আরবি ইতিকাফ শব্দের অর্থ অবস্থান করা। শরিয়তের পরিভাষায়, পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ জামাতসহকারে নিয়মিত আদায় করা হয় এমন মসজিদগুলোয় আল্লাহর ইবাদতের উদ্দেশ্যে নিয়তসহ অবস্থান করাকে ইতিকাফ বলে। মাহে রমজানের শেষ ১০ দিন ইতিকাফ করা সুন্নতে মুয়াক্কাদা কিফায়া। অর্থাৎ মহল্লার কয়েকজন আদায় করলে সবার পক্ষ থেকে আদায় হয়ে যাবে। কিন্তু কেউই আদায় না করলে সবাই গুনাহগার হবে। তাই রমজানের শেষ দশক শুরু হওয়ার আগেই প্রতি মহল্লা থেকে অন্তত একজন মানুষ যেন ইতিকাফে বসেন, সে বিষয়ে মহল্লার আলেম-ওলামাসহ সবার খেয়াল রাখা চাই।
ইতিকাফকারীকে রমজানের ২০তম দিনের সূর্য ডোবার আগেই নিয়ত করে মসজিদে প্রবেশ করতে হবে। এ জন্য আগেভাগেই প্রস্তুত হওয়া উচিত। রমজানের শেষ দশকের কাজকর্ম আগেই সম্পাদন করা উচিত। পরিবারের দায়িত্ব থাকলে তা আদায় করা, বাজারসদাই করে দেওয়া, ১০ দিনের আয়-রোজগার আগেই প্রস্তুত রাখতে হবে, যাতে ইতিকাফের সময় পরিবারের লোকজন কোনো ধরনের সমস্যায় না পড়ে।
এ ছাড়া ইতিকাফের জন্য ব্যক্তিগত প্রস্তুতিগুলো আগেই সেরে নেওয়া উচিত। শারীরিক পরিচ্ছন্নতা অর্জন, কাপড়চোপড় ধোয়া এবং অন্যান্য ব্যক্তিগত কাজ সেরে নেওয়া গুরুত্বপূর্ণ। মনে রাখতে হবে, ইতিকাফে বসা হয় পার্থিব সব ব্যস্ততা থেকে মুক্ত হয়ে ১০টি দিন নিভৃতে আল্লাহর ইবাদত করার জন্য। তাই এ সময়ে অন্য কোনো কাজ করা অনুচিত।
রমজানের সুন্নত ইতিকাফ শুদ্ধ হওয়ার তিনটি শর্ত রয়েছে, যা প্রত্যেক ইতিকাফকারীকে মেনে চলতে হবে। এক. মসজিদে অবস্থান করা; তবে নারীরা নিজ নিজ বাড়িতে ইতিকাফ করবে। দুই. গোসল ফরজ হলে শরীর পবিত্র করে নেওয়া। তিন. রোজা রাখা।
ইতিকাফের রয়েছে অনন্য ফজিলত। হাদিসে মহানবী (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি রমজান মাসের শেষ ১০ দিন ইতিকাফ করবে, তাকে দুটি হজ ও দুটি ওমরাহর সওয়াব দান করা হবে।’ (শুআবুল ইমান) তাই সবার উচিত, সম্ভব হলে প্রতিবছর রমজানের শেষ ১০ দিন ইতিকাফ করা। রোজা ফরজ হওয়ার পর থেকে মহানবী (সা.) এ আমল কখনো ত্যাগ করেননি।