হোম > ইসলাম

রোজার নিয়ত কখন কীভাবে করতে হয়

মুফতি ইশমাম আহমেদ

প্রশ্ন: রোজার নিয়ত করা কি জরুরি? এর সঠিক পদ্ধতি কী? এটি কি মুখে উচ্চারণ করে আরবিতে করতে হয়? প্রতিটি রোজার জন্য কি আলাদা নিয়ত করতে হবে? কোরআন-হাদিসের আলোকে জানতে চাই। 
শামীম হোসাইন, নারায়ণগঞ্জ

উত্তর: আরবি নিয়ত শব্দের অর্থ সংকল্প করা, মনস্থির করা, ইচ্ছা করা ইত্যাদি। নিয়ত মানুষের ইচ্ছা-অনিচ্ছা ও সিদ্ধান্তের সঙ্গে সম্পর্কিত। ইসলামে নিয়তের গুরুত্ব অপরিসীম। হাদিসে আছে, ‘প্রতিটি আমল নিয়তের ওপর নির্ভরশীল।’ (বুখারি: ১) এই হাদিসের মর্ম হলো, নিয়ত শুদ্ধ হলে আমলের সওয়াব মিলবে; আর অশুদ্ধ হলে মিলবে না। তাই মুমিনের প্রতিটি ইবাদত আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের সংকল্পের মাধ্যমে শুরু করা জরুরি। রমজানের রোজার ক্ষেত্রেও নিয়ত করা আবশ্যক।

রোজার নিয়ত করার অর্থ হলো, সুবহে সাদিক থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত পানাহার ও স্ত্রী সহবাস থেকে বিরত থাকার দৃঢ় সংকল্প করা। মনে মনে রোজা রাখার সিদ্ধান্ত নিলেই নিয়ত হয়ে যাবে। শায়খুল ইসলাম ইবনে তাইমিয়া (রহ.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি মনে মনে সিদ্ধান্ত নেয় যে সে আগামীকাল রোজা রাখবে, তার নিয়ত হয়ে গেছে।’ (আল-ইখতিয়ারাত, পৃ. ১৯১) তবে মৌখিকভাবে নিয়ত করা জরুরি না হলেও উত্তম। (ফাতাওয়াতে শামি: ৩ / ৩৪৫)। কারণ তাতে মনস্থির হয় এবং অন্তর প্রশান্ত হয়।

রোজার মৌখিক নিয়ত যেকোনো ভাষায় হতে পারে। একান্ত আরবি ভাষায় হওয়া জরুরি নয় (জাওয়াহিরুল ফিকহ: ১ / ৩৭৮), বরং যারা আরবি বোঝে না, তাদের জন্য আরবিতে নিয়ত না করাই কর্তব্য। কারণ নিয়ত পড়া জরুরি নয়, নিয়ত করাই জরুরি।

রমজানের রোজার নিয়ত রাতে কিংবা ফজরের আগে করতে হয়। উম্মুল মুমিনিন হাফসা (রা.) বলেন, মহানবী (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি ফজরের আগে রোজা রাখার নিয়ত করবে না, তার রোজা (পূর্ণাঙ্গ) হবে না।’ (আবু দাউদ: ১ / ৩৩৩) তবে কেউ সাহরি খেতে জাগলে এবং রোজা রাখার মানসে সাহরি গ্রহণ করলে, সেটিকেই রোজার নিয়ত হিসেবে ধরে নেওয়া হবে।

একান্তই ফজরের আগে রোজার নিয়ত করতে না পারলে এবং রোজা রাখার উদ্দেশ্যে সাহরিও খেতে না পারলে সূর্য ঢলে পড়ার ঘণ্টাখানেক আগেও নিয়ত করা যাবে। সালামা ইবনুল আকওয়া (রা.) বলেন, (আশুরার রোজা যখন ফরজ ছিল তখন) মহানবী (সা.) আসলাম গোত্রের এক ব্যক্তিকে ঘোষণা করতে বললেন, ‘যে ব্যক্তি সকাল থেকে কিছু খায়নি, সে বাকি দিন রোজা রাখবে। আর যে খেয়েছে, সে-ও বাকি দিন রোজা রাখবে। কারণ আজ আশুরার দিন।’ (বুখারি: ২০০৭)

প্রতিটি রোজার জন্য পৃথক নিয়ত করা জরুরি। প্রথম রোজায় পুরো মাসের নিয়ত করা যথেষ্ট নয়। (ফাতাওয়ায়ে রহিমিয়া: ২ / ১৫) আর যে ব্যক্তি পুরো রমজানই রোজা রাখা বা না রাখার কিছুই নিয়ত করেনি, তাহলে সে কাজা করে নেবে। (তাতারখানিয়া: ২ / ২৭১) 

উত্তর দিয়েছেন: ইসলামবিষয়ক গবেষক

হালাল-হারাম নিয়ে সংশয় থাকলে করণীয়

আসরের নামাজ যে কারণে গুরুত্বপূর্ণ

কোরআন জীবনের অপরিহার্য অনুষঙ্গ

রমজানের প্রস্তুতি শুরু হোক এখনই

মুসলিম ঐতিহ্যে টুপির গুরুত্ব

ব্যবসা-বাণিজ্যে নিষিদ্ধ ৮ কাজ

নামাজে সতর ঢাকা সম্পর্কে সতর্কতা

সীমান্ত পাহারা দেওয়া শ্রেষ্ঠতম ইবাদত

কবরে যে ২ গুনাহের শাস্তি দেওয়া হবে

মুমিনের চমৎকার ৪ চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য

সেকশন