যুক্তরাষ্ট্রে আসন্ন মধ্যবর্তী নির্বাচনে কংগ্রেসের দুই কক্ষই ডেমোক্র্যাটদের হাতছাড়া হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। এ বিষয়ে হোয়াইট হাউস বেশ দুশ্চিন্তাগ্রস্ত বলে জানিয়েছেন মার্কিন প্রশাসনের কর্মকর্তারা।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে জানা যায়, কয়েক মাস আগের জনমত জরিপেও ডেমোক্র্যাটদের ভালো ব্যবধানেই এগিয়ে থাকতে দেখা যাচ্ছিল। কিন্তু উচ্চ মূল্যস্ফীতি, গর্ভপাত আইনের মতো বিষয়ে ভোটারদের বড় অংশ রিপাবলিকানদের সমর্থন দিচ্ছে বলে আগামী ৮ নভেম্বর নির্বাচন সামনে রেখে সাম্প্রতিক জনমত জরিপে এমনটা দেখা যায়।
বাইডেন ও তাঁর উপদেষ্টারা চলতি বছরের শুরুতেও মধ্যবর্তী নির্বাচনে নিম্নকক্ষ প্রতিনিধি পরিষদের দখল ডেমোক্র্যাটরা ধরে রাখতে পারবে বলে জানিয়েছিলেন। তবে এখন এই কক্ষের নিয়ন্ত্রণও রিপাবলিকানদের হাতে চলে যাওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে বলে জানাচ্ছেন একাধিক জনমত জরিপ বিশ্লেষক।
বিশ্লেষকদের মতে, কংগ্রেসের কোনো একটি কিংবা উভয় কক্ষের নিয়ন্ত্রণ হাতছাড়া হওয়ার মানে হচ্ছে জো বাইডেনকে তাঁর মেয়াদের শেষ দুই বছর বেশ চাপে থাকতে হবে। পারিবারিক ছুটি, গর্ভপাত, পুলিশে সংস্কারসহ যেসব ইস্যুতে বাইডেন অগ্রাধিকারভিত্তিতে আইন প্রণয়ন করতে চান, সেগুলো আটকে দিতে পারবে রিপাবলিকানরা। পাশাপাশি অভিবাসন ও ব্যয় কমানোর মতো আইন প্রণয়নে চাপ বাড়াতে পারবে বিরোধীরা।
রিপাবলিকানরা কংগ্রেসের নিয়ন্ত্রক হয়ে উঠলে তারা ডেমোক্র্যাটদের ব্যবসায়িক লেনদেন ও ব্যক্তিগত বিভিন্ন খাতে ব্যয় এমনকি প্রেসিডেন্ট বাইডেনের ছেলে হান্টারের জীবন নিয়েও তদন্তে নামবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
হোয়াইট হাউসের ভেতরকার পরিস্থিতি সম্পর্কে জানেন এমন একজন রয়টার্সকে বলেন, অনেক রিপাবলিকান আইনপ্রণেতা জো বাইডেন ও তাঁর মন্ত্রিসভার সদস্য কিংবা ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিসকে অভিশংসিত করার আশা করছেন।
তবে হোয়াইট হাউসের ভেতরে এখনো মধ্যবর্তী নির্বাচন নিয়ে যে যে হিসাবনিকাশ চলছে, সে অনুযায়ী সিনেটে ডেমোক্র্যাটদের নিয়ন্ত্রণ থাকার বিষয়ে ফিফটি-ফিফটি সম্ভাবনা রয়েছে। যদিও ডেমোক্র্যাটদের কপালে চিন্তার ভাঁজ সুস্পষ্ট।
সাম্প্রতিক প্রায় সব জরিপই বলছে, উচ্চ মূল্যস্ফীতি ভোটারদের অনেকের কাছেই ডেমোক্র্যাটদের অবস্থান দুর্বল করেছে। এ ছাড়া ক্ষমতাসীনরা বিচারব্যবস্থা ও পুলিশে সংস্কারের যে পদক্ষেপের কথা বলছে, অনেক এলাকাতেই রিপাবলিকানরা একে ডেমোক্র্যাটদের নমনীয়তা হিসেবে তুলে ধরছে।
এদিকে মধ্যবর্তী নির্বাচন সামনে রেখে ব্যাটলগ্রাউন্ড বিভিন্ন রাজ্যে প্রচারণায় জোর দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট বাইডেন। শিক্ষাঋণ মওকুফ, অর্থনীতি, অবকাঠামো ও গর্ভপাতের অধিকার নিয়ে নানা পরিকল্পনার কথা বলছেন তিনি।