ঢাকা: গ্রীষ্মের দুপুরবেলা ঝাঁঝাঁ রোদ্দুর পেরিয়ে বাড়িতে অতিথি এলো। গৃহকর্ত্রী তড়িঘড়ি করে বারান্দা থেকে জলচৌকি আর তালপাতায় তৈরি হাতপাখা নিয়ে এগিয়ে দেন। ছায়ায় বসিয়ে পরম যত্নে বাতাস করতে থাকেন ক্লান্ত–শ্রান্ত অতিথিকে। লোডশেডিং ব্যতীত এই দৃশ্য আজকাল গ্রামেও দেখা যায় না।
বনেদি পরিবারগুলোয় দেখা যেত বড়সড়ো আকারের হাতপাখা। সে পাখায় বাড়ির বউয়েরা টুকটুকে লাল কাপড়ে কুঁচি তুলে ঝালর লাগাতেন নিজ হাতেই। বিকেলবেলা উঠোনে পাটি বিছিয়ে গল্প–হাসি–ঠাট্টায় মেতে এই কাজগুলো করতেন তারা। শুধু তালের পাখাই নয়, বাঁশের পাখাও অনেকে বাড়িতে তৈরি করে নিতেন।
বাঁশ চিরে পাতলা করে কেটে বুনে নিতে হতো এই পাখা বানানোর জন্য। এ ধরনের পাখার হাতলে লাগানো থাকত বাঁশ অথবা ধাতব গোলাকার একটি সিলিন্ডার। তাতে সহজে ঘোরানো যেত পাখা। শৌখিন বধূরা এই পাখার কিনারঘেঁষেও পাড় বসাতেন। অনেক সময় শাড়ির জরি–পাড় কেটে এই পাখায় বসানো হতো।
তবে কাপড়ের তৈরি পাখার ব্যবহার শহরে তেমন দেখা না গেলেও তালপাতার পাখা এখনো বিভিন্ন স্থানে কিনতে পাওয়া যায়। অনেকে ব্যবহারও করেন। তবে নান্দনিকরূপে বা দেশীয় ঘরানায় ঘর সাজাতে অনেকে তালপাতার পাখা রাখেন। সে ক্ষেত্রে ওই যে আগের মতোই পাখায় লাল ফিতে, লেস বা সিনথেটিক কাপড় লাগিয়ে পাখার গায়ে লাল, সবুজ রং দিয়ে নকশা করে দেয়ালে সাজিয়ে রাখা হয়।
তালপাতার পাখাসহ বিভিন্ন ধরনের পাখা পাওয়া যাবে আড়ং, অঞ্জন’স, কে ক্র্যাফটসহ বেশকিছু দেশীয় ফ্যাশন হাউসে। এ ছাড়াও দোয়েল চত্বর, ধানমন্ডি লেক ও আশপাশে তালের পাখা পাওয়া যায়। দারাজে পাওয়া যাবে নকশি ও বাঁশের তৈরি পাখা। দাম পড়বে ১২০ থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ ২৮০ টাকা পর্যন্ত। এসব জায়গা ছাড়াও শপিং মলের আশপাশে খোঁজ করতে পারেন তালের পাখা।