মুফতি খালিদ কাসেমি
নামাজে কিরাত পাঠ করা নামাজের অবিচ্ছেদ্য অংশ। ইমাম ও একাকী নামাজ আদায়কারীর জন্য ফরজ নামাজের প্রথম দুই রাকাতে সুরা ফাতেহা এবং অন্য কোনো সুরা পাঠ করা ওয়াজিব। হানাফি মাজহাব অনুসারে ইমামের পেছনে মুক্তাদির জন্য সুরা ফাতেহা বা অন্য কোনো সুরা পাঠ করা মাকরুহে তাহরিমি; মুক্তাদি একেবারেই নীরব থাকবে। কোনো মুক্তাদি যদি ইমামের পেছনে কিরাত পড়ে, তাহলে তার নামাজ মাকরুহ হবে।
দলিল হিসেবে তাঁরা বলেন, আল্লাহ তাআলা এরশাদ করেছেন, ‘যখন কোরআন পাঠ করা হয়, তখন তোমরা মনোযোগের সঙ্গে তা শোনো আর চুপ হয়ে থাকবে, যাতে তোমাদের প্রতি দয়া করা হয়।’ (সুরা আরাফ: ২০৪) আয়াতটির ব্যাপারে হজরত মুজাহিদ (রহ.) বলেন, ‘রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর যুগে কয়েকজন সাহাবি ইমামের পেছনে কিরাত পড়তেন, তাঁদের সম্পর্কে এটি নাজিল হয়েছে।’ (বায়হাকি)
মূলত মুক্তাদির জন্য ইমামের কিরাতই যথেষ্ট। এক হাদিসে বর্ণিত হয়েছে, মহানবী (সা.) বলেন, ‘যার ইমাম আছে, ইমামের কিরাতই তার জন্য যথেষ্ট।’ (ইবনে মাজাহ) অন্য হাদিসে বর্ণিত হয়েছে, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘তোমরা যখন নামাজ আদায় করবে, তোমাদের কাতারগুলো সোজা করে নেবে। এরপর তোমাদের কেউ ইমামতি করবে। সে যখন তাকবির বলবে, তোমরাও তাকবির বলবে। ইমাম যখন কিরাত পাঠ করবে, তোমরা চুপ থাকবে।’ (মুসলিম)
আরেক হাদিসে বর্ণিত হয়েছে, রাসুলুল্লাহ (সা.) শব্দ করে কিরাত পড়া নামাজ শেষ করে নামাজ আদায়কারীদের দিকে ফিরে বললেন, ‘তোমাদের কেউ কি এখন আমার সাথে কিরাত পড়েছ?’ এক ব্যক্তি বলল, ‘হ্যাঁ, ইয়া রাসুলুল্লাহ (আমি পড়েছি)।’ রাসুলুল্লাহ (সা.) বললেন, ‘তাই তো, আমি নামাজে মনে মনে বলছিলাম—কী হলো, আমি কিরাত পাঠ করতে আটকে যাচ্ছি কেন?’ (তিরমিজি)
লেখক: ইসলামবিষয়ক গবেষক