মুফতি আবু দারদা
পবিত্র আশুরার দিনে রোজা রাখা মহানবী (সা.)-এর সুন্নত। হাদিসে এসেছে, মহানবী (সা.) মদিনায় যাওয়ার পর দেখলেন, ইহুদিরা আশুরার দিনে রোজা রেখেছে। কারণ জিজ্ঞেস করলে তারা বলল, এই দিন ফেরাউনের নির্যাতন থেকে আল্লাহ মুসা (আ.)-কে মুক্তি দিয়েছিলেন এবং ফেরাউনকে সদলবলে লোহিত সাগরে ডুবিয়ে মেরেছিলেন। এই ঘটনার কৃতজ্ঞতা জানাতেই তারা রোজা রাখছে। এটা শুনে মহানবী (সা.) মুসলমানদেরও রোজা রাখার আদেশ দেন। (বুখারি ও মুসলিম)
পবিত্র কোরআনের বিভিন্ন জায়গায় আল্লাহ তাআলা মুসা (আ.) ও ফেরাউনের আলোচনা এনেছেন। ফেরাউন ছিল অত্যাচারী, অহংকারী ও আল্লাহর অবাধ্য শাসক। আল্লাহ তাআলা মুসা (আ.)-কে একত্ববাদের দাওয়াত নিয়ে তাঁর কাছে পাঠিয়েছিলেন। এরশাদ হচ্ছে, ‘ফেরাউনের কাছে যাও। সে সীমালঙ্ঘন করেছে।’ (সুরা নাজিয়াত: ১৭)
মুসা (আ.) তাঁকে আল্লাহর প্রতি ইমান আনার দাওয়াত দিলেন। আল্লাহর বিভিন্ন নিদর্শন দেখাতে লাগলেন। কিন্তু সে তা সবই অস্বীকার করল। যেমন পবিত্র কোরআনে এরশাদ হয়েছে, ‘সে মিথ্যাজ্ঞান করল এবং অবাধ্য হলো। এরপর সে ফাসাদ করার চেষ্টায় পেছনে ফিরে গেল। সবাইকে একত্র করে ডাক দিল আর বলল, ‘আমিই তোমাদের সেরা পালনকর্তা।’ (সুরা নাজিয়াত: ২১-২৪)
এভাবে চূড়ান্তভাবে অবাধ্য হয়ে গেলে আল্লাহ তাআলা ফেরাউনকে পাকড়াও করলেন। পবিত্র কোরআনে এরশাদ হয়েছে, ‘ফেরাউন ও তার বাহিনী জমিনে অন্যায় অহমিকা প্রদর্শন করেছিল। তারা মনে করেছিল তাদের আমার কাছে ফিরে আসতে হবে না। সুতরাং আমি তাকে ও তার সৈন্যদের পাকড়াও করলাম এবং সাগরে নিক্ষেপ করলাম। এবার দেখ, জালিমদের পরিণতি কী হয়ে থাকে।’ (সুরা কাসাস: ৩৯-৪০)
অন্য আয়াতে এসেছে, ‘আমি বনি ইসরাইলকে সাগর পার করিয়ে দিলাম। তখন ফিরাউন ও তার বাহিনী জুলুম ও সীমালঙ্ঘনের জন্য তাদের পিছু নিল। অবশেষে যখন সে ডুবে মরার সম্মুখীন হলো, তখন বলতে লাগল, আমি স্বীকার করলাম, বনি ইসরাইল যে আল্লাহর প্রতি ইমান এনেছে, তিনি ছাড়া কোনোও ইলাহ নেই এবং আমিও অনুগতদের অন্তর্ভুক্ত। (তখন উত্তর দেওয়া হলো) এখন ইমান আনছ? অথচ এর আগে তো তুমি অবাধ্যতা করেছ এবং তুমি অশান্তি সৃষ্টিকারীদের অন্তর্ভুক্ত ছিলে।’ (সুরা ইউনুস: ৯০-৯১)
লেখক: ইসলামবিষয়ক গবেষক