ইসলামের সুন্দর অর্থব্যবস্থার গুরুত্বপূর্ণ একটি দিক হচ্ছে, করজে হাসান তথা উত্তম ও পুণ্যময় ঋণ। যে ঋণে কোনোরূপ সুদের সংশ্লিষ্টতা নেই এবং ঋণগ্রহীতার অবস্থার প্রতি লক্ষ্য রেখে ঋণ আদায়ের ক্ষেত্রে ছাড়ের মানসিকতা রাখা হয়, ইসলামি পরিভাষায় একে করজে হাসান বলে। পবিত্র কোরআনের ছয়টি আয়াতে আল্লাহ তাআলা করজে হাসানের ফজিলত বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেন, ‘এমন কে আছে, যে আল্লাহকে পুণ্যময় ঋণ প্রদান করবে? তিনি তার জন্য তা বহুগুণে বৃদ্ধি করে দেবেন।’ (সুরা বাকারা: ২৪৫) ‘দানশীল পুরুষগণ ও দানশীল নারীগণ এবং যারা আল্লাহকে উত্তম ঋণ দান করে, তাদেরকে দেওয়া হবে বহুগুণ বেশি এবং তাদের জন্য রয়েছে সম্মানজনক পুরস্কার।’ (সুরা হাদিদ: ১৮)
আয়াতে আল্লাহকে ঋণ দেওয়ার অর্থ হচ্ছে অভাবী ব্যক্তিকে ঋণ দেওয়া। এর মাহাত্ম্য বোঝানোর জন্য তিনি এর সঙ্গে নিজের নাম জুড়ে দিয়েছেন। (মাআরিফুল কোরআন) একাধিক হাদিসেও করজে হাসানের ফজিলত বর্ণিত হয়েছে। রাসুল (সা.) ইরশাদ করেন, মিরাজের রাতে আমি জান্নাতের একটি দরজায় লেখা দেখলাম, ‘দান-খয়রাতে ১০ গুণ সওয়াব আর ঋণ প্রদানে ১৮ গুণ সওয়াব।’ আমি বললাম, ‘হে জিবরিল, ঋণ দান-খয়রাতের চেয়ে উত্তম হওয়ার কারণ কী?’ তিনি বললেন, ‘কারণ ভিক্ষুক নিজের কাছে কিছু থাকলেও ভিক্ষা চায়, কিন্তু ঋণগ্রহীতা কেবল প্রয়োজনের তাগিদেই ঋণ চায়।’ (ইবনে মাজাহ) অন্যত্র বলেন, ‘যে ব্যক্তি ঋণ পরিশোধে অক্ষম ব্যক্তিকে ছাড় দেবে, আল্লাহ দুনিয়া ও আখিরাতে তাকে ছাড় দেবেন। (মুসলিম)
সুতরাং দেশের আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো যদি সুদভিত্তিক ঋণব্যবস্থার বদলে ইনসাফভিত্তিক ইসলামি ঋণব্যবস্থা (করজে হাসান) গ্রহণ করে, তাহলে অচিরেই দেশ থেকে দারিদ্র্যবিমোচন সম্ভব হবে ইনশা আল্লাহ।