মার্কিন প্রশাসন আগামী কয়েক দিনের মধ্যেই প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের গণ উচ্ছেদের প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন করতে একটি যুদ্ধকালীন ক্ষমতা প্রয়োগের পরিকল্পনা করছে। বিষয়টির সঙ্গে সম্পৃক্ত চারটি সূত্র এই তথ্য সিএনএনকে জানিয়েছে।
এর ফলে ১৭৯৮ সালের ‘এলিয়েন এনিমিজ অ্যাক্ট’ নামের একটি স্বল্পপরিচিত আইন প্রেসিডেন্টকে অনথিভুক্ত অভিবাসীদের লক্ষ্যবস্তু করার এবং তাদের বহিষ্কার করার বিশাল ক্ষমতা দেবে। তবে আইন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আদালতে এই আইনের ব্যবহার চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে পারে।
সিএনএন জানিয়েছে, ট্রাম্প প্রশাসনের কর্মকর্তারা বেশ কয়েকটি সংস্থার সঙ্গে আলোচনা করে আইনটি প্রয়োগের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। এই পদক্ষেপের প্রধান লক্ষ্য হিসেবে উপস্থাপন করা হচ্ছে, ‘ট্রেন দে আরাগুয়া’ নামে ভেনেজুয়েলার একটি সংগঠিত অপরাধী চক্রকে। এই গোষ্ঠী বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রসহ বিভিন্ন দেশে সক্রিয় এবং সম্প্রতি এটিকে একটি বিদেশি সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।
প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প তাঁর মেয়াদের শুরুতে এই গোষ্ঠীকে বিদেশি সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে ঘোষণা করতে নির্দেশ দিয়েছিলেন, যেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের দ্রুত দেশ থেকে বহিষ্কার করা যায়।
সরকারি কর্মকর্তারা এখনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে কাজ করছেন। তবে এই ঘোষণাটি শুক্রবারের মধ্যেই আসতে পারে বলে সূত্রগুলো জানিয়েছে।
এই আইনটি সাধারণত তখনই প্রয়োগ করা হয়, যখন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে কোনো দেশের যুদ্ধ চলছে বা কোনো বিদেশি শক্তি যুক্তরাষ্ট্রে আক্রমণ করেছে বা হুমকি দিয়েছে।
আইন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যুক্তরাষ্ট্র সরাসরি কোনো দেশের হামলার শিকার না হলে ট্রাম্পের জন্য এই আইন প্রয়োগ করা আইনি চ্যালেঞ্জের মুখে পড়বে। যদিও প্রশাসন অভিবাসী গ্যাং ও কার্টেল থেকে আসা হুমকিকে ভিত্তি হিসেবে দেখাতে পারে।
‘এলিয়েন এনিমিজ অ্যাক্ট’ মার্কিন ইতিহাসে মাত্র তিনবার প্রয়োগ করা হয়েছে এবং প্রতিবারই যুদ্ধকালীন সময়ে। প্রথম বিশ্বযুদ্ধ ও দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় এই আইন জার্মান, অস্ট্রো-হাঙ্গেরীয়, ইতালীয় ও জাপানি অভিবাসীদের আটক ও বহিষ্কারের জন্য ব্যবহৃত হয়েছিল।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় এই আইনটির মাধ্যমে জাপানি বংশোদ্ভূত মার্কিন নাগরিকদের জন্য ‘কুখ্যাত বন্দী’ বাস্তবায়ন করা হয়েছিল বলে ব্রেনান সেন্টার ফর জাস্টিস জানিয়েছে।