মুফতি মুহাম্মদ জাকারিয়া আল-আজহারি
রমজানের রোজা আমাদের আত্মা পরিশুদ্ধ করে ব্যক্তি, পরিবার ও সমাজজীবনে সুশৃঙ্খলভাবে চলার শিক্ষা দেয়। হিংসা-বিদ্বেষ, হানাহানি ও আত্ম-অহংবোধ ভুলে গিয়ে সুখী, সুন্দর ও সমৃদ্ধিশালী সমাজ প্রতিষ্ঠার বার্তা দেয়। এটি আল্লাহর অফুরন্ত দয়া ও রহমতের মাস। এ মাস তাদের জন্যই রহমত বয়ে আনে, যারা আল্লাহ তাআলার প্রতি অগাধ বিশ্বাস ও অটুট আস্থা রাখে এবং মাসব্যাপী তাঁর ইবাদত-বন্দেগিতে মশগুল থাকে। মহানবী (সা.) ইরশাদ করেন, ‘মুমিনদের জীবনে রমজানের চেয়ে অধিক কল্যাণকর কোনো মাস অতিবাহিত হয় না এবং মুনাফিকদের জীবনে রমজানের চেয়ে অধিক অনিষ্টকর কোনো মাস অতিবাহিত হয় না।’ (মুসনাদে আহমাদ)
আল্লাহ তাআলার অশেষ মেহেরবানিতে যারা ইবাদত করার তাওফিক লাভ করে, তারাই এ মাসের অবর্ণনীয় রহমত লাভ করে। তাই তারা খুবই ভাগ্যবান। পক্ষান্তরে যারা এ মাসের বরকত থেকে বঞ্চিত, তারা সবচেয়ে হতভাগা। মহানবী (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি রমজান মাস পেয়েও তার পাপ ক্ষমা করাতে পারেনি, তার নাক ধুলায় ধূসরিত হোক!’ অর্থাৎ, সে ধ্বংস হোক! (জামিউল উসুল)
মুসলিম স্কলাররা বলেন, ‘নেক কাজের প্রাথমিক প্রতিদান হলো—এরপর আরও আমলের তাওফিক লাভ করা।’ যারা রমজানের পরও আমলের ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে পারে, রমজান তাদের জীবনেই আশীর্বাদ হয়ে এসেছে। রমজানের পর সারা বছর যদি ওয়াক্তমতো নামাজ আদায়ের তাওফিক হয়, নফল রোজা রাখতে মন সায় দেয়, হালাল উপার্জনে মন সন্তুষ্ট থাকে, সুদ-ঘুষ ত্যাগ করার মানসিকতা তৈরি হয়, গিবত ও পরনিন্দা ত্যাগ করা সহজ হয়, তাহলেই বুঝবেন, রমজান আপনার জীবনে আশীর্বাদ হিসেবে এসেছে।
মুফতি মুহাম্মদ জাকারিয়া আল-আজহারি, মুহাদ্দিস, আল-জামিয়া আল-ইসলামিয়া পটিয়া, চট্টগ্রাম