Ajker Patrika
হোম > ইসলাম

আবু বকর (রা.)-এর আমলে বিচারব্যবস্থা

আমজাদ ইউনুস 

আবু বকর (রা.)-এর আমলে বিচারব্যবস্থা

ইসলামের প্রথম খলিফা আবু বকর (রা.)-এর বিচারব্যবস্থা রাসুল (সা.)-এর যুগের অনুসৃত বিচারব্যবস্থারই বাস্তব নমুনা ছিল। বিচারের জন্য আলাদা কোনো মন্ত্রণালয় ছিল না। তাঁর আমলে বিচারিক কাজে এবং বিচারে যেসব সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, এগুলো পরবর্তীদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ এবং অনুসরণীয় হয়ে আছে।

খলিফা আবু বকর (রা.)-এর শাসনামলে বিচারব্যবস্থা প্রশাসন থেকে আলাদা ছিল না। আবু বকর (রা.) একাই ছিলেন খলিফা ও বিচারক। তবে সব সময় তিনি বিচারের কাজ করতে পারতেন না। মদিনায় বিচারকার্য পরিচালনার জন্য তাঁর সাহায্যের প্রয়োজন হতো। রাসুল (সা.)-এর যুগের তুলনায় বিচারপ্রার্থীর সংখ্যা অনেক বেড়ে গিয়েছিল। এ জন্য তিনি ওমর (রা.)কে মদিনায় বিচারক হিসেবে নিয়োগ দিয়েছিলেন। আবু বকর (রা.) ছিলেন প্রথম বিচারক এবং ওমর (রা.) ছিলেন দ্বিতীয় বিচারক। মদিনার বাইরে তিনি গভর্নর এবং বিচারক পদে অনেককে নিয়োগ দিয়েছিলেন। তাঁদের বেশির ভাগকেই রাসুল (সা.) স্বয়ং সেসব কাজে নিয়োগ দিয়েছিলেন।

রাসুল (সা.)-এর জীবদ্দশায় বিচারব্যবস্থায় প্রয়োজনীয় আইনের পরিমাণ ছিল অনেক কম। কোরআন, সুন্নাহ এবং রাসুল (সা.)-এর নৈতিক আদেশ। তখনো ওহি নাজিল হচ্ছিল। এ জন্য সাহাবিরা নিজেদের চিন্তা-ভাবনার ওপর নির্ভর করেননি। কিন্তু রাসুল (সা.)-এর মৃত্যুর পর পরিস্থিতি বদলে যায়। বিচারব্যবস্থায় নতুন নতুন ইস্যু তৈরি হয় এবং আইনের নতুন উৎসের সৃষ্টি হয়। এ জন্য আবু বকর (রা.) কোরআন ও সুন্নাহর পাশাপাশি ইজমা ও কিয়াসকে মূলনীতি হিসেবে গ্রহণ করেন।

কোনো বিচার এলে প্রথমে আবু বকর (রা.) পবিত্র কোরআনে এর সমাধান খুঁজতেন। কোরআনে নির্দেশ পেয়ে গেলে সে অনুযায়ীই বিচার করতেন। আর সুনির্দিষ্ট কোনো নির্দেশনা না পেলে তিনি সুন্নাহ তালাশ করতেন। রাসুল (সা.)-এর জীবদ্দশায় বিভিন্ন বিচারকার্যে নেওয়া সিদ্ধান্তসমূহ সামনে রাখতেন।

সেখানে সমাধান পেয়ে গেলে সে অনুযায়ীই বিচার করতেন। সুন্নাহতে কোনো সমাধান না পেলে তখন অন্যান্য সাহাবিকে সে বিষয়ে কোনো সমাধান দিতে দেখেছেন কি না, জিজ্ঞেস করতেন। কেউ জেনে থাকলে তিনি সমাধান বলে দিতেন। আবু বকর (রা.) সেভাবেই বিচার করতেন এবং বলতেন, ‘সব প্রশংসা আল্লাহ তাআলার, যিনি আমাদের মধ্যে এমন একজনকে দিয়েছেন, যে রাসুল (সা.)-এর কাছ থেকে এটা মনে রেখেছে।’ তেমন কাউকে না পেলে সমসাময়িক বিজ্ঞ সাহাবিদের একত্র করতেন এবং তাঁদের সঙ্গে আলোচনা করে যে সিদ্ধান্তে উপনীত হতেন, তা অনুসরণ করতেন। সেভাবেই ফায়সালা দিতেন। কোনো ব্যাপারে সুনির্দিষ্টভাবে কোরআন, সুন্নাহ ও ইজমা না পেলে তিনি ব্যক্তিগত অভিমত ও বিশ্লেষণ (কিয়াস) প্রয়োগ করতেন।

দৈহিক শাস্তি প্রদানের ক্ষেত্রে তিনি অত্যন্ত সতর্ক ছিলেন। নিশ্চিত প্রমাণ ছাড়া তিনি শাস্তি প্রয়োগ করতেন না। আবু বকর (রা.) বলেন, ‘যদি কাউকে দেখতাম যে তার জন্য দৈহিক শাস্তি প্রাপ্য, তখন নিশ্চিত প্রমাণ না পাওয়া পর্যন্ত তার বিরুদ্ধে শাস্তি প্রয়োগ করতাম না। ন্যূনতম একজন হলেও সাক্ষীর ওপর নির্ভর করতাম।’

দুর্বলকে বাঁচানোই ছিল তাঁর বিচারব্যবস্থার প্রধান লক্ষ্য-উদ্দেশ্য। পাশাপাশি নির্যাতিতকে সুবিচার দিতেন। দেশের প্রতিটি নাগরিককে সমান অধিকার দেওয়া এবং সমাজের ধনীদের আলাদা দৃষ্টিতে না দেখার প্রতি গভীর মনোযোগ রাখতেন। 

লেখক: অনুবাদক

ইমাম বুখারি: বিশুদ্ধ হাদিস সংকলনের শ্রেষ্ঠ কারিগর

দোলনায় যে শিশু মায়ের বিরোধিতা করেছিল

রোজাদারদের ইফতার করালে যে সওয়াব

চাঁদ দেখা গেছে, কাল থেকে রোজা শুরু

যে ৫ শর্তে রমজানের রোজা রাখা ফরজ

তারাবির নামাজ আদায়ে যত সওয়াব

রমজানের চাঁদ দেখা গেছে, সৌদিতে শনিবার থেকে রোজা

খোশ আমদেদ মাহে রমজান

আরব বিশ্বে রমজানের ৬ ঐতিহ্য

রমজানের দিনগুলো যেভাবে কাটাবেন