অনলাইন ডেস্ক
যুক্তরাষ্ট্রের ফিলাডেলফিয়ায় ছয় নারীকে অপহরণের পর নিজের বাড়ির বেসমেন্টে আটকে রেখে যৌনদাসীতে পরিণত করা স্বঘোষিত বিশপ গ্যারি হেইডনিকের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছিল ১৯৯৯ সালের ৬ জুলাই। হেইডনিকের নির্যাতনের শিকার নারীদের সবাই ছিলেন কৃষ্ণাঙ্গ। তাঁদের মধ্যে একজন ছিলেন সান্দ্রা লিন্ডসে। তাঁরই বোন ট্র্যাসি লোম্যাক্স বহু বছর আগের সেই মামলার খুঁটিনাটি নিয়ে এবার কথা বলেছেন সিএনএনের সঙ্গে।
ট্র্যাসি লোম্যাক্স প্রকাশ করেছেন কীভাবে হেইডনিক অপহৃত নারীদের একটি স্যাঁতসেঁতে গর্তে আটকে রেখেছিলেন এবং ছয় নারীর মধ্যে ট্র্যাসির বোন লিন্ডসেসহ আরও একজনকে ধর্ষণ ও নির্মম নির্যাতনের পর হত্যা করেছিলেন। মৃত্যুর আগে লিন্ডসেকে দিনের পর দিন কোনো খাবার না দিয়ে অভুক্ত অবস্থায় এবং হ্যান্ডকাফ পরিয়ে রাখা হয়েছিল বলেও জানান ট্র্যাসি।
এখন পর্যন্ত হেইডনিকই ফিলাডেলফিয়ার সর্বশেষ ব্যক্তি, যাকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছিল। শিগগিরই প্রকাশ হতে যাওয়া পিপল ম্যাগাজিনের ‘সারভাইভিং অ্যা সিরিয়াল কিলার’ নামে একটি অ্যাপিসোডে হেইডনিকের অপরাধগুলোর চুলচেরা বিশ্লেষণ করা হয়েছে।
এ বিষয়ে দ্য পিপল জানিয়েছে, ১৯৮৬ সালে ফিলাডেলফিয়া শহরের উত্তর অংশে একটি সাদামাটা বাড়িতে বসবাস করতেন হেইডনিক। ভদ্রলোকের মতোই ছিল তাঁর চলাফেরা। যদিও এর আগে মানসিক অসুস্থতার লক্ষণ দেখা দিলে সেনাবাহিনী থেকে সম্মানজনকভাবে অবসর দেওয়া হয়েছিল তাঁকে।
সম্মানজনক অবসরের অংশ হিসেবে সরকারের কাছ থেকে বেশ কয়েকটি চেক পেয়েছিলেন হেইডনিক। পরে বুদ্ধিমত্তা খাঁটিয়ে স্টক মার্কেটে বিনিয়োগ করে সেই চেকগুলোকে মিলিয়ন ডলারে পরিণত করেছিলেন তিনি। তবে এই অর্থ দিয়ে দামি কোনো বাড়ি না কিনে তিনি ক্যাডিলাক এবং রোলস রয়েসের মতো দামি দুটি গাড়ি কিনেছিলেন। শুধু তা–ই নয়, একটি গির্জাও স্থাপন করেছিলেন এবং নিজেকে এর বিশপ নিযুক্ত করেছিলেন।
নারীদের অপহরণ ও ধর্ষণের পরিকল্পনা হেইডনিক কেন করেছিলেন সেই বিষয়টি প্রকাশ করেছেন তাঁর আইনজীবী চক পেরুটো। তিনি দাবি করেছেন, হেইডনিকের লক্ষ্য ছিল বেসমেন্ট আটকে রাখা নারীদের গর্ভবতী করে সাদা আর কালো মানুষের মিশ্রণে একটি নিখুঁত জাতি তৈরি করা। শ্বেতাঙ্গ হেইডনিক তাই কালো নারীদের শিকার করতেন।
বেসমেন্ট হেইডনিকের অত্যাচারে লিন্ডসে ছাড়াও ডুডলি নামে আরকে নারী মারা গিয়েছিলেন। আর চার মাস বন্দিদশায় থেকে সেখান থেকে পালিয়েছিলেন রিভেরা নামে আরেক নারী। তাঁর সহযোগিতায় পরে বাকি তিন নারীকে জীবিত উদ্ধার করা হয়। গ্রেপ্তার করা হয়েছিল হেইডনিককেও।