হোম > ইসলাম

উত্তর আফ্রিকার রমজান ঐতিহ্য

ইজাজুল হক

পবিত্র রমজান মাসকে কেন্দ্র করে বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলে, বিভিন্ন ধরনের সংস্কৃতি গড়ে উঠেছে। এসব সংস্কৃতি সেখানকার মানুষের প্রাত্যহিক জীবনের সঙ্গে গভীরভাবে সম্পর্কিত। তাদের জীবনযাপন, খাদ্যাভ্যাস, ধর্মচর্চা থেকে শুরু করে অনেক কিছুই জানা যায় এসব আচার-অনুষ্ঠান থেকে। উত্তর আফ্রিকার দেশগুলো এ ক্ষেত্রে বিশেষ বৈশিষ্ট্যের অধিকারী। তাদের কথা লিখেছেন ইজাজুল হক

মরক্কো
মরক্কোর অন্যতম রমজান ঐতিহ্য হলো—বিগহাউস। বিগহাউস সংস্কৃতি হলো, পরিবারের বিবাহিত সদস্যরা রমজানের শুক্রবারে একটি মিলনমেলার আয়োজন করেন, যা পারস্পরিক হৃদ্যতা বাড়াতে সহযোগিতা করে। তাঁদের আরেকটি সুন্দর ঐতিহ্য হলো, যখন পরিবারে শিশুরা প্রথম রোজা রাখতে শুরু করে, তখন মা-বাবা তাদের জন্য দুধ, খেজুর, শুকনো ফল ও অন্যান্য সুস্বাদু উপাদানের সমন্বয়ে একটি বিশেষ ইফতার পার্টির আয়োজন করেন।

মরক্কোয় ১৫ রমজান বিশেষভাবে পালিত হয়। এ দিনে মসজিদে মুসল্লিরা ভিড় করেন এবং কোরআন তিলাওয়াত করেন। নারীরা মিষ্টান্ন তৈরি করে রোজাদার ও দরিদ্রদের মাঝে বিতরণ করেন।

শবে কদরও সাড়ম্বরে উদ্‌যাপন করেন তাঁরা। এ উপলক্ষে তারা ঐতিহ্যবাহী পোশাক পরিধান করেন এবং ঘোড়দৌড় প্রতিযোগিতার আয়োজন করেন। 
খেজুর ও দুধ দিয়ে ইফতার শুরু করেন মরক্কানরা। মাগরিবের পর তাঁরা ঐতিহ্যবাহী স্যুপ হারিরা পরিবেশন করেন। তারাবির নামাজের পর পরিবেশন করা হয় তাজিন ও কুসকুস ইত্যাদি ভারী খাবার। 

তিউনিসিয়া
মরক্কানদের মতো তিউনিসিয়ানরাও খেজুর ও দুধ দিয়ে ইফতারের ভোজন শুরু করেন। ইফতারের সময় তাঁরা বলেন, ‘সেহাত শরবেতকম’, যার অর্থ ‘স্বাস্থ্য ও সুস্থতা’। তিউনিসিয়ার প্রধানতম ভারী খাবার ‘তাজিন’, যা মরক্কোর তাজিন থেকে কিছুটা আলাদা। ‘রাফিস’ এখানকার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ মিষ্টান্ন, যা খেজুর, কিশমিশ ও চিনির সঙ্গে চাল বা ময়দা মিশিয়ে তৈরি করা হয়। দেশটির উত্তর-পশ্চিমে ময়দা, ঘি ও মধু দিয়ে ‘পোরিজ’ নামের বিশেষ এক রেসিপি তৈরি করা হয়। উপকূল এলাকায় কিশমিশ দিয়ে পায়েস তৈরি হয়। সবজি দিয়ে তৈরি ‘ব্যারাকুচে’ নামের একটি মিষ্টান্নও সেখানে পাওয়া যায়। 

আলজেরিয়া
পরিবারের শিশুরা প্রথম রোজা রাখতে শুরু করলে আলজেরিয়ানরা তা বিশেষভাবে উদ্‌যাপন করে। নারীরা নতুন পোশাক পরে রানি সাজেন। ইফতারের সময় শিশুদের উঁচু স্থানে বসানো হয় এবং প্রশংসা করে তাদের উৎসাহ দেওয়া হয়। ২৭ রমজান রাতে অনেক আলজেরিয়ান পরিবার ছেলেদের খতনা করাতে পছন্দ করে।

হারিরা নামের স্যুপটি মরক্কানদের মতো আলজেরিয়ানদেরও অন্যতম মৌলিক খাদ্য। শুকনো বরই, কিশমিশ, গোলাপজল ও মাংস দিয়ে তৈরি করা হয় বিশেষ ‘সুইট মিট’। ‘বারবোচে’ নামের একটি কুসকুস-জাতীয় খাবারও তাঁরা পরিবেশন করেন। এ ছাড়া রয়েছে বোরাক ও তাজিনের মতো মিষ্টান্নও। সাহরিতে তাঁরা সাধারণত কুসকুস পরিবেশন করেন। মিসর
মিসরের বাসিন্দারা পবিত্র রমজান সর্বাত্মকভাবে উদযাপন করেন। রোজা, ইবাদত ও দাতব্যকাজে নিজেদের উজাড় করে দেন; বিশেষ করে সাহরি ও ইফতারের ঐতিহ্যবাহী ভোজন, রমজান উপলক্ষে টেলিভিশনগুলোর বিশেষ আয়োজন, ফুটবল টুর্নামেন্টসহ বিভিন্ন সামাজিক অনুষ্ঠানে কাটে তাঁদের রমজান। পুরোনো দিনের ঐতিহ্যবাহী সংগীত, বিশেষ লন্ঠনের বর্ণিল আলোকসজ্জা এবং ইফতারের সময় কামান দাগানোর সংস্কৃতি—এলমাদফা মুগ্ধ করার মতো সংস্কৃতি। এ ছাড়া সাহরির সময় দফ বাজিয়ে রোজাদারদের জাগিয়ে দেওয়া হয়; যাকে মেসাহারাতি বলা হয়।

সূত্র: ডেইলি নিউজ ইজিপ্ট

হালাল-হারাম নিয়ে সংশয় থাকলে করণীয়

আসরের নামাজ যে কারণে গুরুত্বপূর্ণ

কোরআন জীবনের অপরিহার্য অনুষঙ্গ

রমজানের প্রস্তুতি শুরু হোক এখনই

মুসলিম ঐতিহ্যে টুপির গুরুত্ব

ব্যবসা-বাণিজ্যে নিষিদ্ধ ৮ কাজ

নামাজে সতর ঢাকা সম্পর্কে সতর্কতা

সীমান্ত পাহারা দেওয়া শ্রেষ্ঠতম ইবাদত

কবরে যে ২ গুনাহের শাস্তি দেওয়া হবে

মুমিনের চমৎকার ৪ চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য

সেকশন