আমজাদ ইউনুস
সৎ কাজের আদেশ দেওয়া এবং অসৎ কাজ থেকে বিরত রাখা মুমিনদের দায়িত্ব ও কর্তব্য। ইসলাম তার অনুসারীদের অন্যায়ের প্রতিবাদের নির্দেশ দেয়। ইসলামে মন্দ প্রতিরোধের আদেশের পাশাপাশি মন্দ প্রতিরোধের নীতিও প্রদান করা হয়েছে। ইসলাম উৎকৃষ্ট ও সুন্দর পন্থায় মন্দ প্রতিরোধে নির্দেশ দেয়।
ইসলাম মন্দ প্রতিরোধের কয়েকটি স্তর নির্ধারণ করে দিয়েছে। প্রথমত, হাত দিয়ে প্রতিরোধ করবে, এটি শারীরিকভাবে বা শক্তি প্রয়োগের মাধ্যমে করা। অবশ্য আলেমগণ বলেন, এই স্তরের জন্য ক্ষমতা প্রয়োগের আইনি বৈধতা দরকার, যে কারও জন্য তা করা বৈধ নয়। দ্বিতীয়ত, মুখ দিয়ে প্রতিরোধ করা, অর্থাৎ সঠিকভাবে বোঝানো, উপদেশ দেওয়া। আর তৃতীয়ত, অন্তর দিয়ে ঘৃণা করা, যখন মন্দ কাজকে শক্তি প্রয়োগ ও উপদেশের মাধ্যমে প্রতিরোধ করা সম্ভব নয়, এটি তখন প্রযোজ্য।
মহান আল্লাহ তাআলা বলেন, আর ভালো ও মন্দ সমান হতে পারে না। মন্দকে প্রতিহত করো তা দ্বারা যা উৎকৃষ্টতর, ফলে তোমার ও যার মধ্যে শত্রুতা রয়েছে সে যেন হয়ে যাবে তোমার অন্তরঙ্গ বন্ধু।’ (সুরা হামিম আস সাজদা: ৩৪)
আবু সাঈদ খুদরি (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘তোমাদের মধ্যে কেউ কোনো অন্যায় দেখলে তা সে তার হাত দ্বারা প্রতিহত করবে, যদি তা সম্ভব না হয় তবে মুখ দ্বারা প্রতিহত করবে, তাও যদি না করতে পারে তাহলে অন্তর দিয়ে তা ঘৃণা করবে। আর এ হচ্ছে (অন্তর দিয়ে প্রতিহত করা) দুর্বলতম ঈমান।’ (সহিহ মুসলিম: ৪৯)
অন্যায়ের প্রতিবাদ করার ক্ষমতা থাকা সত্ত্বেও যারা অন্যায় কাজে বাধা দেয় না এবং প্রতিবাদ করে না, তাদের জন্য ইহকাল ও পরকালে কঠিন শাস্তি রয়েছে।
আবু বকর (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসুল (সা.)-কে বলতে শুনেছি, ‘যদি মানুষ কোনো মন্দ কাজ দেখে এবং তা প্রতিরোধ না করে, তবে আল্লাহ শিগগিরই তাদের সবাইকে শাস্তির সম্মুখীন করবেন।’ (তিরমিজি: ২১৬৮)
লেখক: ইসলামবিষয়ক গবেষক