সানজিদা সামরিন, ঢাকা
‘আমরা বেঁধেছি কাশের গুচ্ছ, আমরা গেঁথেছি শেফালি মালা
নবীন ধানের মঞ্জরী দিয়ে সাজিয়ে এনেছি ডালা।
এসো গো শারদলক্ষ্মী, তোমার শুভ্র মেঘের রথে,
এসো নির্মল নীলপথে,
এসো ধৌত শ্যামল আলো-ঝলমল-বনগিরিপর্বতে।’
—রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
ঋতু সবে বর্ষার সঙ্গে শ্রাবণ মাসের হিসাব চুকিয়ে নিল। পালাবদলে শরৎ এবার আসন পেতেছে ভাদ্রের দুয়ারে। শরতের ভাবমূর্তি কখনো ঝকঝকে নীল আকাশে উঁকিঝুঁকি দিলেও বর্ষা নাছোড়বান্দার মতোই। আলতো করে ধূসর মেঘে ছড়িয়ে দিতে যে ভুলবে না সময় অসময়ে, এ জানা কথা। শরৎ বাবুর সঙ্গে সংসার যেন পেতেই ছাড়বে সে! শরতের শুরুটা কাটে এমনই খুনসুটিতে।
শহরে শরৎকে ঘিরে আনন্দ–উৎসব চললেও গ্রামীণ পরিবেশে শরৎকে নিবিড়ভাবে উপলব্ধি করা যায়। টলটলে নীল নদীর ধার ঘেঁষে সাদা কাশফুল ফুটে থাকে। মৃদুমন্দ হাওয়ায় দুলে ওঠে তারা। নদীর ওপার ছুঁয়ে থাকা আকাশে ভেসে বেড়ায় শুভ্র মেঘের ভেলা। আর আঁধার নামলে স্বচ্ছ আকাশ আঁচলে ফুটে ওঠে লক্ষ কোটি তারা।
রবীন্দ্রনাথ তাঁর জীবনস্মৃতিতে এই স্মৃতিচারণটুকু করেছিলেন।
শরতের প্রকৃতি সবার মনকেই জাগ্রত করে। এ সময়ে রোদ-বৃষ্টির খুনসুটি চলে যেমন, তেমনি সহসা মৃদু হাওয়া ও শুভ্রনীল আকাশ মনকে করে তোলে প্রফুল্ল। আর এ জন্যই কবিগুরু বলেছেন, ‘শরৎ, তোমার অরুণ আলোর অঞ্জলি।/ছড়িয়ে গেল ছাপিয়ে মোহন অঙ্গুলি।।/শরৎ, তোমার শিশির-ধোয়া কুন্তলে/বনের-পথে-লুটিয়ে-পড়া অঞ্চলে/আজ প্রভাতের হৃদয় ওঠে চঞ্চলি।’