শরিফ আহমাদ, ইসলামবিষয়ক গবেষক
তাসবিহ শব্দের অর্থ পবিত্রতা বর্ণনা করা। পবিত্র কোরআনের একাধিক স্থানে আল্লাহ তাআলা তাঁর তাসবিহ পাঠের নির্দেশ দিয়েছেন। এরশাদ হয়েছে, ‘আর তোমার প্রতিপালকের তাসবিহ ও তাহমিদে লিপ্ত থাকো সূর্যোদয় ও সূর্যাস্তের আগে।’ (সুরা ত্বহা: ১৩০) তাসবিহ সব সময় পাঠ করা যায়। তবে প্রতি নামাজের পরে তাসবিহ পাঠের অনেক গুরুত্ব ও ফজিলত রয়েছে।
এক. রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘এমন দুটো অভ্যাস রয়েছে, যদি কোনো মুসলমান তা আয়ত্ত করতে পারে, তবে সে অবশ্যই জান্নাতে যাবে।...একটি হলো, প্রতি নামাজের পর ১০ বার সুবহানাল্লাহ, ১০ বার আলহামদুলিল্লাহ এবং ১০ বার আল্লাহু আকবার পাঠ করা। তা মুখে পাঠ করলে (পাঁচ ওয়াক্ত নামাজে) ১৫০ বার হয় আর মিজানের পাল্লায় হবে ১ হাজার ৫০০ বার।’ (তিরমিজি: ৩৪১০)
দুই. রাসুল (সা.) এরশাদ করেন, ‘যে ব্যক্তি প্রতি ওয়াক্ত নামাজের পর সুবহানাল্লাহ ৩৩ বার, আলহামদুলিল্লাহ ৩৩ বার ও আল্লাহু আকবার ৩৩ বার বলবে, এই তো হলো ৯৯ বার, আর ১০০ পূর্ণ করার জন্য বলবে, লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াহদাহু লা শারিকালাহু লাহুল মুলকু ওয়ালাহুল হামদু ওয়াহুয়া আলা কুল্লি শাইয়িন কাদির, তার পাপসমূহ মাপ হয়ে যাবে যদিও তা সমুদ্রের ফেনার মতো হয়।’ (মুসলিম: ১২৩০)
তিন. এক দরিদ্র লোক রাসুল (সা.)-এর কাছে এসে বললেন, ‘সম্পদশালী ও ধনী ব্যক্তিরা তাদের সম্পদের দ্বারা উচ্চ মর্যাদা ও স্থায়ী আবাস লাভ করছেন। তারা আমাদের মতো নামাজ আদায় করছেন, আমাদের মতো রোজা পালন করছেন এবং অর্থের মাধ্যমে হজ, ওমরাহ, জিহাদ ও সদকা করার মর্যাদাও লাভ করছেন।’ এ কথা শুনে তিনি বললেন, ‘আমি কি তোমাদের এমন কিছু কাজের কথা বলব, যা তোমরা করলে যারা নেক কাজে তোমাদের চেয়ে অগ্রগামী হয়ে গিয়েছে, তাদের সমপর্যায়ে পৌঁছাতে পারবে। তবে যারা পুনরায় এ ধরনের কাজ করবে, তাদের কথা ভিন্ন। তোমরা প্রতি ওয়াক্ত নামাজের পর ৩৩ বার করে তাসবিহ (সুবহানাল্লাহ), তাহমিদ (আলহামদুলিল্লাহ) এবং তাকবির (আল্লাহু আকবার)পাঠ করবে।’ (বুখারি: ৮০৩)