মাহমুদ হাসান ফাহিম
পবিত্র কোরআন, হাদিস শরিফ ও প্রিয় নবী (সা.)-এর আলোকিত জীবনের দিকে তাকালে সহজেই বোঝা যায়, ইসলামে অধিক হারে সম্পদ সঞ্চয় এবং সম্পদের পাহাড় নির্মাণকে উৎসাহিত করা হয়নি। বরং অকৃপণ হয়ে ব্যয় করা এবং মানুষের জন্য সম্পদ ব্যয় করতেই বেশি উৎসাহ দেওয়া হয়েছে। অবশ্য স্বাভাবিক সাদাসিধে জীবনযাপনের প্রয়োজনীয় ভরণপোষণের জন্য প্রয়োজনীয় সঞ্চয়ে ইসলাম আপত্তি করে না।
অধিক হারে সম্পদ সঞ্চয়কে পবিত্র কোরআনে বিভিন্নভাবে নিরুৎসাহিত করা হয়েছে। কোরআনে একে পরকালে বঞ্চিত হওয়ার কারণ আখ্যা দেওয়া হয়েছে। এরশাদ হয়েছে, ‘প্রাচুর্যের প্রতিযোগিতা তোমাদের মোহাচ্ছন্ন করে রাখে, কবরে উপনীত হওয়া পর্যন্ত। এটা মোটেই কাম্য নয়।...’ (সুরা তাকাসুর: ১-৩) অন্যত্র এসেছে, ‘দুর্ভোগ তার জন্য, যে সামনে ও পেছনে মানুষের নিন্দা করে; যে অর্থ জমায় ও তা বারবার গণনা করে। সে ধারণা করে, তার অর্থ তাকে অমর করে রাখবে। কখনো নয়। সে অবশ্যই নিক্ষিপ্ত হবে হুতামা তথা জাহান্নামে।’ (সুরা হুমাজা: ১-৯)
নবীজির অনাড়ম্বর জীবনের দিকে তাকালেও দেখা যায়, তিনি সম্পদের প্রতি কখনোই লালায়িত ছিলেন না। হজরত আয়েশা (রা.) বর্ণনা করেন, ‘রাসুল (সা.) দুনিয়া থেকে বিদায় নিয়েছেন অথচ (জীবদ্দশায়) একই দিনে জয়তুন তেল দিয়ে পেট ভরে দুইবার রুটি খাননি।’ (মুসলিম: ৭১৮৪; কানজুল উম্মাল: ১৮৬০৮)
নবীজির ক্ষুধা ও অর্থ দৈন্য সম্পর্কে হজরত ওমর (রা.) বলেছেন, ‘আমি রাসুলুল্লাহ (সা.)-কে দেখেছি, ক্ষুধায় বাঁকা হয়ে পুরো দিন পার করেছেন। উদরপূর্ণ করার মতো নিম্নমানের খেজুরও ঘরে ছিল না।’ (মুসলিম: ১৭৯২) এই ছিল নবীজির সাদামাটা জীবন।
মাহমুদ হাসান ফাহিম, শিক্ষক ও ইসলামবিষয়ক গবেষক