মুনীরুল ইসলাম
মুসলমানদের জন্য বড় নিয়ামত ও ফজিলতের মাস রমজান। অন্যায় বর্জন করে তাকওয়া বা আল্লাহভীতি অর্জনের মাস এটি। এ সম্পর্কে আয়াতে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘তোমাদের ওপর রোজা ফরজ করা হয়েছে, যেভাবে ফরজ করা হয়েছিল তোমাদের পূর্ববর্তীদের ওপর, যাতে তোমরা তাকওয়া অর্জন করতে পারো।’ (সুরা বাকারা: ১৮৩)
আয়াত থেকে বোঝা যায়, রোজার উদ্দেশ্য হলো তাকওয়া অর্জন। তাকওয়া হলো, অন্তরে মহান আল্লাহর ভয় সৃষ্টির মাধ্যমে নিজেকে সব রকমের অপকর্ম থেকে বিরত রাখা এবং সব কর্তব্য পালন করা। তাকওয়া অর্জনের জন্য আল্লাহ তাআলা পবিত্র কোরআনের মাধ্যমে বহুবার মানুষকে তাগিদ দিয়েছেন। তাকওয়া অর্জন ছাড়া মানুষ মুমিন হতে পারে না। যার মধ্যে তাকওয়া রয়েছে, তার পুরো জীবন পরিচালিত হয় মহান আল্লাহর দেওয়া বিধান ও রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর দেখানো আদর্শ মতো।
পৃথিবীতে চুরি-ডাকাতি থেকে মুক্ত থাকতে পুলিশ-চৌকিদার নিয়োগ দেওয়া হয়। দোকানপাট সংরক্ষিত রাখতে ক্লোজড সার্কিট ক্যামেরা, স্যাটেলাইট ও উন্নততর প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়। এসব অন্যায়ের জন্য কোট-কাচারি, জেল, উকিল, জজ ইত্যাদি নিযুক্ত করা হয়। মানুষের মাঝে তাকওয়া থাকলে এসবের প্রয়োজন হয় না। তাকওয়ার সুফল সম্পর্কে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘যদি গ্রামবাসী ইমান আনত এবং তাকওয়া অবলম্বন করত, তাহলে আমি আসমান ও জমিনের বরকতরাজি তাদের জন্য খুলে দিতাম।’ (সুরা আরাফ: ৯৬)
তাকওয়া অর্জনের উত্তম সময় পবিত্র রমজান মাস। কারণ এ মাসে মানুষ রোজা রাখে। সারা দিন রোজাদার গুনাহ থেকে বিরত থাকে। রাতের বেলায় নফল নামাজ পড়ে। অধিক পরিমাণে আল্লাহর কাছে কান্নাকাটি করে। ফলে মানুষ তাকওয়া অর্জনের পথ খুঁজে পায়। রমজান মাসের হক আদায় করে রোজা রাখতে পারলে তাকওয়া অর্জিত হবে। আসুন, আমরা রমজানের শেষ দিনগুলোতে তাকওয়া অর্জনের চেষ্টা করি।
লেখক: শিক্ষক ও ইসলামবিষয়ক গবেষক