ইসলাম বলে, মানুষে মানুষে কোনো ভেদাভেদ নেই। কেউ কারও স্বাধীনতায় অবৈধ হস্তক্ষেপ করার অধিকার নেই। রাজা-প্রজা, আমির-ফকির সবাই সমান। বিদায় হজের ভাষণে মহানবী (সা.) বলেন, ‘কালোর ওপর সাদার প্রাধান্য নেই, অনারবের ওপর আরবের শ্রেষ্ঠত্ব নেই।’ (মুসনাদে আহমাদ: ২৩৫৩৬)
বর্ণ, ভাষা, ভূমির পার্থক্য মানুষকে শ্রেষ্ঠত্ব দেয় না। আল্লাহর কাছে শ্রেষ্ঠত্বের একমাত্র মাপকাঠি তাকওয়া। পবিত্র কোরআনে তিনি বলেন, ‘হে মানুষ, আমি তোমাদের সকলকে এক পুরুষ ও এক নারী থেকে সৃষ্টি করেছি এবং তোমাদেরকে বিভিন্ন জাতি ও গোত্রে বিভক্ত করেছি, যাতে তোমরা একে অন্যকে চিনতে পারো। প্রকৃতপক্ষে তোমাদের মধ্যে আল্লাহর কাছে সর্বাপেক্ষা বেশি মর্যাদাবান সে-ই, যে তোমাদের মধ্যে সর্বাপেক্ষা বেশি আল্লাহভীরু। নিশ্চয়ই আল্লাহ সবকিছু জানেন, সবকিছু সম্পর্কে অবহিত।’ (সুরা হুজুরাত: ১৩)
সেই সূত্রে মানুষ সৃষ্টিগতভাবেই স্বাধীন। অন্য কোনো সৃষ্টির অধীনে তাকে বাধা পড়তে হয় না। স্রষ্টার আনুগত্যের পর দিগন্তজুড়ে তার স্বাধীনতা। তবে এই স্বাধীনতা মানে স্বেচ্ছাচারিতার স্বাধীনতা নয়। বরং কল্যাণের স্বাধীনতা, অসহায়ের পাশে দাঁড়ানোর স্বাধীনতা, গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাস গড়ার স্বাধীনতা।
এই স্বাধীনতা মানুষের জন্য আল্লাহ তাআলার অপার দান। পবিত্র কোরআনের ভাষ্য অনুযায়ী, তাঁর মদদেই বিজয় আর স্বাধীনতা আসে। নবী-রাসুলগণ যুগে যুগে স্বাধীনতা ও মানবতার মুক্তির জন্য সংগ্রাম করেছেন। কখনো স্বাধীনতা অর্জন ও এর সুরক্ষার জন্য বাধ্য হয়ে যুদ্ধও করেছেন। নিজেদের অধিকার আদায়ের লড়াইয়ে যাঁরা জীবন দিয়েছেন, তাঁদের বিশেষ মর্যাদা দান করেছে ইসলাম।
আল্লাহর রাসুল (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি নিজের সম্পদ, দ্বীন, জীবন এবং পরিবার-পরিজনের নিরাপত্তা রক্ষায় মারা যায়, সে শহীদ।’ (সুনানে তিরমিজি: ১৪২১)