জাহাঙ্গীর আলম
চোখের জল শুকায় কিন্তু মায়ের অপেক্ষা ফুরোয় না! কিন্তু উচ্চ শিক্ষা কিংবা কর্মের সন্ধানে শহরে পাড়ি জমানো ব্যস্ত সন্তানটির কি ওতো অপেক্ষার অবসর থাকে?
এরপর সংসারে জোয়াল কাঁধে এসে পড়া সন্তানকে আর মায়ের কাছে অতটা চেনা লাগে না! আঁচল ছেড়ে দূরে যাওয়া সন্তানটিকে ধরে রাখার শেষ চেষ্টা করতে গিয়ে অনধিকার চর্চাও করে ফেলেন মা। তাঁর মরিয়া হস্তক্ষেপে খেপে বিরক্ত হয়ে হয়তো কথা বলাই বন্ধ করে দেয় সন্তান। সদ্য স্বাধীন সন্তানের কাছে মা হয়ে ওঠেন উটকো ঝামেলা; যেন পরাধীনতার শৃঙ্খল নিয়ে তাড়া করছেন!
মানসিক শারীরিক চাপ, তাপে বিষণ্নতায় ডুবে যাওয়া প্রাপ্তবয়স্ক দায়িত্বশীল সন্তানটির কোনো এক নিঃসঙ্গ রাতে হয়তো মনে ভেসে ওঠে গরিব, গোবেচারা মায়ের মুখ! কী করুণাই না হয় তখন! অথচ মা তখন একা আঁচলে মুখ ঢেকে চৌকাঠে মাথা ঠেকিয়ে সন্তানের শৈশবকালের স্মৃতি হাতড়ে বেড়ান। খেলনা বা সদাই কেনার আবদার, পিঁপড়ে–পোকার ভয় অথবা অকারণে গায়ের গন্ধের নেশায় ছুটে আসা সেই ছোট্টটিকে নিয়ে অতীত সুখের স্মৃতি ভেবে গোপনে অশ্রু ঝরে মায়ের।
বিচ্ছেদ, অভিমান, ব্যস্ততা সবকিছু একপাশে রেখে আজকের দিনটি তো চাইলে বিশেষ করে তোলাই যায়! মায়েদের জন্য আলাদা দিবস তো দৃষ্টিকটু! মায়ের জন্য এসব দিবস অর্থহীন। কিন্তু বছরের অন্তত একটা দিন তো তাঁকে সারপ্রাইজ দেওয়াই যায়! একটা উপহার, অথবা বাইরে খেতে যাওয়া। মায়ের হাতের প্রিয় রান্না খেতে চাওয়ার আবদার হতে পারে তাঁর জন্য সবচেয়ে আনন্দের। একদিনের জন্য শিশু হয়ে গেলে ক্ষতি কী!
লেখক: জ্যেষ্ঠ সহসম্পাদক, আজকের পত্রিকা