হোম > ইসলাম

রমজানের এই দিনে: তুর পাহাড়ে যেভাবে তাওরাত লাভ করেন মুসা (আ.)

কাউসার লাবীব

মহিমান্বিত রমজান কুরআন নাজিলের মাস। আসমানি কিতাব তাওরাতও এই পবিত্র মাসেই নাজিল হয়েছে। নবী হজরত মুসা (আ.) আল্লাহর সঙ্গে সরাসরি বাক্যালাপ করার সৌভাগ্য লাভ করেছিলেন। এ কারণে তাঁকে ‘কালিমুল্লাহ’ বা আল্লাহর সঙ্গে কথোপকথনকারী বলা হয়।

এক রজবের ২৭ তারিখ আল্লাহ তাআলা হজরত মুসা (আ.)কে তুর পাহাড়ে ডেকে পাঠান। কঠিন সফর শেষে তিনি সেখানে পৌঁছান। আল্লাহর আদেশে একাধারে ৩০ দিন ইতিকাফসহ রোজা রাখেন। এরপর একইভাবে রোজা ও ইতিকাফ পালন করেন আরও ১০ দিন। তুর পাহাড়ে ৪০ দিনের অবস্থান পূর্ণ হয় রমজানের ৬ তারিখ। অর্থাৎ আজকের এই দিনে। ফলে আল্লাহ রাব্বুল আলামিন তাঁকে তাওরাত দান করলেন। কয়েকটি পাথরের ফলকে অঙ্কিত তাওরাত নিয়ে তিনি ফিরে আসেন নিজের জাতির কাছে।

তাওরাত প্রধান চার আসমানি কিতাবের একটি। এটি হিব্রু ভাষায় ইহুদিদের জন্য নাজিলকৃত ঐশীগ্রন্থ। হিব্রুতে তাওরাতের নাম তোরাহ্। তোরাহ্ শব্দের অর্থ ‘আইন’, ‘নিয়মকানুন’ বা ‘শিক্ষণীয় উপদেশ’। সুস্থ সমাজ বিনির্মাণে আল্লাহ বেশ কিছু বিধান বা ধর্মীয় অনুশাসন দিয়েছিলেন তাওরাত কিতাবে। যেমন—এক. আল্লাহ ছাড়া কোনো উপাস্য নেই, দুই. মূর্তি তৈরি করা হারাম, তিন. মা-বাবার অবাধ্য হওয়া যাবে না, চার. কাউকে অন্যায়ভাবে হত্যা করা হারাম, পাঁচ. ব্যভিচার করা যাবে না, ছয়. প্রতিবেশীর বিরুদ্ধে কোনোরূপ মিথ্যা সাক্ষ্য দেওয়া পাপ, সাত. প্রতিবেশীর পরিবারের প্রতি অন্যায় লালসা করা হারাম ইত্যাদি।

আল্লাহর নবী হজরত মুসা (আ.) তাঁর বিশ্বস্ত সঙ্গী হজরত হারুন (আ.)কে নিয়ে বনি ইসরাইলের মাঝে ছড়িয়ে দিতে শুরু করেন এসব আসমানি নির্দেশনা।

আল্লাহ তাআলা জানতেন, বনি ইসরাইল ও ফেরাউনের সম্প্রদায় একরোখা। তারা অত সহজে হজরত মুসার দাওয়াত গ্রহণ করবে না। তাই সময়ে সময়ে তাঁকে মহান প্রভু বেশ কিছু মোজেজা দান করেন। এ বিষয়ে আল্লাহ তাআলা পবিত্র কুরআনে বলেন, ‘এবং অবশ্যই আমি মুসাকে নয়টি মোজেজা দান করেছি।’ (সুরা বনি ইসরাইল: ১০১)

হজরত মুসা (আ.)-এর অন্যতম প্রধান দুটি মোজেজা ছিল তাঁর হাতের লাঠি। এটি প্রয়োজনে সাপে পরিণত হতো। আরেকটি হলো আলোকময় শুভ্র হাত। এসব দিয়ে তিনি অত্যাচারী ফেরাউনকে মোকাবিলা করেছিলেন। এ ছাড়া তাঁর মোজেজার মধ্যে ছিল ফেরাউনের সম্প্রদায়ের হঠকারিতা ও দুরাচারের কারণে দুর্ভিক্ষের আগমন, তুফান, পঙ্গপাল, উকুন, ব্যাঙ, রক্ত ও প্লেগজনিত আজাব। এসবের পরও ফেরাউনের অত্যাচার থামছিল না। শেষে নবী মুসা (আ.)-এর বদ দোয়ায় স্বজাতিসহ সলিলসমাধি হয় স্বঘোষিত খোদা ফেরাউনের। এসব আজাবের সময় বনি ইসরাইল ফেরাউনের সম্প্রদায়ের সংলগ্ন থাকলেও তারা মুক্ত ও সুরক্ষিত থাকে।

ফেরাউনের মৃত্যুর পর বনি ইসরাইলকে নিয়ে নতুনভাবে সমাজ সাজাতে শুরু করেন আল্লাহর নবী হজরত মুসা (আ.)। কিন্তু কিছুদিন যেতে না যেতেই এই অবাধ্য সম্প্রদায় আল্লাহর বাণীকে অবজ্ঞা করতে শুরু করে। এমনকি মুসা (আ.)-এর নবুওয়ত নিয়েও প্রশ্ন তোলে। এত কিছুর পরও আল্লাহ তাদের ক্ষমা করেন। বারবার সঠিক পথ সন্ধানের সুযোগ দেন। নবী মুসা (আ.) মৃত্যুর আগ পর্যন্ত তাওরাতের শিক্ষা তাদের মাঝে বিলিয়েছেন। বনি ইসরাইল সম্পর্কে দয়াময় আল্লাহর ক্ষমাশীল বাণী, ‘তার পরও তোমরা মুখ ফেরালে। সুতরাং তোমাদের প্রতি আল্লাহর অনুগ্রহ ও দয়া না থাকলে তোমরা ক্ষতিগ্রস্ত হতে।’ (সুরা বাকারা: ৬৪)

লেখক: ইসলামবিষয়ক গবেষক ও সাংবাদিক

হালাল-হারাম নিয়ে সংশয় থাকলে করণীয়

আসরের নামাজ যে কারণে গুরুত্বপূর্ণ

কোরআন জীবনের অপরিহার্য অনুষঙ্গ

রমজানের প্রস্তুতি শুরু হোক এখনই

মুসলিম ঐতিহ্যে টুপির গুরুত্ব

ব্যবসা-বাণিজ্যে নিষিদ্ধ ৮ কাজ

নামাজে সতর ঢাকা সম্পর্কে সতর্কতা

সীমান্ত পাহারা দেওয়া শ্রেষ্ঠতম ইবাদত

কবরে যে ২ গুনাহের শাস্তি দেওয়া হবে

মুমিনের চমৎকার ৪ চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য

সেকশন