মাওলানা ইসমাইল নাজিম
বিজয় আল্লাহ তাআলার অনিন্দ্য সুন্দর নিয়ামত। দীর্ঘ সংগ্রাম-সাধনা, ত্যাগ-তিতিক্ষা ও যুদ্ধ-লড়াইয়ের পরই বিজয় অর্জিত হয়। ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর অসংখ্য মুক্তিযোদ্ধা ও মা-বোনের কোরবানির বিনিময়ে আমরা পেয়েছি মহান বিজয়। এ জন্য আমরা আল্লাহ তাআলার দরবারে বিনীত চিত্তে কৃতজ্ঞতা জানাই। বিজয়ের মুহূর্তের করণীয় সম্পর্কে পবিত্র কোরআনে একটি স্বতন্ত্র সুরা নাজিল হয়েছে।
সুরা আন-নাসরে আল্লাহ তাআলা বিজয়ের সময়ের আমলের কথা আলোচনা করেছেন। এটি পবিত্র কোরআনের ১১০তম সুরা। মহানবী (সা.)-এর নবুওয়তি মিশনের সফল সমাপ্তির দিকের অবস্থা চিত্রিত হয়েছে এই সুরায়। ইবনে আব্বাস (রা.) ওবায়দুল্লাহ ইবনে উতবাকে জিজ্ঞেস করলেন, ‘সর্বশেষ নাজিলকৃত পূর্ণাঙ্গ সুরা কোনটি?’ তিনি বললেন, ‘সুরা নাসর।’ (মুসলিম)
সুরার শুরুতেই আল্লাহর সাহায্য ও বিজয়ের সুখবর দেওয়া হয়েছে। ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে, ইসলামের যে মহান বার্তা মহানবী (সা.) পৃথিবীবাসীকে দিতে এসেছিলেন, তা পূর্ণতা পাচ্ছে খুব শিগগির। হক-বাতিল স্পষ্ট হয়ে যাচ্ছে। অসত্যের ওপর সত্যের বিজয় নিশ্চিত হচ্ছে শিগগিরই। ইসলাম ধর্মের অনুসারীরা বিজয়ী জাতি হিসেবে পৃথিবীতে আবির্ভূত হচ্ছে। ফলে মানুষ দলে দলে ইসলামে প্রবেশ করছে—যেভাবে প্রতিটি বিজয়ী জাতির সঙ্গে পৃথিবীর মানুষ যুক্ত হতে শুরু করে।
এমন সুন্দর মুহূর্তে মহানবী (সা.)-কে তিনটি আমল করার নির্দেশ দিয়েছেন আল্লাহ তাআলা। এক. আল্লাহর প্রশংসা ও কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করা, দুই. তাঁর মহিমা ও পবিত্রতা ঘোষণা করা এবং তিন. তাঁর কাছে নিজেদের ভুলত্রুটি ও গুনাহের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করা। দীর্ঘ সংগ্রামের মাধ্যমে অর্জিত চূড়ান্ত বিজয় একমাত্র আল্লাহরই দান। তাই তাঁর কৃতজ্ঞতা জানানো জরুরি। আর এই লড়াইয়ে নিজেদের ভুলত্রুটি হতে পারে, তাই আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাওয়াই মুমিনের কাজ।
এবার পড়ে নিন সুরা আন-নাসরের অনুবাদ। ইরশাদ হয়েছে, যখন আসবে আল্লাহর সাহায্য ও বিজয় এবং মানুষকে দলে দলে আল্লাহর দ্বীনে প্রবেশ করতে দেখবে, তখন তোমার রবের প্ৰশংসাসহ তাঁর পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা করো এবং তাঁর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করো, নিশ্চয়ই তিনি তওবা কবুলকারী।’ (সুরা আন-নাসর: ১-৩)