সানজিদা সামরিন, ঢাকা
পুরো দিন দাবদাহে কাটানোর পর সন্ধ্যায় যখনই বারান্দার দরজার কপাট খুললেন, বৃষ্টিভেজা বাতাসের এক ঝাপটা এসে লাগল চোখেমুখে। নিমেষেই হৃদয় ভুলতে বসল গ্রীষ্মের ঘামে ভেজা স্মৃতির কথা। কখন বৃষ্টি নামবে, এই ক্ষণ গুনতে গুনতেই ঋতুর বেদিতে আসন পাতল বর্ষা।
আজ পয়লা আষাঢ়, বর্ষার প্রথম দিন। তপ্ত রোদ্দুর থেকে এবার একটু রেহাই পাওয়ার আশা করাই যায়। আকাশে মেঘ দেখলেই মনে বেজে উঠছে সেই গান, ‘… এসো করো স্নান নবধারাজলে...’। কখনো কানে সুধা ঢালে ‘এমনও দিনে তারে বলা যায়, এমনও ঘনঘোর বরিষায়…।’
কেবল শীতলতার গল্প বললেই বর্ষার পাট চুকে যায় না। বর্ষা যে হৃদয়ে নতুন করে প্রেম জাগায়, পুরোনো প্রেমকেও করে তোলে সতেজ—এ কথা বলার অপেক্ষা রাখে না। তাই তো বর্ষার প্রথম দিনেই আলমারিতে নীল শাড়ির খোঁজ পড়ে। খোঁজ পড়ে নীল পাঞ্জাবির। বর্ষায় সাজ-সমাহার, নীলাভ রং, আবহাওয়া—সবটা মিলে হৃদয়ে প্রেমের আগমনও যেন হয় জাদুমায়া ঘেরা আগন্তুকের মতো।
বর্ষায় প্রকৃতি যেমন সেজে ওঠে নবরূপে, তেমনি রোম্যান্টিক মনও নিজেকে সাজাতে চায় বর্ষার সাজে। স্বীকার করতে না চাইলেও বিশেষ দিনগুলোতে আয়নায় আমরা নিজেদের সেভাবেই দেখি, যেভাবে প্রিয় মানুষটি আমাদের দেখতে চান। আর বর্ষায় প্রিয় মানুষটির সঙ্গে অভিসারে যাওয়া হলে ব্যাপারটা একটু ভিন্নই থাকে বৈকি! কখনো কখনো কপালের টিপ, চোখে কাজলের রেখা, যত্নে ভাঙা নীল শাড়ির ভাঁজ, গলায় বা চুলে ফুলের মালা যেন তাঁর চোখে সঁপে দেওয়ার জন্যই। উল্টো দিকে ইস্ত্রি করা কাপড়ে ঝাঁজালো সুগন্ধির পরিবর্তে একটু কোমল সুবাসই কাপড়ে মেখে নিচ্ছেন সুদর্শন তরুণ। কারণ একটাই, সে আসবে বলে। বিশেষ দিনটিতে তাকে মনে করেই যখন তৈরি হওয়া, তখন কয়েকটি কথা তো মনে রাখা চাই।
বর্ষার দিনে যদি শাড়ি পরে বের হতে চান, তাহলে উজ্জ্বল ও গাঢ় রঙের হাফ সিল্ক, শিফন, জর্জেট বা সাটিনের শাড়ি বেছে নিতে পারেন। সুতি পরতে হলে হ্যান্ডলুমের পাতলা শাড়ি পরতে পারেন। তবে সুতির পরিবর্তে এ সময় সিনথেটিক কাপড়ের ব্লাউজ পরাই ভালো। বৃষ্টিতে ভিজে গেলেও এগুলো সহজে শুকিয়ে যাবে এবং বাড়ি ফিরে শাড়ি ধুয়ে নেওয়াও সহজ।
তাই দুজনে মিলে ছাদে বা উন্মুক্ত প্রান্তরে বৃষ্টিতে ভেজার আগে এ বিষয়গুলোও মনে রাখা চাই কিন্তু!