মুফতি আইয়ুব নাদীম
ঐক্য মানবজীবনের অবিচ্ছেদ্য অনুষঙ্গ। ইসলাম সব সময় ঐক্যের প্রতি উদ্বুদ্ধ করে। ইমানের পরে যে ব্যাপারে সবচেয়ে বেশি তাগিদ দেওয়া হয়েছে, তা হলো ঐক্য। ঐক্যের ফলে মানবজাতি ভেদাভেদ ভুলে গিয়ে সত্য, সুন্দর ও সুশৃঙ্খল সমাজ গড়তে সক্ষম হয়। ঐক্যবদ্ধভাবে জীবন যাপন করা মুমিনের অপরিহার্য কর্তব্য।
এ সম্পর্কে পবিত্র কোরআনে এরশাদ হয়েছে, ‘হে মুমিনগণ, তোমরা আল্লাহর রজ্জুকে (ইসলাম) আঁকড়ে ধরো (ঐক্যবদ্ধ হও) এবং পরস্পর বিচ্ছিন্ন হয়ো না।’ (সুরা আলে ইমরান: ১০৩)
অন্য এক আয়াতে এরশাদ হয়েছে, ‘তোমরা সেসব লোকের মতো হয়ো না, যাদের কাছে স্পষ্ট ও প্রকাশ্য নিদর্শন আসার পরও তারা বিভিন্ন দল-উপদলে বিভক্ত হয়ে পড়েছে এবং নানা ধরনের মতানৈক্য সৃষ্টি করেছে; তাদের জন্য রয়েছে কঠোর শাস্তি।’ (সুরা আলে ইমরান: ১০৫)
এ প্রসঙ্গে হাদিসে বর্ণিত হয়েছে, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘এক মুমিন আরেক মুমিনের জন্য প্রাসাদস্বরূপ, যার এক অংশ অপর অংশকে শক্তিশালী করে থাকে।’ এ কথা বলে তিনি তাঁর হাতের আঙুলগুলো একটার মধ্যে আরেকটা প্রবেশ করালেন। (বুখারি: ৪৮১)
রাসুলুল্লাহ (সা.) আরও বলেন, ‘কোনো মুসলিম ব্যক্তির অন্তর তিনটি বিষয়ে খিয়ানত করে না—১. একমাত্র আল্লাহর জন্য আমলকে খালেস করা, ২. মুসলিমদের নেতৃবৃন্দকে সদুপদেশ দান, ৩. মুসলিমদের জামাতকে আঁকড়ে থাকা। কেননা তাদের দোয়া তাদের পেছনের সবাইকে বেষ্টন করে নেয়।’ (তিরমিজি: ২৬৫৮)
ওমর ইবনুল খাত্তাব (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি জান্নাতের সর্বোত্তম অংশে বসবাস করে আনন্দিত হতে চায়, সে যেন ঐক্যবদ্ধভাবে আল্লাহর রজ্জুকে আঁকড়ে ধরে।’ (তিরমিজি: ১১২৬)
রাসুল (সা.) আরও এরশাদ করেন, ‘তোমরা ঐক্যবদ্ধভাবে জীবন যাপন করো, সংঘবদ্ধ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে জীবন যাপন কোরো না। কারণ, বিচ্ছিন্ন হলে শয়তানের কুপ্ররোচনায় আকৃষ্ট হয়ে পথভ্রষ্ট হয়ে যাবে।’ (আবু দাউদ: ২৬১৭)
লেখক: শিক্ষক ও মুহাদ্দিস