দান-সদকা অত্যন্ত মর্যাদাপূর্ণ আমল। এই আমল মানুষকে আত্মিক পরিশুদ্ধি ও সামাজিক ভারসাম্যের দিকে নিয়ে যায়। দান গরিব-দুঃখীর কষ্ট লাঘব করে, সমাজে সহমর্মিতা গড়ে তোলে, ধনীর সম্পদে বরকত আনে এবং বিপদ-আপদ দূর করে। আনাস ইবনে মালিক (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘তোমরা অতিসত্বর দানের দিকে ধাবিত হও, কেননা বিপদ-আপদ দানকে অতিক্রম করতে পারে না।’ (শু’আবুল ইমান: ৩০৮২)। অন্য হাদিসে এসেছে, ‘নিশ্চয়ই সদকা অপমৃত্যু রোধ করে।’ (সুনানে তিরমিজি: ৬৬৪)
ইবনুল কাইয়ুম (রহ.) বলেন, বিপদ-আপদ প্রতিহতের ক্ষেত্রে সদকার বিশেষ প্রভাব আছে। এমনকি কোনো পাপাচার, জালিম কিংবা কাফেরও যদি দান করেন, আল্লাহ তার বিপদ দূর করে দেন। আর যুগ যুগ ধরে এটা পরীক্ষিত সত্য। (আল-ওয়াবিলুস সাইয়িব: ১ / ৩৮)
দান-সদকার পুরস্কারের বর্ণনা পবিত্র কোরআনে এসেছে এভাবে, ‘নিশ্চয় দানশীল পুরুষ-নারীগণ এবং যারা আল্লাহকে ঋণ দেয়-উত্তম ঋণ, তাদের জন্য তা বহুগুণ বাড়িয়ে দেওয়া হবে। আর তাদের জন্য রয়েছে সম্মানজনক প্রতিদান।’ (সুরা হাদিদ: ১৮)। আল্লাহ তাআলা আরও বলেন, ‘যারা নিজের সম্পদ দিনে বা রাতে, প্রকাশ্যে অথবা গোপনে আল্লাহর পথে খরচ করে—সেই দানের পুরস্কার তাদের প্রতিপালকের কাছে রয়েছে। তাদের কোনো ভয় নেই, তারা চিন্তিতও হবে না। (সুরা বাকারা: ২৭৪)
আমাদের নবী করিম (সা.) ছিলেন মানুষের মাঝে সর্বশ্রেষ্ঠ দানশীল। (সহিহ্ বুখারি: ৬)। তিনি নিজেও দান-সদকা করেছেন এবং সাহাবিদেরও উৎসাহিত করেছেন। তিনি বলেছেন, ‘কেউ হালাল উপার্জন থেকে দান করলে আল্লাহ নিজে সেই দান গ্রহণ করেন এবং তা উত্তমরূপে সংরক্ষণ করেন। একসময় সেই দানের সওয়াব পাহাড়তুল্য হয়ে যায়।’ (সহিহ্ মুসলিম)। আল্লাহর নবী আরও বলেছেন, ‘যে মুমিন অন্য বিবস্ত্র মুমিনকে কাপড় পরিয়ে দিল, মহান আল্লাহ ওই ব্যক্তিকে জান্নাতের সবুজ কাপড় পরিয়ে দেবেন। (সুনানে তিরমিজি: ২৪৪৯)