আপনার জিজ্ঞাসা
মুফতি ইশমাম আহমেদ
প্রশ্ন: জাদুটোনার কারণে কি মানুষের ক্ষতি হতে পারে? এর ক্ষতি থেকে বাঁচার কোনো আমল আছে কি? ইসলামের আলোকে জানতে চাই।
সাদিয়া শাহরীন, ঢাকা
উত্তর: জাদুটোনা করা বা জাদুবিদ্যার চর্চা করা ইসলামের দৃষ্টিতে বড় গুনাহের কাজ। কাউকে কষ্ট দেওয়ার জন্য তা করলে তা আরও বড় গুনাহ। ইসলামে এমন অপরাধীদের কঠিন শাস্তির বিধান রয়েছে। তবে ইসলামি বিশ্বাস মতে, জাদুটোনার মাধ্যমে মানুষের ক্ষতি হতে পারে। তা থেকে রক্ষা পেতে হাদিসে অনেক আমল বর্ণিত হয়েছে।
মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) নিজেই এক দুষ্টু ব্যক্তির জাদুতে আক্রান্ত হয়েছিলেন। তখন তিনি অনেক কিছু ভুলে যেতেন। পরে আল্লাহ তাআলা অহির মাধ্যমে তাঁকে তা জানিয়ে দেন। রাসুল (সা.) এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘হে আয়েশা, আমি যে ব্যাপারে জানতে চেয়েছিলাম, সে বিষয়ে আল্লাহ আমাকে জানিয়ে দিয়েছেন। (আমি স্বপ্নে দেখলাম) আমার কাছে দুজন লোক (ফেরেশতা) এল। একজন বসল আমার পায়ের কাছে এবং আরেকজন মাথার কাছে। পায়ের কাছে বসা ব্যক্তি মাথার কাছে বসা ব্যক্তিকে জিজ্ঞাসা করল—এ ব্যক্তির অবস্থা কী? সে বলল—তাঁকে জাদু করা হয়েছে। সে আবার জিজ্ঞাসা করল—তাঁকে কে জাদু করেছে? সে বলল—লাবিদ বিন আসাম। সে আবার জিজ্ঞাসা করল—কিসের মধ্যে? সে বলল—নর খেজুরগাছের খোসার ভেতরে তাঁর চিরুনির এক টুকরা ও আঁচড়ানো চুল ঢুকিয়ে দিয়ে “জারওয়ান” কূপের মধ্যে একটা পাথরের নিচে রেখেছে।’ (বুখারি: ৬০৬৩)
নাসায়ির বর্ণনায় এসেছে, রাসুলুল্লাহ (সা.) যখন কূপের ভেতর থেকে জাদুর উপকরণগুলো বের করলেন, তখন তার ভেতর একটি সুতা পাওয়া গেল, যাতে ১১টি গিঁট ছিল। জিবরাইল (আ.) সুরা নাস ও ফালাকের একেকটি আয়াত পড়ছিলেন এবং একেকটি গিঁট খুলে যাচ্ছিল। সব গিঁট খুলে যাওয়ার পর রাসুলুল্লাহ (সা.) সুস্থবোধ করতে শুরু করেন।
এই দুটি সুরা ছাড়াও এ ক্ষেত্রে সুরা ফাতিহা, আয়াতুল কুরসি, সুরা আরাফের ১০৬ থেকে ১২২ নম্বর আয়াত, সুরা ত্বহার ৬৫ থেকে ৬৯ নম্বর আয়াত, সুরা কাফিরুন, সুরা ইখলাস ও হাদিসে বর্ণিত দোয়াগুলো পাঠ করা যায়।
উত্তর দিয়েছেন, মুফতি ইশমাম আহমেদ, ইসলামবিষয়ক গবেষক