হোম > জীবনধারা

বর্ণবৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের নেতা নেলসন ম্যান্ডেলার জন্ম

অনলাইন ডেস্ক

দক্ষিণ আফ্রিকার বর্ণবৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের নেতা ও সাবেক রাষ্ট্রপতি নেলসন ম্যান্ডেলা। দেশটির কৃষ্ণাঙ্গদের অধিকার আদায়ে নেতৃত্ব দিয়েছেন তিনি। এ জন্য দীর্ঘ ২৭ বছর কারাবরণ করতে হয় ম্যান্ডেলাকে। আজকের এই দিনে অর্থাৎ ১৯১৮ সালের ১৮ জুলাই পৃথিবীতে আসেন তিনি।

দক্ষিণ আফ্রিকার ইস্টার্ন কেপ প্রদেশের মেভেজো গ্রামের মাদিবা গোত্রে জন্ম ম্যান্ডেলার। তাঁর মায়ের নাম ননকাফি নসেকেনি এবং বাবা নকোসি মফাকানিসা গাদলা ম্যান্ডেলা। ১৯৩০ সালে ম্যান্ডেলার বয়স যখন ১২, তখন মারা যান তাঁর বাবা।

ছোটবেলাতেই কৃষ্ণাঙ্গদের অধিকার আদায়ে কিছু করার একটা ইচ্ছা মনে জেগে উঠে তাঁর। কুনুতে যখন প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভর্তি হন তখন তাঁর শিক্ষক নেলসন শব্দটি জুড়ে দেন তাঁর নামের সঙ্গে। ওই সময় সেখানকার স্কুলের সব শিক্ষার্থীকে খ্রিষ্টান নাম দেওয়াই ছিল রীতি।

ক্লার্কবেরি বোর্ডিং ইনস্টিটিউটে জুনিয়র সার্টিফিকেট সম্পন্ন করেন এবং হিল্ডটাউনে যান। সেখানকার একটি বিদ্যালয় থেকে মাধ্যমিক পাশ করেন। ফোর্ট হেয়ারের একটি ইউনিভার্সিটি কলেজে স্নাতক শুরু করেন। তবে একটি ছাত্র আন্দোলনে অংশ নেওয়ার স্কুল থেকে বহিষ্কার করা হয় তাকে।

১৯৪১ সালে জোহানেসবার্গে এসে একটি খনির নিরাপত্তা কর্মকর্তা হিসেবে কাজ শুরু করেন। ইউনিভার্সিটি অব সাউথ আফ্রিকা থেকে বিএ ডিগ্রি নেন। ১৯৪৩ সালে ফোর্ট হেয়ারে ফিরে আসেন স্নাতক সম্পন্ন করতে। একপর্যায়ে ইউনিভার্সিটি অব উইটওয়াটারসরান্ডে এএলবি পড়া শুরু করেন। তবে আর্থিক টানাপোড়েনের কারণে পড়া শেষ করতে পারেননি।

১৯৬২ সালে কারাবন্দী হওয়ার পর ইউনিভার্সিটি অব লন্ডনের মাধ্যমে আবার আইন পড়া শুরু করেন। তবে এবারও ডিগ্রি নেওয়া সম্ভব হলো না। শেষ পর্যন্ত ১৯৮৯ সালে কারাবন্দী থাকার শেষ সময়টায় ইউনিভার্সিটি অব সাউথ আফ্রিকা থেকে এলএলবি সম্পন্ন করেন।

এবার মূল প্রসঙ্গে আসা যক। ১৯৪৪ সালে নেলসন ম্যান্ডেলা যোগ দেন আফ্রিকান ন্যাশনাল কংগ্রেসে (এএনসি)। এটি দক্ষিণ আফ্রিকার কৃষ্ণাঙ্গদের সবচেয়ে পুরোনো সংগঠন। প্রথমে তিনি জোহানেসবার্গের এএনসির যুব শাখার নেতা হন। বর্ণবাদের বিরুদ্ধে অহিংস প্রতিরোধে কাজ করা ম্যান্ডেলা ১৯৫২ সালে দলটির ডেপুটি ন্যাশনাল প্রেসিডেন্ট হন। দক্ষিণ আফ্রিকার শ্বেতাঙ্গ আধিপত্য এবং জাতিগত বিচ্ছিন্নতার অবসান চেয়েছিলেন এই নেতা।

১৯৬১ সালে রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগে গ্রেপ্তার হন ম্যান্ডেলা। খালাস পেলেও ১৯৬২ সালে অবৈধভাবে দেশত্যাগের অভিযোগে পুনরায় গ্রেপ্তার হন। বিচারে দোষী সাব্যস্ত হন এবং পাঁচ বছরের সাজাপ্রাপ্ত ম্যান্ডেলাকে রোবেন দ্বীপের কারাগারে পাঠানো হয়। নাশকতার অভিযোগে ১৯৬৪ সালে আবার বিচারের মুখোমুখি হতে হয়। ১৯৬৪ সালের জুন মাসে অন্যান্য এএনসি নেতার সঙ্গে দোষী সাব্যস্ত হন এবং যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে দণ্ডিত হন ম্যান্ডেলা।

ম্যান্ডেলা তাঁর ২৭ বছরের কারাজীবনের মধ্যে প্রথম ১৮ বছর কাটান রোবেন দ্বীপের ভয়ানক কারাগারে। ছোট্ট একটি সেলে রাখা হয় তাঁকে, ছিল না কোনো বিছানা। বাধ্য করা হয়েছিল একটি পাথরের খনিতে কঠোর পরিশ্রম করতে। বাইরের জগতের সঙ্গে ছিলেন প্রায় যোগাযোগবিচ্ছিন্ন। প্রতি ছয় মাসে একটি চিঠি লিখতে পারতেন। তেমনি এই সময়ের মধ্যে একটি চিঠি পেতে পারতেন। বছরে একবার তাঁকে ৩০ মিনিটের জন্য একজন দর্শনার্থীর সঙ্গে দেখা করার অনুমতি দেওয়া হয়েছিল।

তবে এত কিছুর পরও ম্যান্ডেলা তাঁর সংকল্পে অটুট ছিলেন। তিনি কারাগারেও আন্দোলনের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন, যা দক্ষিণ আফ্রিকার কর্মকর্তাদের রোবেন দ্বীপের অবস্থার ব্যাপক উন্নতি করতে বাধ্য করেছিল। পরে তাঁকে অন্য জায়গায় নিয়ে যাওয়া হয়, যেখানে তিনি গৃহবন্দী থাকতেন।

১৯৮৯ সালে এফ ডব্লিউ ডি ক্লার্ক দক্ষিণ আফ্রিকার রাষ্ট্রপতি হলে পরিস্থিতির পরিবর্তন ঘটে। তিনি এএনসির ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেন, মৃত্যুদণ্ডগুলো স্থগিত করেন এবং ১৯৯০ সালের ফেব্রুয়ারিতে নেলসন ম্যান্ডেলার মুক্তির আদেশ দেন।

ম্যান্ডেলা পরবর্তীকালে বর্ণবাদের অবসান এবং একটি বহুজাতিক সরকার প্রতিষ্ঠার জন্য আলোচনায় এএনসির নেতৃত্ব দেন। ১৯৯৩ সালে যৌথভাবে নোবেল শান্তি পুরস্কার পান ম্যান্ডেলা ও ডি ক্লার্ক। এক বছর পরে এএনসি দেশের প্রথম অবাধ নির্বাচনে বিজয়ী হয় এবং ম্যান্ডেলা দক্ষিণ আফ্রিকার রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হন।

ম্যান্ডেলা ১৯৯৯ সালে রাজনীতি থেকে অবসর নেন। তবে ২০১৩ সালের ডিসেম্বরে মৃত্যুর আগ পর্যন্ত শান্তি ও সামাজিক ন্যায়বিচারের জন্য বিশ্বব্যাপী কাজ করে যান।

সূত্র: নেলসন ম্যান্ডেলা ডট অরগ, হিস্টি ডট কম

এক স্টাইলে দুই প্রজন্ম

দর্শন রাভালের বিয়ের সাজ

পিৎজার দাম ১৫ হাজার টাকা

নেপালে অ্যাডভেঞ্চার বাঞ্জি জাম্পিং ও প্যারাগ্লাইডিংয়ের রোমাঞ্চ

রোমাঞ্চকর রেইছা ঝিরির পথে

চার মাসব্যাপী বাহা উইন্টার ফেস্টিভ্যাল

এ বছরের ট্রেন্ডে থাকছে একক ভ্রমণ প্রবণতা

৬ বছর ভাত, ফল, সবজি না খেয়ে অদ্ভুত অভিজ্ঞতা ইসাবেলার

আফরিনের ডেনিম ফিউশন

রুক্ষ ত্বকের যত্নে যা করবেন

সেকশন