ইউরোপ ও মধ্যপ্রাচ্যে চলমান সংঘাতের মধ্যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রনীতি তুলে ধরতে গুরুত্বপূর্ণ ভাষণ নিয়ে আসছেন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। বাংলাদেশ সময় শুক্রবার ভোর ৬টায় ওভাল অফিস থেকে জাতির উদ্দেশে বিরল ভাষণ দেবেন তিনি।
হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি কারিন জ্যঁ-পিয়েরে এক বিবৃতিতে বলেন, ‘আগামীকাল (বৃহস্পতিবার) প্রেসিডেন্ট বাইডেন ইসরায়েলের বিরুদ্ধে হামাসের সন্ত্রাসী হামলা এবং ইউক্রেনের বিরুদ্ধে রাশিয়ার চলমান যুদ্ধের বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিক্রিয়া সম্পর্কে আলোচনা করতে জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেবেন। ওভাল অফিস থেকে রাত ৮টায় ভাষণটি সম্প্রচার করা হবে।’
হোয়াইট হাউসের অন্য জায়গা থেকে সাধারণত ভাষণ দিয়ে থাকেন প্রেসিডেন্ট বাইডেন। এর আগে শুধু ২ জুন ওভাল অফিস থেকে ভাষণ দেন তিনি। সেটা ছিল সরকারের ঋণসীমা নিয়ে।
বুধবার ইসরায়েল সফর করেছেন জো বাইডেন। গাজা উপত্যকায় মানবিক সংকট কমাতে ত্রাণসামগ্রী পৌঁছানোর ব্যাপারে সেই সফরে মিসরকে রাজি করিয়েছেন তিনি। ইসরায়েল থেকে ফেরার পথে তিনি জানান, মিসর ও গাজা সীমান্তের রাফাহ ক্রসিং খুলে দিতে রাজি হয়েছে মিসর। শুক্রবারের মধ্যে গাজায় ত্রাণসামগ্রী পৌঁছানো শুরু হবে বলেও জানান বাইডেন।
ফিলিস্তিনি বেসামরিকদের সহায়তার জন্য মার্কিন তহবিল থেকে ১০ কোটি ডলার বরাদ্দ করা হবে বলেও জানান যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট। সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে জানিয়েছে, জো বাইডেন কংগ্রেসের কাছে ইসরায়েলের জন্য ১ হাজার কোটি ডলারের সাহায্য চাওয়ার কথাও বিবেচনা করছেন।
ইসরায়েল থেকে ফেরার আগে গণমাধ্যমকে তিনি বলেন, ‘আমি কিছু কাজ সম্পন্ন করতে এসেছিলাম। সেসব করেছি। গাজায় দ্রুততম সময়ে ত্রাণ পাঠানোর ব্যাপারে আমি দৃঢ়প্রতিজ্ঞ ছিলাম। আর এই কাজ সম্পন্ন করতে কোনো বাধার সম্মুখীন হইনি।’
বাইডেন সে সময় আরও বলেন, ‘খুব বেশি মানুষ ভাবেনি যে আমরা এই কাজ সম্পন্ন করতে পারব। আর ব্যর্থতার সঙ্গে নিজের নাম জড়াতে খুব বেশি মানুষ চায় না। তবে এই পর্যায়ে পৌঁছাতে দীর্ঘ আলোচনা করতে হয়েছে। কারণ আমি যদি ব্যর্থ হতাম, সবাই সেটাকে যুক্তরাষ্ট্রের ব্যর্থতা হিসেবেই দেখত। তারা বলত, বাইডেন প্রশাসন ব্যর্থ হয়েছে। আর সমালোচনাটাও হতো যৌক্তিক।’
ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠী হামাসের মধ্যকার যুদ্ধ গড়িয়েছে ১৩তম দিনে। এই কদিনে গাজায় ইসরায়েলি হামলায় অন্তত সাড়ে ৩ হাজার ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। আহত হয়েছে আরও অন্তত ১২ হাজার।
উল্লেখ্য, গত ৭ অক্টোবর সকালে ইসরায়েলে নজিরবিহীন হামলা শুরু করে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস। তারা মাত্র ২০ মিনিটের মধ্যে ইসরায়েলের দিকে ৫ হাজার ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ে। একই সঙ্গে স্থলপথ, জলপথ ও আকাশপথে দেশটিতে ঢুকে পড়েন হামাস যোদ্ধারা। ইসরায়েলও এমন পরিস্থিতিতে যুদ্ধ ঘোষণা করে হামাসের বিরুদ্ধে। এর পর থেকেই দফায় দফায় গাজায় বিমান, স্থল এমনকি নৌবাহিনীর জাহাজ থেকে হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল।