ইসলাম ডেস্ক
চলতি বছর প্রায় ২০ লাখ মুসলমান বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে পবিত্র হজে অংশ নিতে সৌদি আরব গিয়েছেন। দেশটির কর্তৃপক্ষের জন্য এই বিশালসংখ্যক মানুষকে সেবা দেওয়া চ্যালেঞ্জের ব্যাপার হলেও অন্যান্য বছরের চেয়ে এ বছর তা তুলনামূলক সহজ হয়েছে বলা যায়। মূলত কয়েক বছর ধরে সৌদি আরব হজের সেবা কার্যক্রমে যুক্ত করেছে বহুমাত্রিক আধুনিক প্রযুক্তি। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাসম্পন্ন রোবটগুলো হাজিদের সামাজিক সেবা দেওয়ার মাধ্যমে হজকে অতীতের যেকোনো সময়ের চেয়ে আধুনিক ও সহজ করে তুলেছে।
হজের মৌসুমে যে কাজগুলো স্বেচ্ছাসেবকদের দিয়ে সম্পাদন করা হতো, তার অনেকটাই এখন কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা দখলে নিচ্ছে। কোভিড-১৯ পরবর্তী সময় থেকে সৌদি কর্তৃপক্ষ প্রযুক্তির ব্যাপক ব্যবহারের দিকে ঝুঁকেছে। হজের অনলাইন নিবন্ধনের জন্য চালু করা হয়েছে নুসুক অ্যাপ। মক্কা-মদিনার নির্দিষ্ট স্থানগুলো জীবাণুমুক্তকরণ ও জমজমের পানি বিতরণে যুক্ত করেছে স্মার্ট রোবট।
সবচেয়ে বড় চমক ছিল, গত বছর হজে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাসম্পন্ন কিছু রোবট হাজিদের সেবায় নিয়োজিত করা হয়েছিল, যা বিশ্বের বহুল প্রচলিত ১১টি ভাষায় হজের আচার-অনুষ্ঠান সম্পর্কে তথ্য দিতে এবং সহায়তা করতে সক্ষম। চলতি বছর হজের মৌসুমে আরও কিছু উন্নত প্রযুক্তি যুক্ত করেছে সৌদি আরব।
১২ জুন সৌদি ট্রান্সপোর্ট অ্যান্ড লজিস্টিক সার্ভিসেস মন্ত্রণালয় ও সিভিল অ্যাভিয়েশনের উদ্যোগে চালু হয় রোবোটিক ড্রোন ট্যাক্সিক্যাব, যা চালক ছাড়া আকাশে উড়তে সক্ষম।
হজযাত্রীদের চলাফেরা নিরাপদ করতে মক্কার আকাশে অসংখ্য ড্রোন মোতায়েন করা হয়েছে, যার মাধ্যমে ২৪ ঘণ্টা ট্রাফিক সিস্টেম নিয়ন্ত্রণ ও অবাধ করার চেষ্টা করা হয়েছে।
এ ছাড়া হৃৎস্পন্দনজনিত সমস্যায় হাজিদের তারবিহীন পেসমেকার সেবা দেওয়ার ব্যবস্থাও রাখা হয়েছে। মক্কার বাদশাহ আবদুল্লাহ মেডিকেল সিটিতে এ বছর একজন চীনা হজযাত্রীকে জীবন রক্ষাকারী এই উন্নত প্রযুক্তির সেবা দেওয়া হয়।
সৌদি কর্তৃপক্ষ ভবিষ্যতে হজের সব ধরনের সেবা কার্যক্রমেই ব্যাপকভাবে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ব্যবহার করতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। তবে সৌদি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাবিষয়ক পরামর্শক আবির আলমারানি বলেন, ‘কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার মাধ্যমে হজের সেবা কার্যক্রম সহজ করা গেলেও তা পুরোপুরি মানুষের স্থান নিতে সক্ষম নয়। কারণ এটি এখনো সৃজনশীলতা, জটিল নৈতিক বিচার ও গভীর সাংস্কৃতিক সংবেদনশীলতার ক্ষেত্রে মানুষের সমকক্ষ নয়।’
সূত্র: আরব নিউজ