ঘর মানেই প্রশান্তি। সেই প্রশান্তি মেলে ঘরের শোভায় কিংবা নন্দনে। ছিমছাম পরিপাটি ঘর প্রত্যেক মানুষের যাপনের পরিচয় বহন করে। ব্যক্তির রুচি, অর্থনৈতিক সামর্থ্য—সব মিলিয়েই সেজে ওঠে এক-একটি ঘর। ঠিক কোথায় কোন জিনিসটা রাখলে ছোট্ট ঘরখানি খোলামেলা দেখাবে, এই নিয়ে দ্বিধাদ্বন্দ্ব প্রায় সকলের। কেমন করে ছোট্ট ঘরটি খোলামেলা রূপে সাজবে, সেই পরামর্শ দিচ্ছেন অন্দরসজ্জা বিশেষজ্ঞ সাবিহা কুমু।
কয়েকটি বিষয় মাথায় রাখলেই একটা ছোট ঘর হয়ে উঠতে পারে খোলামেলা ও সুন্দর। ঘর সাজাতে এবং ছোট ঘর খোলামেলা দেখাতে কিছু বিষয় ভাবনায় রাখা জরুরি। যেমন—
দেয়ালের রং
ঘরের দেয়ালের রংও ঘরকে খোলামেলা দেখাতে সাহায্য করে। ঘরের দেয়ালে খুব গাঢ় রং ঘরকে ছোট দেখায়। তাই ছোট্ট ঘরের দেয়ালের রং হওয়া উচিত হালকা রঙের। দু-তিনটা রঙে দেয়াল রাঙানো যাবে না। দেয়াল হতে হবে অফ হোয়াইট বা আকাশি রঙের। এতে চোখের আরাম হবে এবং ঘরে ফুটে উঠবে আলো-ঝলমলে ভাব। কারও যদি মনেই হয়, তার ঘরে থাকবে রঙের খেলা, তাহলে লিভিং রুমের যেকোনো একটি দেয়াল ওয়ালপেপারে বা পছন্দের গাঢ় রঙে সাজাতে পারেন। বাকি দেয়ালগুলো হালকা রঙের হতে হবে। শোয়ার ঘরে নীল, বেগুনি রঙের ছোঁয়া লাগাতে হলেও সেই রংটির হালকা শেড ব্যবহার করতে হবে।
অনেকেই ধুলোবালি লেগে নোংরা হওয়ার ভয়ে বা জমকালো ভাব আনতে ঘরে গাঢ় রঙের পর্দা ব্যবহার করেন। ঘর ছোট দেখানোর পেছনে এটি একটি বড় কারণ। এ কারণে ভারী বা মোটা কাপড়ের পর্দা ব্যবহার করা যাবে না। এবং ঘরের পর্দাটি প্রিন্ট না হওয়াই ভালো। এতে ঘরের ভেতরে একধরনের ভারিক্কি ভাব চলে আসবে। পর্দা হতে হবে হালকা কাপড়ের; যেমন পাতলা সুতি কাপড়, মসলিন, সিল্ক বা নেটের। ঘরে খোলামেলা ভাব আনতে এসব কাপড়ে নকশার ক্ষেত্রে জলছাপ বা এক রঙা কাপড় এবং হালকা নকশা ভালো দেখায়।
কার্পেট
ঘরের মেঝেতে অনেকেই ভারী ধরনের বড় কার্পেট বিছান। এটি না করে ছিমছাম নকশার ছোট ছোট নানা রকম র্যাগ বিছালে দেখতে সুন্দর লাগবে এবং মেঝের পরিসর বাড়বে।
অনেকেই ঘর সাজানোর জন্য নানা রকম শোপিস কিনে থাকেন। দেখতে ভালো লাগলেও ঘর সাজানোর ক্ষেত্রে পরিমিতিবোধ থাকা ভীষণ জরুরি। ছোট ঘরে প্রয়োজনের অতিরিক্ত জিনিস দিয়ে সাজাতে গেলে, ঘরের খোলামেলা ভাব নষ্ট হবে এবং ঘর দেখতে ছোটও লাগবে। ছোট ছোট মাটির, কাঠ, বেতের, কড়ির কিংবা পাথর, পিতলের শোপিস রাখতে পারেন ঘরের বিশেষ বিশেষ জায়গায়। রাখা যেতে পারে কয়েকটি ফুলদানি। যেগুলো কোনো কারণ ছাড়াই হুটহাট সেজে উঠবে তাজা ফুল পাতায়। একটি ঘরের মধ্যেই সব জিনিস এনে সাজিয়ে রাখা যাবে না। শোয়ার ঘর, বসার ঘর, বারান্দা বা অন্যান্য ঘরের সঙ্গে মানিয়ে জিনিস রাখতে হবে। এতেও ঘরখানি অনেকটা খোলামেলা হয়ে উঠবে। সৌন্দর্য ছড়াবে প্রতিদিনের যাপনে।