Ajker Patrika
হোম > ইসলাম

সুলতান সালাহুদ্দিন আইয়ুবির আল-আকসা জয়ের গল্পগাথা

কাউসার লাবীব

সুলতান সালাহুদ্দিন আইয়ুবির আল-আকসা জয়ের গল্পগাথা
ছবি: সংগৃহীত

কাবাঘরের ৪০ বছর পর নির্মিত হয় মসজিদুল আকসা। প্রতিষ্ঠার পর থেকে সব নবীর যুগেই এই মসজিদের গুরুত্ব ছিল অপরিসীম। আল্লাহর নবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর মাধ্যমে পৃথিবীতে ইসলামের আগমন ঘটে। ইসলামেও মসজিদুল আকসাকে রাখা হয় অনন্য উচ্চতায়। একসময় মুসলমানদের কিবলাও ছিল এই মসজিদ। ইসলামের ইতিহাসে দ্বিতীয় খলিফা হজরত ওমর (রা.)-এর শাসনামলে ৬৩৭ খ্রিষ্টাব্দে রোমানদের কাছ থেকে প্রথমবারের মতো বায়তুল মুকাদ্দাস বা মসজিদুল আকসা মুসলমানদের হাতে আসে। এরপর দীর্ঘ ৫০০ বছর এই পবিত্র ভূমি মুসলমানদের অধীনে ছিল। ১০৯৯ সালে মুসলমান শাসকদের অন্তর্কোন্দলের সুযোগে খ্রিষ্টান ক্রুসেডররা বায়তুল মুকাদ্দাস দখল করে নেয়। এ সময় তারা ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ চালায় এবং ৭০ হাজার মুসলমানকে হত্যা করে। এরপর প্রায় ৯০ বছর তারা এই ভূমি শাসন করে।

ইতিহাসের এক মহানায়ক সুলতান সালাহুদ্দিন আইয়ুবি। তাঁর হাত ধরেই মুসলমানরা আবার ফিরে পেয়েছিল ঐতিহাসিক আল-আকসা মসজিদ। এর মাধ্যমেই তিনি সমগ্র বিশ্বে পরিচিতি লাভ করেন। পশ্চিমা বিশ্ব তাঁকে ডাকে সালাদিন নামে। তাঁর পুরো নাম আবু নাসির সালাহুদ্দিন ইউসুফ ইবনে আইয়ুব। ১১৩৭ সালে তিনি জন্মগ্রহণ করেন ইরাকের তিকরি নগরীতে। তিনি আইয়ুবীয় রাজবংশের প্রতিষ্ঠাতা। তাঁর সালতানাতে মিসর, সিরিয়া, মেসোপটেমিয়া, হেজাজ, ইয়েমেন ও উত্তর আফ্রিকার অন্যান্য অংশ অন্তর্ভুক্ত ছিল।

ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

মহাবীর সালাহুদ্দিন আইয়ুবির দীর্ঘদিনের স্বপ্ন ছিল পবিত্র ভূমি জেরুজালেম ক্রুসেডরদের হাত থেকে রক্ষা করা। এ জন্য তিনি নানাভাবে কাজ করতে থাকেন। ১২ শতকে তিনি মিসরের শাসনভার হাতে পেয়ে মুসলিম শাসনাধীন অঞ্চলগুলো ঐক্যবদ্ধ করতে শুরু করেন। ধীরে ধীরে বিশাল ইসলামি সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠা করেন। এরপর ১১৮৭ সালে আসে সেই মাহেন্দ্রক্ষণ। সুলতান সালাহুদ্দিন মসজিদুল আকসা দখলমুক্ত করার জন্য জেরুজালেম অবরোধ করেন। এই অবরোধ চলে ১২ দিন পর্যন্ত। অবশেষে ক্রুসেডররা আত্মসমর্পণ করে। বিনা রক্তপাতে সুলতান সালাহুদ্দিন আইয়ুবি পবিত্র ভূমি জেরুজালেম জয় করেন।

ঐতিহাসিক এই জয়ের পর মসজিদুল আকসায় প্রবেশ করে মহাবীর সালাহুদ্দিন আইয়ুবি জুমার নামাজ আদায় করেন। আল-আকসার সার্বিক পরিবেশ পরিদর্শন শেষে তিনি ব্যাপক সংস্কারে হাত দেন। সিরিয়ায় নুরুদ্দিন জেনকির জীবদ্দশায় হাতির দাঁত ও কাঠ দিয়ে তৈরি মিম্বর স্থাপন করেন। দামি কার্পেট বিছানোর ব্যবস্থা করেন। প্রায় ৯ দশক পর ইসলামের তৃতীয় গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা মসজিদুল আকসায় উচ্চারিত হয় আজানের ধ্বনি। কুব্বাতুস সাখরায় স্থাপন করা ক্রুশ চিহ্ন ভেঙে ফেলা হয়। জেরুজালেম নগরীর প্রাচীরে প্রাচীরে উড্ডীন করা হয় কালিমাখচিত পতাকা।

ইমান ও ধর্মীয় দায়িত্ববোধের জায়গা থেকে জেরুজালেম জয়ের পর মহাবীর সালাহুদ্দিন আইয়ুবি মহানুভবতার অনুপম দৃষ্টান্ত স্থাপন করেন। পুরো জেরুজালেমের খ্রিষ্টান বসতিদের সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা করেন। নির্ধারিত মুক্তিপণের বিনিময়ে তাদের ৪০ দিনের মধ্যে জেরুজালেম ত্যাগের সুযোগ দেন। অনেককে দারিদ্র্যের কারণে মুক্তিপণ ছাড়াই মুক্ত করে দেন।

বিপদ দিয়ে আল্লাহ পরীক্ষা করেন

তওবার নামাজ যেভাবে আদায় করবেন

ঋণমুক্তির জন্য যে দোয়া শিখিয়েছেন নবীজি

সুখময় পরিবার গঠনে ইসলামের ৪ নির্দেশনা

জুমার দিন সুরা কাহাফ পাঠের ফজিলত

এআই দিয়ে ঘিবলি স্টাইল কার্টুন তৈরির বিধান

৭০০ বছরের পুরোনো ১৩ মিটার লম্বা তসবি

পাপ মুছে দেয় ‘তাহিয়্যাতুল অজু’

চোখ আল্লাহর এক অপূর্ব নিয়ামত

সোমবার রোজা রাখার ফজিলত