রাজনৈতিক পরিবর্তনের মূলে কারণ একই

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ০৭ জানুয়ারি ২০২৫, ০০: ৩০
আপডেট: ০৭ জানুয়ারি ২০২৫, ০০: ৩০
কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো। ছবি: এএফপি

কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছেন। কয়েক মাস ধরে যেভাবে ঘনিষ্ঠ মন্ত্রীরা পাশ থেকে সরে যাচ্ছিলেন, তাতে ট্রুডোর পদত্যাগ প্রত্যাশিতই ছিল।

কানাডায় টানা প্রায় ১০ বছর প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্বে থাকা ট্রুডোর এই পরিণতির পেছনে মূল ভূমিকা রেখেছে ভঙ্গুর অর্থনীতি। বিশেষ করে জীবনযাত্রার ব্যয় বেড়ে যাওয়ায় মানুষ ক্রমেই ট্রুডোর নীতির প্রতি ক্ষুব্ধ হয়ে উঠছিল। এর মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প কানাডার রপ্তানি পণ্যে বাড়তি শুল্ক আরোপের ঘোষণা দিয়েছেন। সম্ভাব্য এই মার্কিন নীতি মোকাবিলায় নীতি নির্ধারণ নিয়ে মন্ত্রিসভার সঙ্গে ট্রুডোর বিরোধ ক্রমেই বাড়ছিল। এর জেরে অন্তত দুজন ঘনিষ্ঠ সদস্য পদত্যাগ করেছেন।

এমন পরিস্থিতিতে ট্রুডোর লিবারেল পার্টি জনপ্রিয়তায় মধ্য ডানপন্থী কনজারভেটিভদের কাছে দারুণভাবে পিছিয়ে গেছে। বিরোধীরা ক্রমবর্ধমান দ্রব্যমূল্য এবং কানাডায় আবাসন ক্রয়ক্ষমতা হাতের নাগালের বাইরে যাওয়ার জন্য ট্রুডোকেই দায়ী করছে।

দুই বছর আগে সুদের হার বাড়তে শুরু করার পর থেকে অনেক কানাডীয়কে বাড়ি কিনতে নিরুৎসাহিত করা হয়েছে।

ট্রুডো গত বছরের দুটি বিশেষ নির্বাচনে ভোট এবং দলের নিরাপদ আসন হারানোর বিষয়ে উদ্বিগ্ন লিবারেল পার্টির সংসদ সদস্যদের সংশয় দূর করতে কিছুটা সক্ষম হয়েছিলেন।

কিন্তু গত মাস থেকে ট্রুডোকে দায়িত্ব ছেড়ে সরে দাঁড়ানোর পক্ষে সংসদ সদস্যদের অবস্থান জোরালো হয়েছে। বিশেষ করে যখন তাঁর ব্যয় বৃদ্ধির প্রস্তাবে আপত্তি জানানো অর্থমন্ত্রী ক্রিস্টিয়া ফ্রিল্যান্ডকে পদচ্যুত করার চেষ্টা করেছিলেন, তখন নিজ দলের ভেতর থেকেই চাপের মুখে পড়েন ট্রুডো।

অর্থমন্ত্রী পরে পদত্যাগ করেন। দেশের জন্য সবচেয়ে ভালো কী হতে পারে, সেদিকে মনোনিবেশ না করে ‘রাজনৈতিক কৌশল’-এ বেশি মনোযোগী ট্রুডোর বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ তুলে একটি চিঠি লিখেছিলেন তিনি। ফ্রিল্যান্ড ছিলেন ট্রুডোর মন্ত্রিসভার সবচেয়ে ঘনিষ্ঠ সহযোগী।

ট্রুডো গত মাসে আরেকটি মূল মিত্রের সমর্থনও হারিয়েছেন। ওই ঘটনা পার্লামেন্টে লিবারেল সরকারের পতনঘণ্টা বাজিয়ে দেয় এবং একটি আগাম নির্বাচনের পরিস্থিতি তৈরি করে।

নিউ ডেমোক্রেটিক পার্টির নেতা জগমিত সিং, যিনি ট্রুডোকে পার্লামেন্টে সরকার গঠনে সহায়তা করেছেন, তিনি ঘোষণা দিয়েছিলেন, শীতকালীন অবকাশ থেকে সংসদে ফিরে আসার পরে অনাস্থার একটি আনুষ্ঠানিক প্রস্তাব পেশ করবেন।

ট্রুডোর জনপ্রিয়তা কয়েক বছর আগে থেকেই কমতে শুরু করেছে। মূলত পণ্য ও সেবার উচ্চ মূল্য এবং আবাসন-সংকটের জন্য জনগণের ক্ষোভ বাড়ছিল। তিনি অনেক চেষ্টা করেও পরিস্থিতি নিজের অনুকূলে আনতে পারেননি।

তবে কানাডাই একমাত্র দেশ নয়, যা এই সমস্যাগুলোর সঙ্গে লড়াই করছে। সারা বিশ্বের কোথাও কোথাও কারণগুলো সরকার পরিবর্তনেও অবদান রেখেছে। যেমন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে জীবনযাপনের উচ্চ খরচের জন্য সাধারণ মানুষের মধ্যে অসন্তোষ ডোনাল্ড ট্রাম্পকে চার বছর পর দ্বিতীয় মেয়াদে প্রেসিডেন্ট হিসেবে জয়ী হতে সাহায্য করেছে।

মূল্যস্ফীতি থেকে মানুষের মধ্যে ক্ষমতাসীনবিরোধী মনোভাব গত বছর ব্রিটেন এবং বতসোয়ানা, পর্তুগাল এবং পানামাতে নতুন সরকার গঠনে ভূমিকা রেখেছে।

২০২৪ সালে বিশ্বের জনসংখ্যার প্রায় অর্ধেক দেশে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। সবখানেই জীবনযাত্রার ক্রমবর্ধমান ব্যয়, অতি ডানপন্থী দলগুলোর জন্য ক্রমবর্ধমান সমর্থন, জলবায়ু পরিবর্তন এবং জাতীয় ঋণ বৃদ্ধির মতো বিষয়গুলো নির্বাচনের ফলাফল নির্ধারণ করেছে।

অর্কা মায়ের দ্বিতীয়বার মৃত শাবক বহনে বিজ্ঞানীদের উদ্বেগ

জেটব্লু এয়ারলাইনসের বিমানে এবার পাওয়া গেল দুটি মরদেহ

বিনা অপরাধে গুয়ানতানামো বে-তে বন্দী ২০ বছর, মুক্তি পেলেন ১১ ইয়েমেনি

ট্রুডোর পদত্যাগ: এরপর কী ঘটবে, কে হবেন কানাডার নতুন প্রধানমন্ত্রী